দার্জিলিং ভ্রমণ – মাত্র ৭০০০ টাকায়

ভিসা কাজটাই হচ্ছে একটু ঝামেলার। পাসপোর্ট চার্জ, ভিসা ফি, ট্রাভেল ট্যাক্স ইত্যাদি ফিক্সড খরচ। আপনি যেভাবেই যান না কেন, এই খরচগুলো আপনার হবেই। তাই এই খরচ গুলো বাদ দিয়ে আমার হিসেব।

ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি বাস ভাড়া ১০০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা , আমি যেমন ঘুমের জন্য এসি বাস পছন্দ করি, অনেকেই হয়ত বাজেট সল্পতার জন্য নন-এসি বাসে যেতে পারেন, আরও কমে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু সরাসরি শিলিগুড়ি বাস নিবেন যেন হাতে সময় থাকে। রাতের বাসে ঢাকা থেকে রওনা দিলে সকাল ১০/১১ টার মাঝেই শিলিগুড়ি পৌঁছে যাবেন। এই সময়টায় শিলিগুড়ি শহর ঘুরে দেখতে পারেন। দুপুরের খাবার শিলিগুড়ি থেকে খেয়ে নিবেন, শিলিগুড়ি শহরে দার্জিলিং মোড়ে দার্জিলিং যাবার জন্য টাটা সুমা, মাহিন্দ্রা জীপ পাবেন ভাড়া ২০০ রুপি।

ও হ্যাঁ, ডলার ভাঙ্গিয়ে নিবেন শিলিগুড়ি শহর থেকেই, বর্ডার থেকে এখানেই ডলারের দাম ভাল পাবেন। যাই হোক আমরা আমাদের দার্জিলিং রুটে আসি, জীপে দুপুরের পর পরই উঠে পরবেন, খুব বেশি দেরি হলে পরে জীপ পাবেন না। দার্জিলিং যেতে সময় লাগবে ৩/৪ ঘন্টা , শিলিগুড়ি থেকে রওনা হওয়ার প্রথম ২০ মিনিট রাস্তা সমতল পাবেন এর পর শুধুই মেঘ পাহাড়ের খেলা। দার্জিলিং শহরে সন্ধার সময় পৌঁছে যাবেন আসা করি, ট্রাফিকের জন্য একটু সময় বেশি লাগতে পারে। দার্জিলিং রেল ষ্টেশনের পাশেই নামতে হবে, এখন হোটেল খোঁজার পালা, দার্জিলিং শহরের মাঝে সমতল একটি যায়গা আছে নাম ‘ ম্যালে ‘। ম্যালের আশে পাশে হোটেল খুজবেন, না পেলে আমার মত অনেক রাত পর্যন্ত হোটেল খুজতে হতে পারে। আমি গত মাসেই গিয়েছিলাম, এই সময়টাতে দার্জিলিং ভ্রমণের সেরা সময় তাই হোটেল পাওয়া একটু কঠিন ছিল। যাই হোক আমি অনেক খোঁজার পর দার্জিলিং রেল ষ্টেশন এর পাশেই ষ্টার লজ পেয়েছিলাম, এটি জীপ যে জায়গায় (দার্জিলিং রেল ষ্টেশনের সামনে) নামিয়ে দেয় তার একটু উপরেই।

হোটেলে চেকইন করার আগেই ৩ বেলা খাবার কথা বলে নিবেন, সব হোটেলে এই ব্যাবস্থা থাকে না কিন্তু থাকলে খুব ভালো, বাইরে খাবার খরচ অনেক বেশি। আমার হোটেল খরচ ছিল ৬০০ রুপি থাকা খাওয়া সহ, আমি হোটেল দালাল সহযোগিতায় নিয়েছিলাম তাই ১০০ রুপি বেশি নিয়েছে, ম্যানেজার পরে বলেছে আমাদের। আমি ২ রাত ছিলাম , হোটেল চেকইন করার পর ম্যানেজারকে বললেই সকালে টাইগার হিল সহ আরো ৭ টা জায়গায় দেখার ব্যাবস্থা ওরাই করে দিবে, খরচ ৬০০ রুপি। আমরা রাতে হোটেল উঠার পরের দিন ভোর রাতেই আবার বের হই, তাই যাদের জার্নি দুর্বলতা তারা প্রথম দিন শহর এর আশে পাশে ঘুরে দেখতে পারেন। আমরা সারা দিন টাইগার হিল, রক গার্ডেন, টেম্পল, টি গার্ডেন ঘুরে বিকেল আবার হোটেলে চলে আসি। সন্ধার পর ম্যালে ( ওখানকার মেইন সড়ক বলা যেতে পারে ) বসে আড্ডা আর মম খেয়ে পার করে দিতে পারেন।

২য় দিন মার্কেট গুলো ঘুরে দেখে কেনাকাটা করে হোটেল থেকে দুপুরের খাবার খেয়ে জীপে করে শিলিগুড়ি শহরের উদ্দেশে রওনা হই, খরচ ২০০ রুপি, সময় ২/৩ ঘন্টা। শিলিগুড়ি শহরে বিকেলেই পৌঁছাই, একটা হোটেলে ব্যাগ রেখে আবার কেনাকাটার জন্য মল ঘুরতে যাই, হোটেল খরচ ৪ জন এর জন্য এক রুম ৫০০ রুপি, ১ জনের ১২৫ রুপি। এখানে হোটেলে খাবার কোন দরকার নেই, খাবার হোটেলেই ভাল, রাতের এবং সকালের খাবার খরচ ১৫০ রুপি।

৩য় দিন সকালেই বর্ডার লোকাল বাস করে বর্ডারে চলে আসা যায়, খরচ ৫০ রুপি, সময় ১ ঘন্টা। বর্ডার পার হয়ে ১০০০/১২০০ টাকায় টিকেট কেটে রাতে ঢাকা পৌঁছাই।

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য , বর্তমান খরচ সম্পর্ক ধারনা দেওয়া, এখানে ১ জন এর ন্যুনতম খরচটাই বলা হয়েছে। বাংলা টাকা ৩০০০/৩৫০০টাকা এবং ২৫০০ রুপি খরচ হয়েছে , সর্ব মোট ৬৫০০/৭০০০ টাকা খরচ।

Leave a Comment
Share