কাশ্মীর – একটি স্বপ্নপূরণ (পেহেলগাম পর্ব)

সকাল সকাল ঘুম ভেঙে গেছে। মনে দোলাচল, হবে কি হবে না? বাইরে গিয়ে জানা গেল যাওয়া হবে, কারণ বৃষ্টি থেমে গেছে। তবে একটু দেরি হবে বেরোতে, নাহলে এই ঝোড়ো হাওয়ায় ছোট নৌকা উল্টে যেতে পারে। চাচাজি আজ গেলেন না, গায়ে পায়ে ব্যথার জন্য। আজ আমাদের নিয়ে যাবেন জাভেদ ভাই, সমান দক্ষ ড্রাইভার ও হাসিখুশি সজ্জন মানুষ। কত যত্নে হাউসবোটের লোকজন ও চাচাজি শিকারা না পেয়ে নিজেদের ছোটো নৌকায় করে আমাদের গাড়ি অবধি পৌঁছে দিলেন, সেই আন্তরিকতায় মন কৃতজ্ঞতায় নত হয়। প্রথমেই আমরা জানতে চাইলাম বৈশরণ পর্যন্ত যেতে পারব কিনা। জাভেদ ভাই জানালেন, ওখানে সবরকম ব্যবস্থা থাকে, এমনকি রেনকোট, গামবুট সব ভাড়া পাওয়া যায় এইরকম আবহাওয়ার কথা ভেবে। শুনলাম উপরে পাহাড়ে কাল সারারাত তুষারপাত হয়েছে, তাই নীচে এত ঠাণ্ডা পড়ে গেছে। অবাক হলাম, সেপ্টেম্বরের মাঝে এলাম, তাও টাটকা বরফ পাব। এইবার সেই বরফওয়ালা আনন্দটা (বরফ দেখার সম্ভাবনায় যেটা মনে তৈরি হয়) মনে টের পেলাম। ইতিবাচক চিন্তা দিয়ে মনকে প্রস্তুত করলাম। হয়তো আপেল আর বরফের মিলিত অভিজ্ঞতায় ধনী হয়ে উঠবে আমাদের এই ভ্রমণ পর্ব।

পেহেলগাম যাওয়ার পথে।

শ্রীনগর থেকে পেহেলগাম যাওয়ার রাস্তাটির উল্লেখ না করলেই নয়। এমন রাস্তার প্রেমেই তো যুগে যুগে পথিক জন্ম নেয়। দুদিকে হলুদ সবুজ ধানক্ষেত, আর তার ওপারে সবুজ সুউচ্চ পাহাড়রাজি, এমন সুন্দর আগে কখনও দেখিনি। তারপর শুরু হল রাস্তার দুধারে আপেল বাগানের সারি। কিলোমিটারের পর কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার দুদিকে চোখ মেলে দেখছি সেই গাছ ভাঙা লাল আপেলকে। গাড়ি দাঁড়াল ব্রেকফাস্টের জন্য ‘আপেল ভ্যালি রিসর্ট’-এ। খাবার টেবিলের পাশে জানালা খুলেই আপেলের সুমিষ্ট গন্ধে মন ভরে গেলো। চক্ষু ভরে দেখা আর শেষ হয় না। ঢুকলাম কয়েকটি বাগানে, ঘুরে দেখলাম। সদ্য বৃন্তচ্যুত আপেলের রস বানিয়ে বিক্রি হচ্ছে, তা আর না খাই কেন ! কী অবলীলায় সাত আটটি আপেল পরপর নিংড়ে রস বের করে আমাদের ধরিয়ে দেওয়া হল দেখে চক্ষু চড়কগাছ। আমাদের ওখানে তো এভাবে পেয়ারাও খেতে দেবে না কেউ। কী মিষ্টি ঘন আপেলের রস। পেট, মন না হৃদয় কীসের পরিতৃপ্তির কথা বলব ভাবতে ভাবতে গাড়িতে উঠলাম।

