ডে ট্যুরে চায়ের দেশ শ্রীমঙ্গল ঘোরা

অনেকদিন কোথাও যাওয়া হচ্ছিল না। কক্সবাজার যাবো এরকম পরিকল্পনা করে নিরাপত্তা এবং পর্যাপ্ত ভ্রমণসঙ্গীর অভাবে হুট করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম। বান্ধুবীরা মিলে ঠিক করলাম শ্রীমঙ্গল ঘুরে আসব। যাঁরা ভ্রমণসঙ্গীর অভাবে কিংবা সেফটির কথা বিবেচনা করে ঘুরতে যেতে ভয় পান, বিশেষত মেয়েরা যারা নিরাপত্তার খাতিরে বা সঙ্গীর অভাবে ঘুরতে যেতে পারছেন না তাঁরা শ্রীমঙ্গল ঘুরে আসতে পারেন নির্দ্বিধায়।

চা বাগান

আমরা ভোর সকালে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও একটু দেরি হয়ে যায় বাসে উঠতে জ্যাম এর কারণে। সকাল সাড়ে ৯ টায় চিটাগাং রোড থেকে বাসে উঠি। সরকারি ছুটির মাঝে যাওয়ায় জ্যামের জন্য পৌঁছাতে দুপুর হয়ে যায়। দুপুর ১টায় বাস থেকে নেমেই “পাঁচ ভাই” এ ঝটপট দুপুরের খাবার খেয়ে নেই। সিলেট যাবেন অথচ “পাঁচ ভাই” আর “পানসি” যে খাবেন না তা হবে না! এ দু’টো খাবার দোকানের কিছু মাস্ট ট্রাই আইটেম সুযোগ পেলে অবশ্যই চেখে আসবেন! কয়েকটা স্পট ঘুরার জন্য দর-কষাকষি করে সিএনজি একেবারে রিজার্ভ করে নিলাম ৫০০ টাকায়। প্রথমেই লাউয়্যাছড়া উদ্যান এর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। যাত্রার শুরুতেই নীলকন্ঠ কেবিন পড়বে। যাঁরা সাত রঙ এর চা খেতে ইচ্ছুক তাঁরা এখানে এসে খেতে পারেন।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

পুরো রাস্তার দু পাশ জুড়ে প্রথমে শুধু নয়নজুড়ানো চা বাগান। যাত্রাপথে বাংলাদেশ চা বোর্ড, জাদুঘর, গ্র্যান্ড সুলতান রিসোর্ট সহ বিভিন্ন স্পট পরে যা আমরা উদ্যান থেকে ফেরার সময় ঘুরেছি। আপনারা চাইলে যাওয়ার পথেই ঘুরে নিতে পারেন। উদ্যান পৌঁছাতে প্রায় ৩০-৪০ মিনিট সময় লাগে। ৫০টাকা দিয়ে টিকেট কেটে ঢুকে পড়লাম উদ্যান। পুরো উদ্যান সারাদিন ঘুরলেও সম্ভবত শেষ করা সম্ভব না! 🙄

তাই বেশ খানিক সময় কাটিয়ে বের হয়ে আসলাম অন্য স্পট গুলো ঘুরার জন্য। যেহেতু জ্যাম এর কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল শুরুতেই, তাই কিছু স্পট ঘোরা সম্ভব হয়ে উঠেনি। চা বোর্ড গবেষণা প্রতিষ্ঠানসহ আশেপাশে কিছু জায়গা ঘোরা শেষ হয় সন্ধ্যার মধ্যে। সিএনজিওয়ালা মামা বধ্যভূমি সহ আরো কিছু জায়গায় ঘুরাতে চেয়েছিল। সময়ের অভাবে সম্ভব হয়ে উঠে নি। তাই যাঁরা ডে ট্যুর দিতে চান চেষ্টা করবেন একদম সকালের প্রথম বাস ধরার। তাহলে সারাদিন শান্তিমত সবগুলো স্পট ঘুরতে পারবেন।

যাওয়ার উপায়

ফকিরাপুল/সায়েদাবাদ/চিটাগাং রোড যেকোন জায়গা থেকে ঢাকা টু শ্ৰীমঙ্গল এর বাসে উঠে পড়ুন। বাস ভাড়া ৪৫০ টাকা।

খরচাপাতি

আমাদের জনপ্রতি প্রায় ১২০০-১৩০০ টাকা খরচ হয়েছে। জনসংখ্যা বাড়লে সিএনজি রিজার্ভ এর ভাড়ার জনপ্রতি পরিমাণ কমবে! চেষ্টা করবেন স্থানীয় সিএনজি ওয়ালা রিজার্ভ করতে। এর সুবিধা হচ্ছে উনি ট্যুরিস্ট গাইড হিসেবে ও কাজ করবেন এবং স্থানভিত্তিক বিভিন্ন ধরনের গল্প সম্পর্কে জানতে পারবেন আপনি।

বি:দ্র: শ্রীমঙ্গল বেশ পরিচ্ছন্ন একটা শহর! ময়লা খুব কমই দেখেছি আশেপাশে। তাই ময়লা ফেলে কেউ আশপাশের পরিবেশ নষ্ট করবেন না আর অবশ্যই উদ্যানে গিয়ে গাছে নামের অমুক প্লাস তমুক লিখে সৌন্দর্য্য নষ্ট করবেন না!
Leave a Comment
Share