শ্রীনগর

শ্রীনগর (Srinagar), জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী এবং “প্রাচ্যের ভেনিস” হিসাবে পরিচিত যা পশ্চিম কাশ্মীরের ঝিলম নদীর তীরে অবস্থিত। এটি যেমন তুষারপাতের সঙ্গে আপনার সাক্ষাৎ করিয়ে দিতে পারে, তেমনি দীর্ঘদিন ধরে এখানে থাকার স্মৃতি বা বাতাসের সামান্য আঁচড় আপনাকে পরিতৃপ্ত করতে পারে। মসজিদ, মন্দির এবং সমাধি আপনাকে এক বিশ্ব সৌন্দর্য্যমুখর অভিজ্ঞতা দিবে। হাউসবোটে রাত্রিযাপন, লক্ষ লক্ষ মনোমুগ্ধকারী টিউলিপ সমন্বিত একটি বাগানে পায়চারি ও তাদের মাথা দোলানো প্রাণবন্ত নৃ্ত্য এবং উচ্চতর উচ্চতায় লেক বরাবর ট্রেকিং – অসাধারণ গন্তব্যস্থল হিসাবে শ্রীনগরকে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ আছে।

শ্রীনগর এর দর্শনীয় স্থান

চশমা শাহী

১৬৩২ সালে আলী মর্দান খান মুঘল গর্ভনর মিষ্টি জলের স্প্রিং এর উপর এই উদ্যান তৌরী করেছিলেন। মুঘল বাদশা তার বড় রাজপুত্র দারা শিখকে উপহার দিয়েছিলেন। রুপা ভবানী এক মহিলা সন্যাসী এই প্রাকৃতিক স্প্রিং আবিষ্কার করেছিলেন। এই স্প্রিংকে আগে বলা হত চশমা সাহিবি লোক মুখে অপভ্রংশ হয়ে চশমা শাহী হয়ে গেছে। উদ্যানটি তিন ভাগে বিভক্ত। সব থেকে উপরে যেখান থেকে জলধারা নালা বাহির হচ্ছে সেখানে দুই-তলা কাশ্মিরি হাট আছে। দ্বিতীয় চত্বরে জলপ্রপাত হয়ে নীচে নামছে। তৃতীয় চত্বর এখানে পাঁচটি ঝর্ণা বর্গাকারে আছে। এখান দিয়েই প্রবেশ দ্বার। সাধারণত মুঘল গার্ডেনে ফুল ফোটে মে জুন মাসে তখন বাগান দেখতে খুব ভালো লাগে।

পরী মহল

পরী মহল, একটি সাত তলা বিশিষ্ট উদ্যান। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার বড় রাজপুত্র দারা শিখহ’র জন্য গ্রন্থাগর ও আবাসস্থল হিসাবে নির্মিত হয়েছিল ১৬০০ শতকের মাঝা মাঝি সময়ে। এখানে দারা শিখহ জ্যোতি বিজ্ঞান ও জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চা করত। পরি মহল ইসলামী স্থাপত্য ও শিল্পের উপর নির্মিত। এখান থেকে ডাল লেক ও শ্রীনগর শহর খুব সুন্দর ভাবে দেখা যায়।

ডাল লেক

ডাল লেক (Dal Lake), তার হাউসবোট এবং শিকারার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। সেই সাথে পূ্র্ণ বিকশিত পদ্মফুল ও নির্মলতার জন্যও ডাল লেকের সুখ্যাতি আছে। ২৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে প্রসারিত, হ্রদ বা লেকটি চারটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে, যার মধ্যে নাগিন লেক হল একটি অন্যতম। কায়াকিং থেকে সাঁতার এবং ক্যানোয়িং থেকে হাউসবোটে থাকার অভিজ্ঞতা সহ ডাল লেক গ্রীষ্মকালে প্রচুর চিত্তবিনোদনের সুযোগ প্রদান করে।

নাগিন লেক

“আংটির মধ্যে মণি” হিসাবে উন্নীত নাগিন লেক (Nigeen Lake), অনেকের কাছে ডাল লেকের এক বিচ্ছিন্ন অংশ রূপে পরিচিত কিন্তু এটি আসলে একটি সংকীর্ণ কজওয়ে বা উঁচু বাঁধের দ্বারা সংযুক্ত আছে। পর্যটকরা সেখানে প্রচুর হাউসবোট পেয়ে যাবেন। হ্রদটি নিস্তব্ধতা এবং নির্মলতা উপলব্ধ করায়।