আপেল বাগান, পেহেলগাম। কাশ্মীর।

পেহেলগাম/পহেলগাঁও পৌঁছে আবার সেই ঘোড়াওয়ালাদের সঙ্গে অতি আবশ্যিক দরদস্তুর পর্ব মিটিয়ে, ইয়া বড়ো এক রেনকোট কাম জ্যাকেট গায়ে নিয়ে চেপে বসলাম ঘোড়ার পিঠে। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকের ঘোড়াদুটি ছিল বেশ বড়ো। কারণটা জানা গেল কিছু পরেই। দোবিয়ান ভ্যালি, কাশ্মীর ভ্যালি, কানমার্গ, পেহেলগাম ভ্যালি আর বৈশরণ ভ্যালি ছিল আমাদের প্যাকেজে।

মূলত বৈশরণ যাওয়ার পথে পর্যটককে একটু ঘুরিয়ে কয়েকটা ভিউ পয়েন্ট দেখাবার নামে একটু বাড়তি আনন্দদানের প্রচেষ্টা, গৃহীত মূল্যের হিসাবদানও এতে যথাযথ হয়, ট্যুরিস্টদের মনও ভরে বেশি টাকা দিয়ে দুটো বেশি পয়েন্ট দেখতে পেলে। একটু পরেই যে রাস্তায় ঘোড়া চড়তে শুরু করল, তাকে আর যাই হোক রাস্তা কোনোভাবেই বলা চলে না। তার উপর সারারাত বৃষ্টি হয়ে পথ কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয়ে আছে। এবড়ো-খেবড়ো পাথরের ঢিপির উপর পা ফেলে যেভাবে ঘোড়া উপরে উঠছে, তাতে ভয়ে আমার বুক ঢিবঢিব করতে লাগল, সামনে অভির ঘোড়াটা দেখি দুবার পা হড়কালো। যত উপরে উঠছি, ততই বাঁদিকে নীচে বয়ে চলা নদী আরও নীচে চলে যাচ্ছে। তার মানে পড়ে গেলে চোট পাওয়ার সম্ভাবনা ধীরে ধীরে বাড়ছে। সহিস ছেলেটি চারপাশে দেখতে বলছে, অভি অনেককিছু ডেকে দেখাচ্ছে, আর আমি ঘাড়টুকুও ঘোরাতে ভয় পাচ্ছি, ঘোড়ার লাগাম এত কষে ধরেছি যে হাতে দাগ বসে গেছে, সেই ভয়ের মধ্যেই জানালার সূক্ষ্ম ফাঁক দিয়ে ঠিকরে আসা অবাধ্য আলোর মতো ভ্যালির সৌন্দর্য আমার শঙ্কিত মনকে ছেয়ে ফেলছে।

একটু একটু করে অনুভব করতে পারছি কী অসাধারণ এক স্বর্গীয় স্থানের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ করছি। সবুজ পাহাড়ের গায়ে সারিবদ্ধ ঘন সবুজ পল্লবে ছাওয়া বৃক্ষরাজি, নীচে লাস্যময়ী পাহাড়ি নদীটির হিল্লোল তুলে বয়ে চলার ধ্বনি, গাছের ফাঁকে উঁকি দেওয়া নীল আকাশ, অজস্র পাখির কিচিরমিচির, আর আমার সশঙ্কিত অথচ উৎসুক মন এই সময়ে যে সংযোগটি গড়ে তুলেছিল তা অসাধারণ। তখন হঠাৎ করেই উপলব্ধি করলাম অভি অতবার কেন বলে চলেছে বাড়ি ফিরে রোগে ভোগে মরার চেয়ে এখানে মরেও সুখ, সিধা স্বর্গলাভ, মজার ছলে বলা হলেও সে কথার সত্যতা সম্পর্কে আর কোনো সংশয় রইল না। কাশ্মীর এসে থেকে প্রতিটা দিনের অভিজ্ঞতা আগের দিনের প্রাপ্তিকে যেন হার মানিয়ে দিচ্ছিল, আর এই রাস্তাটুকুকে আমি কী বলে বর্ণনা করব জানিনা, মনে হল প্রকৃত কাশ্মীর হল এই। আর কিছু না দেখলেও আমার চলবে।

