সকাল সকাল রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম গন্তব্য কার্শিয়াং, গাড়ি হাজির, ড্রপ কৃষ্ণনগর স্ট্যান্ডে। যখন এলাম তখনও যেন মিরিকের ঘুম ভাঙেনি, গাড়িতে আর ২/৩ জন যাত্রী হতেই গাড়ি ছেড়ে দিল। বেশ কিছুক্ষণ চলার পরও যেন স্কুলদারার ঘোর কাটেনি, একজন সহযাত্রী আমাদের দুরের একটা পিক দেখিয়ে বললেন ওই পিকটার নাম আনতু, ওটা নেপালে। দারুণ সুন্দর একটা স্পট।
এরপর একটা ছোট জনপদ নাম সৌরানি, যেতে যেতে পাহাড়ী ছোট ছোট গ্রাম গুলোর অবস্থান দেখে ভাবি ওখানে যারা বসবাস করেন তাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন সম্পর্কে আমারা কতটুকুই বা জানি। হয়তো অনেক সুখের বা কষ্টের? সুখেরই হবে তা না হলে এতো মনভোলান হাসি??? পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে হাজির কার্শিয়াং শহরে। ঢুকতেই দেখি কার্শিয়াং স্টেশন, মূহুর্তে মনেপরে গেল সেই ছোটোবেলার কথা বাবা মার সাথে নবদ্বীপ যাওয়ার পথে কৃষ্ণনগর থেকে ছোটো রেলগাড়িতে চরার মজা।
উঠলাম কার্শিয়াং টুরিস্ট লজে, দার্জিলিং যাওয়ার পথেই NH-55. ঘর গোছগাছই ছিল যেহেতু বুকিং করাছিল। ঘরে ঢুকে মুখ-হাত ধুয়ে প্রথম গেলাম রেস্টুরেন্টে চা আর সামান্য কিছু খেয়েই চলে গেলাম কার্শিয়াং স্টেশন। টিকিট কেটে নিলাম দার্জিলিং এর ১৯/১২ তারিখের। পরদিন সকালে স্থানীয় দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য গাড়ি ঠিক করে চলে এলাম লজে। দুপুরে খেয়ে একটু বিশ্রাম করে লজের সামনেই একটা চার্চ সেখানে গিয়ে বসলাম, চলছে আগামী ২৫শে ডিসেম্বরের প্রস্তুতি। কিছুক্ষন কাটানোর পর আবার লজে, রেস্টুরেন্টে বসে কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করছি, চায়ে চুমুক দিতে দিতে।
পরদিন (১৮/১২) সকালের নাস্তা সেরে ১০টা নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম দর্শনীয় স্থান দেখার জন্য। লামাজি আমাদের ১ম নিয়ে হাজির ডউহিল গার্লস স্কুল। রবিবার স্কুল বন্ধ ছিল, বাইরে থেকে স্কুলের কয়েকটি ছবি তুলে চলে এলাম ডউহিল পার্কে। ২ টাকা E-fee. বসলাম ইতস্তত পায়চারি করে চলে এলাম ভিক্টোরিয়া বয়েজ স্কুল, স্কুল বন্ধ এখানেও। ২/১ টা ছবি তুলে চলে এলাম গিদ্দা পাহাড়ে। শরৎ বসুর এই বাড়িতে সুভাষচন্দ্র বসু ২ বছর বাস করেছিলেন। এখানে বহু তথ্য সম্বলিত একটি সংগ্রহশালা বর্তমান। অনেকক্ষণ ধরেই ভাবছিলাম, সেই সময় জন্মে এই মহামানবকে যদি চোখের দেখাও দেখতাম?
এবার যাব মকাইবারি চা বাগান। ভেবে ছিলাম ওখানকার নামকরা চায়ের স্বাদটা কেমন দেখব, হতাশ হলাম, বন্ধ। শেষে এলাম ঈগল crage এ। চমৎকার ভিউ পয়েন্ট চা বাগান সংলগ্ন। অনেক ছবি তুললাম বটে কিন্তু কোথায় যেন একটা অসম্পূর্ণতা রয়ে গেল শুধুমাত্র শরৎ বসুর বাড়ি ছাড়া।
ক্লান্ত শরীর দুপুরের খাওয়া তেমন না হওয়ায় সোজা গিয়ে বসলাম লজের রেস্তোরাঁয়। বিকালের চা পানের সাথে একটু ভারী খাবার খেয়ে চলে এলাম রুমে। পরদিন (১৯/১২) সাত সকালে কার্শিয়াং স্টেশন যেতে হবে তার প্রস্তুতি নিয়ে শুয়ে পড়লাম।
পরের গন্তব্য দার্জিলিং!!
Leave a Comment