জামা মসজিদ

১৬৭৪ সালে নির্মিত জামা মসজিদ, শ্রীনগরের মসজিদগুলির মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীনতম। চারটি কুন্ডলী, ৩৭০-টি স্তম্ভ ও প্রার্থনা সভার সমন্বয়ে গঠিত মসজিদটি ইন্দো-শারাসেনিক স্থাপত্যের এক নিদারুণ উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মসজিদটির প্রতিটি স্তম্ভ হিমালয়ের সেডার (দারূবৃক্ষবিশেষ) কান্ডের একক খন্ডের দ্বারা নির্মিত। মসজিদটি তার ইতিহাসের ধারায় বহুবার বিপর্যস্ত ও পুনরুদ্ধার হয়েছিল। এটি ফ্রাইডে মসজিদ বা শুক্রবার মসজিদ নামেও পরিচিত।

হজরৎবল মসজিদ

ডাল লেকের তীরে অবস্থিত, মসজিদটি সাদা মার্বেলের তৈরি। কাশ্মীরের এক বিরল ঐক্যবন্ধন এবং মুঘল শৈলীর স্থাপত্য, হজরৎবল মসজিদ দরগাহ শরিফ নামেও পরিচিতি লাভ করেছে। নবী মুহাম্মদের চুলের একটি সূত্রে – এই পবিত্র আধারটি একটি ধ্বংসাবশেষকে ধারণ করে আছে বলে মনে করা হয়।

শঙ্করাচার্য মন্দির

শঙ্করাচার্য পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত, এই মন্দিরটি প্রায় খ্রীষ্টপূর্ব ২০০ শতকে, সম্রাট অশোকের পুত্র জালুকা-র দ্বারা নির্মিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। অনেক ঐতিহাসিকদের ধারণা অনুযায়ী এটি একটি বৌদ্ধ মন্দির ছিল, যেটি আদি শঙ্করাচার্য, প্রভু শিবের প্রতি উৎসর্গীকৃত, হিন্দুদের পূজার্চনার জায়গা হিসাবে রূপান্তরিত করেন। পাহাড়ের চূড়া থেকে, দর্শকেরা শ্রীনগর এবং পীর পাঞ্জল পর্বতমালার তুষারাবৃত পর্বতশ্রেণীর একটি সামগ্রিক দৃশ্য পরিদর্শন করতে পারেন।

শ্রী প্রতাপ সিং মিউজিয়াম

১৮৯৮ সালে প্রতিস্থাপিত, মিউজিয়ামটিতে উশকূরের একটি বৌদ্ধ স্থান থেকে সংগৃহীত, তৃতীয় শতকের অন্তর্গত কিছু বিরল পোড়ামাটির মূর্তি, হারওয়ান থেকে চতুর্থ এবং পঞ্চম শতাব্দীর সময়কালীন বিভিন্ন ঢালাই পোড়ামাটির ফলক, লোকেশ্বরের একটি প্রাচীন পিতলের মূর্তি এবং গান্ধার স্থাপত্য শৈলীতে, পঞ্চম শতকের একটি বুদ্ধ চিত্র এখানে প্রদর্শিত রয়েছে। এছাড়াও যাদুঘরটিতে প্রাচীন মূদ্রা, সঙ্গীতের বাদ্যযন্ত্র, পাণ্ডুলিপি, ক্ষুদ্র অঙ্কন, হাতিয়ার ও অস্ত্রসম্ভার, বস্ত্র, ভাস্কর্য এবং চামড়া, ঘাস ও কাঠের কারুকার্যময় দ্রব্য-সামগ্রীও রয়েছে।

ইন্দিরা গান্ধী টিউলিপ গার্ডেন

এশিয়ার সবথেকে বড় টিউলিপ উদ্যান হলো ইন্দিরা গান্ধী টিউলিপ গার্ডেন। কাশ্মীর উপত্যকায় নুতন পর্যটন মরুশুমের সূচনা হয় টিউলিপ উদ্যান উদ্বোধন দিয়ে। পূর্বে সিরাজ বাগ নাম ছিল। ২০০৮ সালে তৎকালীন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ নাম বদল করে নাম দেন ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল টিউলিপ গার্ডেন। জাবরওয়ান রেঞ্জের তলদেশে ধাপে ধাপে গড়ে উঠেছে ৩০ হেক্টর জুড়ে বাগান। ২০১৯ সালে ১২ লাখ টিউলিপ বাল্ব ৫১টি বিভিন্ন ধরনের টিউলিপ লাগান হয়েছিল। এছাড়া ১২ ধরনের Hyacinth, Daffodil, Ranunculus অন্যান্য রকমের ফুলও লাগানো হয়েছিল। টিউলিপ ফুল সতেজ জীবন কাল তিন থেকে চার সপ্তাহ। ডিরেক্টর ফ্লোরিকালচার আব্দুল হাফিজ সাহেব আসা করেন যে এমন ভাবে টিউলিপ বাল্ব লাগান হবে যাতে দুই মাস ধরে টিউলিপ গার্ডেন জনগণের জন্য খোলা রাখতে পারেন।