বৈশরণ ভ্যালি। পেহেলগাম। কাশ্মীর।

অদ্ভুত প্রাকৃতিক শোভায় সজ্জিত এই পাহাড়ি পথ ধরে একসময় পৌঁছালাম আমাদের সেরা গন্তব্য – বৈশরণ ভ্যালিতে। সহিস সময় দিল দশ মিনিট, কারণ টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটা সংখ্যায় বাড়লে ফিরতে বিপদ হবে। একটু বিরক্ত হলেও চুপচাপ শুনে নিলাম। প্রবেশমূল্য দিয়ে ছোট্ট গেট পেরিয়ে এমনি অনেক পার্কে ঢোকার অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল। কিন্তু মাত্র তিরিশ টাকা দিয়ে যে কেউ স্বর্গে প্রবেশের অনুমতিও পেতে পারে, তা এখানে না ঢুকলে বুঝতে পারতাম না। সারা রাত উপরের পাহাড়ে যে বরফ পড়েছে তা এখন আমাদের চোখের সামনে, অবাধ্য মেঘেরা সানন্দে ধোঁয়ার মতো ঘিরে রয়েছে সে শৃঙ্গগুলিকে, বা বলা ভালো তাদের শোভাকে দ্বিগুণ করে তুলেছে। কী যে অপরূপ সে সৌন্দর্য তা আমি বলে বোঝাতে পারব না বলেই বেশি চেষ্টাও করব না। এটুকু বুঝলাম, স্বর্গে তুমি বাই চান্স ঢুকে যেতে পারো, তাই বলে ইচ্ছেমতো থাকায় তোমার কড়া নিষেধ। তাই মিনিট দশ-পনেরো কাটতে না কাটতেই টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটাগুলো এমন বাড়াবাড়ি শুরু করল যে নিজেরাই উঠে সহিসকে ডাকাডাকি শুরু করলাম।

আরু ভ্যালি ও বেতাব ভ্যালির মধ্যবর্তী কোনও স্থানে। পেহেলগাম, কাশ্মীর।

একবার মনে হল, আজ রোদ হলে কী এমন ক্ষতি হতো ! পরক্ষণেই মন বলল তাহলে এই অনুপম সুন্দর রূপ কি প্রত্যক্ষ করা যেত ! ইহজন্মে আর কিছু অপ্রাপ্তি রইল না, যা দেখলাম, যাকে অনুভব করলাম, আর কিছু না দেখলেও কোনো খেদ নেই, আমার স্বর্গ দর্শন আজ সমাপ্ত। অদ্ভুত পরিপূর্ণতায় আচ্ছন্ন মন নিয়ে ফিরতে লাগলাম, নামার পথে জানি ভয় বেশি। তখন আমার মনে আবার অন্যরকম দর্শন ছেয়ে আছে। আর মরতে কীসের ভয় ! তাই যথাসম্ভব উপরের দিকে দেখতে দেখতে নীচে নামতে লাগলাম। না দেখছি ঘোড়ার পা কোন খাদের কতখানি পাশে, না লাগছে তত ভয়। অনেক টিটকিরি হজম করছি, কিন্তু এই রাস্তায় বরের হাতে ক্যামেরা তো নেই যে প্রমাণ রাখবে, তাই নিজের মতো ভয় তাড়িয়ে ওই খারাপ রাস্তায় উতরে গেলাম। আর ঠিক করলাম, এর পরে বরফের সময় আসব আর ট্রেক করে উপরে উঠব সারাদিন ধরে। কিন্তু ঘোড়ার হাতে জীবন ছেড়ে আর নয়। তবে এটা সত্যি আমার পাশের ঘোড়ার মেয়েটি আরও ভয়ে যখন চিৎকার করছিল তখন আমাকে দেখিয়ে ওকে সাহস দেওয়া হচ্ছিল। ফেরার পথে দেখলাম মায়ের বয়সী এক মহিলা ট্যুরিস্ট শাড়ি পরেই ঘোড়ায় চড়ে উঠছেন, তেমন কোনো শীতবস্ত্রও নেই। লজ্জা যে একটু হল তা স্বীকার করে নেওয়াই ভালো। তবে এটুকু সার বুঝলাম যে, যতই ভয় পাই না কেন, কাশ্মীর এসে ঘোড়ায় না চড়লে কাশ্মীর ভ্রমণ আমার অর্ধেক রয়ে যেত।

