বান্দরবান ভ্রমণ – (নীলগিরি, বগালেক, রেমাক্রি এবং নাফাকুম)

খুব কম সময়ের প্ল্যানের মধ্যে চলে গেলাম বান্দরবান। অনেক জায়গা কভার দেয়ার ইচ্ছা ছিল। বাকিদের নিয়ে যতটুকু কভার দিসি আলহামদুলিল্লাহ। ট্যুরের খরচ শেষে দেয়া আছে।

১ম দিন

জানুয়ারি মাসের ১০ তারিখ রাত ১০ঃ৩০ এ বাস ছিলো। বাসে করে পরেরদিন সকাল ৬টায় বান্দরবন পৌছে গেলাম। সেখান থেকে নাস্তা করে চাদের গাড়ি নিলাম যা আগে থেকেই আমাদের রিজার্ভ করা ছিলো। চাদের গাড়িতে করে রুমা বাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলাম। পথিমধ্যে শৈলপ্রপাত দেখে নিলাম যা এখন মৃতপ্রায় (শীতকালে পানি কম থাকে)। দুপুর ১২ টার দিকে রুমা বাজার পৌছালাম। এইখান থেকে আমরা আমাদের গাইড সুমন দাদাকে পেলাম। বগালেক এর জন্য এখান থেকে আর্মিদের কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে যেতে হয় ফর্ম ফিলাপ করে। রাতের বারবিকিউ এর জন্য বাজার এখান থেকেই করে নিলাম। এরপর রওনা দিলাম বগালেকের জন্য। রাস্তায় আবার পুলিশের কাছে সাইন আপ করে যাওয়া লাগে। বগালেক পৌছাতে প্রায় ৩টা বেজে যায়। এইখানে আবার আর্মিদের সাইন আপ করা লাগে। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১২০০ ফিট উপরে যে এইরকম সৌন্দর্য রয়েছে নাহ দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে নাহ। বগালেকের ভিউ অন্যান্য ভিউকে হার মানাবে। রাতের বেলা বারবিকিউ আর আড্ডা দিয়ে পার হয়ে যায়।

২য় দিন

পরের দিন সকালে আটটার দিকেই আর্মিদের থেকে চেক আউট করে বের হয়ে যাই থানচির উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে রুমা বাজারে সবাই নাস্তা করে নেই। থানচি যাবার রাস্তায় নীলগিরি পরে। নীলগিরিতে কিছুক্ষণ ঘুরে আবার গাড়িতে উঠে থানচির পথে রওনা দেই। এইখানে আবার বিজিবিদের কাছে সাইন আপ করা লাগে। থানচি পৌছাতে প্রায় সাড়ে ৩টা বেজে যায়। আমাদের জন্য নৌকা আগে থেকেই থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন আমাদের নতুন গাইড আলবার্ড দাদা। নৌকাতে করে বিকাল বেলার সাঙ্গু নদীর রূপ দেখতে দেখতে পৌছে যায় রেমাক্রিতে সন্ধাবেলায়। এইখানে আগে থেকেই বলে রাখতে হয় রাতের খাবারের জন্য। পরেরদিনের গন্তব্য নাফাখুম বলে এইখানেই রাতে থাকা হয়।

৩য় দিন

নাফাখুম

পরেরদিন ভোরবেলা সাড়ে ৬টার দিকেই এইখানকার লোকাল গাইড নিয়ে বের হয়ে যাই নাফাখুম এর জন্য। প্রায় ৩ ঘন্টা ট্রেকিং করার পর দেখা মিললো নাফাকুম নামক ঝর্নার। এইখানে প্রায় ১ ঘন্টা থাকার পর ব্যাক করলাম রেমাক্রিতে। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর রওনা দিলাম বান্দরবান শহরের উদ্দেশ্যে। থানচি পৌছাতে আমাদের সন্ধ্যা হয়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী বিকাল ৫টার পর সব ধরনের যাতায়াত পরিবহন বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু আমরা ভাগ্যক্রমে পেয়ে যাই চাদের গাড়ি। ড্রাইভার সাহেব খুবই দক্ষ ছিলেন সাবধানতার মাঝে আমাদের পৌছে দেন। বান্দরবান শহরে আসতে আমাদের রাত ৯টা বেজে যায়।

পরেরদিন সকালে বাস ছিলো ঢাকার ১১টা দিকে তাই সকালের দিকে নাস্তা করে আমরা স্বর্ণমন্দির ঘুরে আসি। পরে ঢাকা ব্যাক করি।

স্বর্ণমন্দির

ট্যুরের খরচ

ঢাকা টু বান্দরবন বাসেঃ ৬২০/-
নাস্তাঃ ৭০/-
চাদের গাড়িঃ ১৩০০০/- (প্রথমদিন শহর থেকে শুরু করে পরেরদিন থানচি পৌছে দেয়া পর্যন্ত রিজার্ভ ছিলো)
ফর্মঃ ৫০/-
বগালেকে লাঞ্চঃ ১০০/- ১৫০/-
কটেজঃ ১৫০/-
ডিনারঃ ১৫০/-
গাইডঃ ১২০০/-

পরেরদিন নাস্তাঃ ৭০/-
লাঞ্চঃ ১৫০/-
নীলগিরিতে প্রবেশ মূল্যঃ ৫০/-
বোটঃ ৪৫০০/- (এক বোটে ৫ জন উঠা যায়)
লাইফ জ্যাকেটঃ ১০০/-
ডিনারঃ ১৫০/-
কটেজঃ ১৫০/- (পার হেড)
গাইডঃ ১২০০/-
লোকাল গাইডঃ ৫০০/-
চাদের গাড়িঃ ২৫০০/- (থানচি টু বান্দরবন)
হোটেলঃ ১০০০/- (৪ জন শেয়ারিং)
স্বর্ণমন্দির প্রবেশ মূল্যঃ ৫০/-

বান্দরবন টু ঢাকাঃ ৬২০/-

এছাড়া গাইড, চাদের গাড়ির ড্রাইভার, মাঝিদের থাকা, খাওয়ার খরচ আপনাকেই বহন করতে হবে। পরিশেষে একটাই কথা, দেশটা আমাদের তাই এর সংরক্ষনের দায়িত্ব আমাদেরই নিতে হবে। যত্রতত্র ময়লা ফেলবেন না। ধন্যবাদ। হ্যাপি ট্রাভেলিং 🙂

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ Bandarbanboga lakenafakhum