কম খরচে একদিনের নেত্রকোনা বিরিশিরি ট্যুর

আমরা যারা ঘুরতে পছন্দ করি আবার খরচের ব্যাপারটাও মাথায় রাখতে হয় তাদের জন্য কম খরচে বাংলাদেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান নেত্রকোনার জেলার দূর্গাপুর উপজেলার দেশের একমাত্র সাদা চিনা মাটির পাহার বিরিশিরি ও আশেপাশের এলাকা।

শুক্রবার বন্ধের দিনটাকে কাজে লাগানোর জন্য হুটহাট সিদ্ধান্তে গত বৃহস্পতিবার আমরা ৬ জন দূর্গাপুরের উদ্দেশ্যে বের হই।রাত বারোটা বাজে মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি ঢাকা থেকে দূর্গাপুর রাত্রে যাওয়ার দুইটা বাসই ছাড়া হয়(মামুনি ও নিশিতা) এবং দুইটা বাসেরই সিট সব আগেই বুকিং করা হয়ে গেছে আমরা যেতে চাইলে মোড়ায় (টুল) বসে যেতে হবে।

চিনা মাটির পাহাড়

৭ ঘন্টার টানা জার্নি ও ভাঙ্গাচোরা রাস্তার কথা বিবেচনা করে আমরা মোড়ায় বসে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। পাশেথাকা শৌখিন বাস ময়মনসিংহ পর্যন্ত যায় দামাদামি করে সেটায় চড়ে বসলাম।

রাত সারে বারোটায় রওনা দিয়ে সারে তিনটা বাজে আমরা ময়মনসিংহ পৌছাই সেখান থেকে এম্বুল্যান্সে করে যাই পূর্বধোলা চৌরাস্তা সেখান থেকে ডায়রেক্ট অটোতে করে দূর্গাপুর। সকাল সাতটায় দূর্গাপুর ব্রীজে নেমে অল্প হেটেই সোমেশ্বরী নদী নৌকা পাড় হলেই বাজার।

বাজারে নাস্তা করে সবগুলি স্পট ঘুরার জন্য রিজার্ভ অটোরিকশা ভাড়া করি(ভাড়া ৬০০+বখশিশ ৫০)। বাজারের ষ্ট্যান্ড থেকে অটো ভাড়া করলে অনেক বেশি ১০০০/১৫০০ দাম চায় তাই রাস্তা থেকে ভাড়া করলে আরো কমে করা যায়।

আমরা প্রথমে চিনা মাটির পাহাড় ও বিরিশিরি যাই এখানে লেকগুলির পানি সেচদিয়ে সব তুলে নিয়ে ফসলের জমিতে দেওয়া হচ্ছে কেউ কিছু বলার নাই।

বিরিশিরি

বিরিশির থেকে যাই রানীখং মিশন, মিশনের ধর্মগুরুদের বৈঠক থাকায় গেইট বন্ধ ছিলো। এখান থেকে শনিরমিশন এই এলাকাটা সত্যিই অসাধারন কয়েক কালারের মাটি ও গারো সবুজ পানি আপনাকে মুগ্ধ করবে।

এরপর আমরা চলে যাই বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্প সোমেশ্বরী নদীর ঘাটে। এখানে সবাইমিলে মনভরে গোসল করি কেউকেউ ট্রলারে করে জীরো পয়েন্ট দেখতে যায়। নামাজের সময়ের কারনে আমরা কমলার বাগান না ঘুরেই গোসল করে নৌকা পাড় হয়ে দূর্গাপুর বাজারে নামাজ পরে এখানের সেরা নিরালা হোটেলে লাঞ্চ করি।

লাঞ্চ করার পর সবাই খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ে ঢাকায় ব্যাক করার সিদ্ধান্ত নেই কিন্তু দিনের বেলা এখান থেকে কোন বাস পাওয়া যায় না। তাই বাধ্য হয়ে জাড়িয়া রেলস্টেশন যাই এখানেও বাস ট্রেন না পেয়ে চলে যাই শ্যামগঞ্জ এখানেও দীর্ঘসময় গাড়ি না পেয়ে চলে আসি ময়মনসিংহ শহরে।

রানীখং মিশন

ময়মনসিংহ বাস স্ট্যান্ড থেকে সন্ধ্যা ছয়টা বাজে এনা গাড়িতে সরাসরি ঢাকা মহাখালি চলে আসি।

বিরিশিরি যাওয়ার উপায়

বিরিশিরি যাওয়ার সবচাইতে ভালো মহাখালী থেকে সরসরি দূর্গাপুরের বাসে যাওয়া এতে খরচ অনেক কম হয়(৩০০টাকা টিকিট) সেক্ষেত্রে আগে থেকে আসা যাওয়ার টিকিট বুকিং দিয়ে রাখলে ভালো হয়। আবার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনেও নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ যায় সেখান থেকে সরাসরি দূর্গাপুর যাওয়া যায়।

খরচ

মহাখালি থেকে ময়মনসিংহ ২২০*৬=১৩২০
ময়মনসিংহ থেকে ব্রীজ ৪০
ব্রীজ থেকে পূর্বধোলা ৫০০/
পূর্বধোলা থেকে দুর্গাপুর ৭০*৬=৬২০
নৌকা আপডাউন ৬০/
নাস্তা ২৮৫/
অটো ৬৫০/
লাঞ্চ ১০৫০
দূর্গাপুর থেকে জারিয়া ২৫০/
জারিয়া থেকে শ্যামগঞ্জ ৩০০/
শ্যামগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ ২৪০/
ময়মনসিংহ থেকে বাস স্ট্যান্ড ৮০ টাকা 
ঢাকার বাস ২২০*৬ =১৩২০ /
সর্বমোট ৬৭১৫÷৬ = ১১২০টাকা পার পারসন।

বিঃদ্রঃ আমরা ঘুরতে যাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে অবশ্যই আমরা প্রকৃতি দেখতে গিয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে চলবো।যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিবো।
Leave a Comment
Share