এই একলা ঘর আমার দেশ…
আরু ভ্যালি, পেহেলগাম। কাশ্মীর।

বৈশরণ থেকে নেমে সিদ্ধান্ত হল বাকি সময়টুকুতে আমরা আরু ভ্যালি আর বেতাব ভ্যালি দেখে ফেলতে পারব, তাই স্ট্যান্ডে পৌঁছে অন্য একটি গাড়ি ভাড়া নেওয়া হল, কারণ আমাদের গাড়ি যাওয়ার অনুমতি নেই। স্বপ্নের মতো সুন্দর এক রাস্তা দিয়ে চলেছি আরু ভ্যালির দিকে, আর বুঝতে পারছি নামের মতোই সুন্দর এই পহেলগাঁও। প্রতিটি বাঁকে ইচ্ছে হয় গাড়ি থামিয়ে নেমে পড়ি, দুদণ্ড অবসর নিয়ে দেখি। কিন্তু আয়েসে ঘুরে দেখার সময় তো আমাদের নেই, তাই বার কয়েক থেমে দেখতে দেখতে পৌঁছালাম আরু ভ্যালিতে।

আরু ভ্যালি, পেহেলগাম, কাশ্মীর। সবুজ বাড়িটা সরকারি বাংলো।

কত মানুষ এই অপূর্ব উপত্যকাতে বেশি সময় কাটানোর জন্য এখানে রাত্রিবাস করেন, হোটেল, রিসর্ট, টেন্ট সবকিছুই রয়েছে। বিস্তীর্ণ সবুজ গালিচামোড়া উপত্যকা, নীচে নদী বয়ে চলেছে, নদীর পাড়ে পবিত্র কবরস্থান, ওপাশে পাহাড়, সত্যিই ভাবিনি কাশ্মীরের মাধুর্যে এইভাবে হৃদয় পূর্ণ হয়ে যাবে। বৈশরণ দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ছিলাম, কিন্তু প্রতিটি জায়গা নিজগুণে এমন মোহিত করে দিচ্ছে যে কাউকে উল্লেখ না করে থাকা মুস্কিল। আরু ভ্যালিতে ফুটেছিল অনেক রকমারি ফুল, কিছু চিনি, কিছু চিনিনা, কিন্তু তাতে তো সৌন্দর্য আস্বাদনে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়না। দু’চোখ ভরে শুষে নিলাম আমাদের কাশ্মীর ভ্রমণের চতুর্থ দিন।

আরু ভ্যালি, পেহেলগাম। কাশ্মীর।

মুগ্ধতা পরিমাপের কোনো ভাষা নেই, অনির্বচনীয় সুন্দরের বোধহয় ভাষা হরণ করে নেওয়ার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে, তাই প্রশান্ত মন আর হৃদয় ভরা আবেশে আচ্ছন্ন হয়ে রওনা দিলাম পরবর্তী গন্তব্য বেতাব ভ্যালির দিকে। ‘বেতাব’ সিনেমার শ্যুটিং হয়েছিল বলে এই উপত্যকার নাম দেওয়া হয় বেতাব ভ্যালি। কেন কাশ্মীরে এত অজস্র সিনেমার শ্যুটিং হয়, তা অনায়াসে হৃদয়ঙ্গম কারা যায়। সাধারণ যে কোনো মানুষকে বড়ো ছবিওয়ালার তকমা দিয়ে দিতে পারে কাশ্মীর, এত সুন্দর এর চারিদিক, যে যেভাবে যেমন ক্যামেরায় ছবি তুলুক না কেন তা চমৎকার আসতে বাধ্য। ততক্ষণে রোদ উঠেছে, বেতাব ভ্যালির মিঠে রোদ গায়ে মেখে রেস্টুরেন্টে বসে কফি আর ভেজ ম্যাগি খাওয়া হল, তারপর পার্ক প্রদর্শন। ভিড় একটু বেশি ছিল এখানে। জায়গাটা বড় সুন্দর। মনে হল ঈশ্বর তাঁর নিপুণ হাতে পরম যত্নে রচনা করেছেন এই চিত্রপট, সেই চিত্রকরের জলরঙে আঁকা অন্যতম শ্রেষ্ঠ চিত্রের সম্মুখে চিত্রবৎ দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া আমরা সাধারণ মানুষ কী বা করতে পারি ! মনে মনে তাঁকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। পার্কটি সম্পূর্ণ পরিক্রমার সময় আর ছিল না। প্রায় সন্ধ্যে নামবে, ফিরতে হবে শ্রীনগর, তাই কিছুটা ঘুরে বেরিয়ে এলাম।