নিশাত বাগ

নিশাত বাগ শ্রীনগরের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুঘল গার্ডেন। এর পিছনে জাবর ওয়ান মাউন্টেন রেঞ্জ। সেখান থেকে ১২ টি চত্বরে বিভক্ত, মানে ১২টি রাশিচক্র নিদর্শন করে ধাপে ধাপে নীচে নেমে এসে ডাল লেকের ধারে মিশেছে। ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে নূরজাহান এর বড় ভাই আসিফ খান পারস্যের উদ্যানের মডেলে হলেও বর্গাকার রূপের পরিবর্তে আয়তক্ষেত্রের রূপে চত্বর কাশ্মিরী ভ্যালির অনুরুপে তৈরি করেন। গোপী তৃষ্ণা নামে এক স্প্রিং এর পরিষ্কার জল উপর থেকে ঝর্ণা প্রবাহিত হয়ে রাস্তা অব্দি নেমেছে। চিনার ও সাইপ্রাস গাছের আধিক্য, আসে পাশে কিছু পুরান মুঘল ভবন আছে। ফুল দেখার ভাল সময় মে জুন মাস, ঐ সময় প্রতিটি মুঘল গার্ডেন খুব চিত্তাকার্ষক হয় কারন বাগান একদম ফুলে ভরা থাকে।

দচিগাম বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য

পর্বত দ্বারা বেষ্টিত এবং তৃণভূমি ও পাথুরে পর্বতগাত্রের সঙ্গে চিহ্নিত, অভয়ারণ্যটি প্রায় ১৪১ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। ১৯৮১ সালে জাতীয় উদ্যান হিসাবে ঘোষিত, অভয়ারণ্যটি ব্যাপক বৈচিত্র্যময় উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের আশ্রয়স্থল, বিশেষত আ্যভিফৌনা প্রজাতি ও হাঙ্গুল বা কাশ্মিরি হরিণ। উদ্যানটিতে প্রবেশের জন্য বিশেষ অনুমতিপত্র প্রয়োজন।

শ্রীনগর ভ্রমণের সেরা সময়

শ্রীনগর, সারা বছর ধরে মনোরম আবহাওয়ার সঙ্গে আশীর্বাদিত থাকে, সুতরাং পর্যটকেরা যে কোনও সময় শ্রীনগর পরিদর্শনে আসতে পারেন। তবে, এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সমগ্র অঞ্চলটিতে আবহাওয়া মনোরম থাকায় এবং সুন্দর ফুলে বিকশিত হয়ে ওঠায়, এই সময়টিই শ্রীনগর পরিদর্শনের সেরা সময় হিসাবে বিবেচিত হয়।

এপ্রিল থেকে মে বসন্তকাল

এই সময় ফুলে ভরা ভ্যালী। টিউলিপ ফুলও দেখতে পারবেন। আর শীতের পরপরই তাই Snow ও অনেক।

সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর শরৎকাল

এই সময়ে Snow কিছুটা কম থাকবে। তবে উপরের দিকে পাওয়া যাবে। যেমন, গুলমার্গ গন্ডোলার ২য় ফেজে, সোনামার্গের থাজিওয়াস হিমবাহে। এই সময় ফল পাওয়া যাবে। গাছে গাছে আপেল ঝুলে থাকবে। আর তার সাথে চিনার গাছের রঙ্গিন রুপ।

‎ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি শীতকাল

এই সময়ে দেখবেন সাদা শুভ্র পাহাড়। চারিদিকে শুধু Snow, snow & snow. আর Snow fall তো আছেই। তবে শীতকালে অসুবিধাও অনেক। শীতের অনেক প্রস্তুতি নিতে হবে, রাস্তা-ঘাট বন্ধ থাকে ফলে অনেক জায়গায় যেতেই পারবেন না। এমন কি আপনার আটকে পড়ার চান্স অনেক বেশী।

তাই সবদিক বিবেচনা করলে এবং আপনি যদি একবার যেতে চান, তাহলে এপ্রিল-মে উপযুক্ত সময়।

