কল্পা

কল্পা (Kalpa), হিমাচল প্রদেশের এক কল্পলোক এর নাম যেখানে প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে ছবি এঁকেছে কল্পার ক্যানভাসে। পবিত্র কিন্নর-কৈলাস পর্বতমালার ঘেরাটোপে কল্পা এর অবস্থান। কল্পাকেই বলা হয় কিন্নরিদের দেশ। কিন্নর ভারত সীমান্তের শেষ ভূখণ্ড। কল্পার গোল্ডেন আপেলের খ্যাতি জগতব্যাপী। তবে অনুমতি ছাড়া আপেল গাছে হাত দিলে জরিমানা করা হয়। এই নিয়ম শুধু কল্পায় নয়, পুরো হিমাচলে এই নিয়ম বিরাজমান।

শীতে প্রচন্ড তুষারপাতে ঢেকে যায় কাল্পা। সাংলা থেকে করছাম হয়ে কল্পা যেতে হয়। কল্পা ঢোকার আগেই দেখা মিলবে কিন্নর জেলার সদর শহর রেকংপিও এর। জমজমাট আর ভিড়ে ঠাসা। সদর শহর যেমন হয় আরকি! ছোট্ট শহরের মাথার উপর বরফমোড়া পাহাড়ের চূড়ার ক্যানভাস। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথের দু’পাশে পাইনের গভীর বন। তারই ফাঁকে পবিত্র কৈলাশ শৃঙ্গের হাসিমাখা মুখ।

কল্পার বাজারের কাছেই সুন্দর গোম্ফা হু-বু-লাংকার দেখে নিতে পারেন। কল্পার ঠিক নীচেই চিনি গ্রাম। কাঠ, পাথরের সুন্দর ঘরবাড়ি আর সামদুব চোলিং বৌদ্বগুম্ফা এবং নারায়ণ-নাগিন মন্দির। এই গ্রামের আতিথেয়তা মুগ্ধ করবে।

কল্পাকে দেখতে হলে আপনাকে অন্তত দু’দিন সময় ব্যয় করতে হবে। কাল্পা থেকে ১০ কিমি দূরে পাঙ্গি ঘুরে আসতে পারেন যা আপেল বাগিচার জন্য খুব নামকরা। অপরূপ শোভায় ভরা পাঙ্গির প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেকদিন আপনার মনে দাগ কেটে থাকবে।

কল্পা থেকে ৭ কিমি দূরে ইকো পয়েন্ট আর সুইসাইড পয়েন্ট দেখে চলে যেতে পারেন অল্পচেনা রোখি গ্রামে। চারদিকের তুষারধবল শৃঙ্গঘেরা রোখির রূপ অসাধারণ।

শপিং

কল্পাতে কেনাকাটা করার তেমন কিছু নেই। কোন কিছু কিনতে চাইলে আপনাকে রেকংপিওতে যেতে হবে। রেকংপিওতে হরেক রেস্তোরাঁ, জুতো, শীতের নানা সামগ্রী কেনাকাটা করতে পারেন।

কিভাবে যাবেন

সাংলা থেকে কল্পার দূরত্ব ৫২ কিমি। করছাম হয়ে আসতে হয়। রেকংপিও থেকে মাত্র ১১ কিমি। শিমলা থেকে দূরত্ব ২৫২ কিমি। সরাসরি বাসেও যাওয়া যায়। সিমলা থেকে বাস ধরে কল্পায় যেতে  সময় লাগে ৯ ঘণ্টা। তবে গাড়ি করে যাওয়াটা সবচেয়ে ভালো।

যারা নিজেরা গাড়ি নিয়ে যেতে চান তাদের জন্য – প্রায় প্রতি তিরিশ কিলোমিটার অন্তর একটা করে পেট্রোল পাম্প আছে। আছে টায়ার, হাওয়া চেকের দোকানও।

কোথায় থাকবেন

কল্পাতে থাকবার জন্যে সবথেকে আদর্শ জায়গায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশ সরকারের হোটেল কিন্নর কৈলাস। এখানে যাবার শেষ পনেরো কিলোমিটার খাড়া, রেলিং বিহীন সরু পথে উঠতে হবে। দুর্বল হৃদয় হলে, নিচের দিকে না তাকানোই ভালো। ওঠার পর এটাকে স্বর্গ মনে হতেও পারে। এখানে উঠে এমন অপূর্ব শোভা দেখতে দেখতে হয়তো নিচে নামার কথা ভুলে যেতে পারেন। যোগাযোগঃ (০১৭৮৬)-২২৬১৫৯, ভাড়া ২২০০-৬০০০ টাকা।

কাল্পায় থাকার জন্য আরও রয়েছে দি কৈলাস কটেজ (০১৭৮৬-২২৬১৫৯), ভাড়া ১৯০০-২৫০০ টাকা। সান এন স্নো (০১৭৮৬-২২৬১৫৯), ভাড়া ১,১০০-১১৫০ টাকা। হোটেল কৈলাস ভিউ (০৯৪৩৩১২০৯৯৭), ভাড়া ১৮০০-২৮০০ টাকা। হোটেল শীতল (০৮৫৮৪৮৫২৭০৮) ভাড়া ১৬০০-২০০০ টাকা।

Leave a Comment
Share