বেতাব ভ্যালি, পেহেলগাম। কাশ্মীর।

ফেরার পথে দেখলাম এক অপূর্ব মনোরম দৃশ্য। দুটি পাহাড়ের ঢাল নীচে যেখানে মিশেছে, সেখানে বয়ে চলেছে নদী, আর মাঝে একটুকরো মেঘমুক্ত আকাশ, ঘন সেই শ্যামল সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করে বা বলা চলে তাকে অজান্তে আরও শতগুণে বর্ধিত করে, সেই প্রকৃতির বুকে আনমনে নিজের মতো ঘাস খেতে ব্যস্ত এক অশ্বশাবক। কী যে সুন্দর এক ফ্রেম কী বলব ! প্রয়াস চালানো হল চোখে দেখা এই অতুলনীয় মুহূর্তকে কতখানি লেন্সবন্দি করা যায়। যা আমরা দেখি, যা আমরা অনুভব করি তার কতটুকুই বা বন্দি হয় ক্যামেরায়, তবু অবুঝ মন তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যায়। আর একথাও ধ্রুব সত্যি যে ইট কাঠ পাথরের মাঝে হিসাবকষা জীবনে এই মুক্ত প্রকৃতির দু-এক টুকরো ঝলকই মনকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এইগুলির ভরসাতেই তো কাটবে আবার পাহাড়ে আসতে পারার মাঝের সময়টুকুর একঘেয়েমি। যেতে যেতে এল আবার সেই আপেল বাগান, আবার আপেল রস খাওয়ার ইচ্ছে হল, জাভেদ ভাই হাসিমুখে নিয়ে গেলেন, দুই গ্লাসের দাম দিয়ে প্রায় চার গ্লাস রস খেতে পেলাম, আখের রস ঢেলে দেওয়ার মতো উদ্‌বৃত্তটুকু আমাদের দিয়ে পাত্র খালি করলেন ওনারা। যেমন সুন্দর দেখতে, তেমনি তার আকার, তেমন সুগন্ধ, তেমনি মিষ্টি। এই আপেল বাড়ি নিয়ে না গেলে হয় ! আবার কেনা হল কিছু। খুব আনন্দিত মনে ফিরে এলাম। পরদিন দুধপাথরি না ইউসমার্গ তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হল। অবশেষে আমাদের হাউসবোটের মালিক পরামর্শ দিলেন ইউসমার্গ যাওয়ার জন্য। কাল আমাদের ঘোরার শেষদিন, ফিরতে হবে আমাদের, আসন্ন নবমীর রাতের জন্য যেমন অষ্টমী থেকেই মন কেমন শুরু হয়ে যায়, সেই বিষাদের হালকা সুরে রাত্রি নেমে এল।

<< আগের পর্বঃ কাশ্মীর – একটি স্বপ্নপূরণ (গুলমার্গ পর্ব)

পরের পর্বঃ কাশ্মীর – একটি স্বপ্নপূরণ (ইউসমার্গ পর্ব) >>

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ indiaKashmirpahalgam