এক্টিভিটিস

আপনি প্রায় তিন’শ বছরর প্রাচীন মুসলিম মিটিং হল বা মুসলিম অধিবেশন সভগৃহটি – খানকাহ শাহ-ঈ-হামাদান, চমৎকার মুঘল বাগিচা, টিঊলিপ গার্ডেন, বাদশাহ সমাধি এবং ঊলার হ্রদ অবশ্যই ঘুরে দেখুন। ডাল লেকে শিকারা রাইড, আ্যসটোন মার্গে প্যারাগ্লাইডিং এবং আ্যলপাইন লেক বরাবর ট্রেকিংও চাইলে করতে পারেন।

কাশ্মীর যাওয়ার উপায়

ট্রেনে যেতে চাইলে

প্রথমে ট্রেনে কিভাবে যেতে হবে সেটা বলি , ট্রেনে যেতে চাইলে আপনাকে ঢাকা থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে জম্মু যেতে হবে এবং সেখান থেকে গাড়ী করে শ্রীনগর। কলকাতা থেকে জম্মু যাওয়ার দুটি ট্রেন আছে। হিমগিরি ও জম্মু তাওয়াই, হিমগিরি সপ্তাহে ৩ দিন (মঙ্গল, শুক্র ও শনিবার) রাত ১১:৫০ টায় হাওড়া থেকে জম্মুর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সময় লাগে ৩৫ ঘন্টা ৩৫ মিনিট। আর জম্মু তাওয়াই প্রতিদিন চললেও সময় একটু বেশী লাগে।

অনেকে আবার ট্রেনে দিল্লী গিয়ে আগ্রার তাজমহল এগুলো ঘুরে কাশ্মীর যায়। সেক্ষেত্রে আপনি দিল্লী চলে যান। সেখানে ঘুরে তারপর জম্মুর এভেইলেভেল ট্রেন পাবেন।

কলকাতা থেকে জম্মু পর্যন্ত নন এসি স্লিপার ১৫০০-১৬০০/- বাংলাদেশী টাকায় আর এসি ৩৩০০-৩৫০০/-টাকা পড়বে। এরপর জম্মু থেকে শ্রীনগর গাড়ীতে ৬ জনের দল হলে পার হেড ৬০০-৮০০/- টাকায় হয়ে যাবে। জম্মু থেকে শ্রীনগর যেতে সময় লাগবে ৮-১০ ঘন্টা।

ট্রেনের টিকেট দেশের যেকোন ট্রাভেল এজেন্সি থেকে অগ্রিম কেটে রাখতে পারেন অথবা গিয়েও কাটতে পারেন যেমন আপনার খুশি।

বিমানে যেতে চাইলে

শ্রীনগর যেতে হলে ঢাকা থেকে আন্তর্জাতিক বিমানে প্রথম যেতে হবে দিল্লি ইন্ধিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সেখান থেকে শ্রীনগর। অথবা ঢাকা থেকে কলকাতা যাবেন ট্রেনে বা বাসে পরে সেখান থেকে ডোমেস্টিক বিমানে জম্মু অথবা শ্রীনগর বিমানবন্দরে যাওয়া যাবে। কলকাতা থেকে সরাসরি শ্রীনগরে কোনো ফ্লাইট নেই তাই, দিল্লি হয়ে যেতে হয়।

বিমানের টিকেট শ্রীনগর পর্যন্ত ৮০০০/- ১৫,০০০/- টাকা বিভিন্ন মৌসুমের উপর নির্ভর করবে। ‪তবে বিমান খরচ কমানোর সবচেয়ে ভালো বুদ্ধি হলো বাংলাদেশের কোন ট্রাভেল এজেন্সি দিয়ে যত আগে সম্ভব ১/২ মাস আগে বিমানের টিকেট কেটে রাখা এতে সস্তায় বিমানের টিকেট পাওয়া যায় ।

বাই রোডে যেতে চাইলে

দর্শনা বা বেনাপোল দিয়ে ঢোকায় ভাল হবে। ঢাকা থেকে যেকোন বাসে পৌছে যান সরাসরি বেনাপোল । সীমান্তে দুই দেশের ইমিগ্রেশন পেরিয়ে আরেকটি অটোরিকশায় ২০ রুপি নেবে বনগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত। বনগাঁও থেকে কলকাতার ট্রেন পাওয়া যায় প্রায় প্রতি ঘণ্টায়ই। টিকেট হবে ২০-৩০ রুপি।

এছাড়া গ্রিনলাইন শ্যামলী সহ বেশকিছু বাস সার্ভিস সরাসরি কলকাতা পর্যন্ত যায়। কলকাতা থেকে রেলগাড়িতে সরাসরি জম্মু, জম্মু থেকে জীপ গাড়িতে শ্রীনগর। পাহাড়ি রাস্তা ৭/৮ ঘন্টা লাগবে, ভাড়া জনপ্রতি ৬০০/৭০০ রুপী নেবে।

শ্রীনগর নেমে প্রথমেই আপনার পাসপোর্ট নিবন্ধন করানো জরুরী। নিরাপত্তার কারণে কাশ্মিরে সব বিদেশিদের জন্য পাসপোর্ট নিবন্ধন করা জরুরী। এ জন্য শ্রীনগর বিমান বন্দরে আলাদা একটা ডেস্ক আছে সেখানে কেন এসেছেন, কোথায় থাকবেন, কতদিন থাকবেন, পাসপোর্ট নাম্বার, ভিসা নাম্বার ইত্যাদি তথ্য সম্বলিত একটা ফরম পুরন করতে হয়। যদি বিমানে যান তাহলে বিমান বন্দরেই এই কাজটা সেরে ফেলতে পারবেন, আর রাস্তায় দিয়ে গেলে শ্রীনগর ডাল লেকের সামনেই বিদেশী পাসপোর্ট নিবন্ধিকরণ অফিস আছে, সেখানেই এই জরুরী কাজটা সেরে ফেলতে পারবেন।

শ্রীনগরে কোথায় থাকবেন

শ্রীনগরে পর্যটকদের জন্য প্রচুর বাসস্থনোপযোগী থাকার জায়গার বিকল্প আছে। হোটেল সাদাফ ও হোটেল নিউ প্রিন্স ইন্, সুন্দর শালীন দামে চমৎকার রুম নিবেদন করে। যারা সম্পূর্ণ বিলাসিতার সঙ্গে তাদের থাকাটাকে উপভোগ করতে ইচ্ছুক, তারা তাজের দ্বারা ভিভান্ত ডাল ভিউ শ্রীনগর বা দ্য ললিত গ্র্যান্ড প্যালেস-এ গিয়ে দেখতে পারেন। তবে স্বাভাবিকভাবে, অধিকাংশ পর্যটকই তাদের থাকার জন্য একটি হাউসবোট বা বাসযোগ্য বজরা ভাড়া নিতেই বেশি পছন্দ করেন।

শ্রীনগর ডাল লেক বোটহাউজ এর ভাড়া
(Srinagar Dal Lake Boathouse Tariff)

হোটেলের খরচ

মানভেদে শ্রীনগরে হোটেলের খরচ ৬০০/- ৭০০০/- রুপী পর্যন্ত (ব্রেকফাস্ট সহ)। আর নাগিন লেকে বা ডাল লেকে হাউজবোটে খরচ পরবে মানভেদে ২৫০০/- রুপী থেকে ১০০০০/- রুপী পর্যন্ত (ব্রেকফাস্ট সহ)। তবে কিছু গেস্ট হাউজ আছে যেখানে ব্যাচেলর হিসেবে গেলে খরচ অনেক কমে যাবে ৩০০/-৬০০/ রুপী।

খাবার ব্যবস্থা

শ্রীনগরে খাবার খরচ মোটামুটি সাশ্রয়ী। একবেলা ৮০-৩০০ রুপীতে খাওয়া যাবে। শ্রীনগরে লালচকে খাবারের অনেক রেষ্টুরেন্ট আছে । শ্রীনগর গেলে অবশ্যই আহমেদ রেস্টুরেন্ট থেকে ঐতিহ্যবাহী ওয়াজওয়ান খেয়ে দেখবেন। খরচ পড়বে পদ অনুযায়ী দুই জনের জন্য মোট ৫০০/-১২০০/ রুপী।

এছাড়া কৃষ্ণ বৈষ্ণো ধাবা দারুণ নিরামিষ খাবার পরিবেশন করে। আর যদি মুঘলীয় খাবারের স্বাদ নিতে চান তাহলে অহদুস হল নিখুঁত জায়গা। এছাড়াও আপনি জি ইন্ বেকারী-তে বেশ কিছু সুস্বাদু প্যাস্ট্রি ও মটন ভুরিভোজও খেতে পারেন।

শ্রীনগরের মাস্ট ট্রাই খাবার কোনগুলো?

শ্রীনগরে ল্যাম্ব কারি, গোলাপিরঙা চা ‘শির’, কোশের তামোল চালের ভাত, রাজমা-শালগমের তরকারি, জাফরান দেওয়া চা ‘কাহওয়া’ ও রোগনজোশ অবশ্যই খেয়ে দেখুন।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ indiajammuKashmirsrinagar