ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত

ভিক্টোরিয়া ফলস পৃথিবীর সবচেয়ে চওড়া জলপ্রপাত। উচ্চতায় এটি মাত্র ১০৮ মিটার হলেও চওড়ায় এই জলপ্রপাত প্রায় ১,৭০৮ মিটার বা ৫,৬০৪ ফুট দীর্ঘ। আর পৃথিবীর সবচেয়ে চওড়া এই ভিক্টোরিয়া ফলস থেকে গড়ে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩৮,০০০ ঘনফুট পানি নিচে পড়ছে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার কী জানেন? এই বিশাল পরিমাণ পানি প্রচণ্ড গতিতে নিচে আছড়ে পড়ে সৃষ্টি করছে প্রচুর পরিমাণ ধোঁয়া আর কুয়াশা, যা কিনা প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার দূর থেকেও দেখা যায়। ভাবছেন, এটা ঐ এঞ্জেল জলপ্রপাতের মতোই ব্যাপার। উঁহু, ওখানে তো পানি বাষ্প হয়ে কুয়াশার মতো হয়ে যায়। আর এখানে পানি জোরে আছড়ে পড়ার কারণে পানির কণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে কুয়াশার মতো হয়ে গেছে!

ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের (Victoria Falls) অবস্থান প্রকৃতপক্ষে জাম্বিয়ায়। কিন্তু জিম্বাবুয়ের সীমানা ছুঁয়ে আছড়ে পড়েছে নিচে। আর এর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে যেতে হবে জিম্বাবুয়ের ভিক্টোরিয়া সিটি প্রান্তে। এই জলপ্রপাতে প্রতি সেকেন্ডে ৩৮ হাজার ৪৩০ ঘনফুট পানি আছড়ে পড়ছে নিচে। বছরে আনুমানিক ১৫ লাখ দর্শনার্থী এই জলপ্রপাত দেখতে আসেন। এর অপার সৌন্দর্যের কারণেই এটি দেশটির প্রধান পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ভিক্টোরিয়া একটি বিখ্যাত জলপ্রপাত। এর অবস্থান আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ে ও জাম্বিয়ার সীমান্তে। জাম্বেসি নদীর পানিই ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের পানির উৎস। এই জলপ্রপাত তার অধিক উচ্চতা ও প্রশস্ততার কারণে বিশ্বের প্রাকৃতিক সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের অন্য নাম ‘মোসি-ওয়া-তুন্যা’ যার অর্থ ‘বিজলী ধোঁয়া’। এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। এ জলপ্রপাতের প্রশস্ততা প্রায় এক মাইল (১.৭ কিলোমিটার)। প্রায় ১০৮ মিটার উঁচু থেকে অবিরামভাবে নিচে পানি পড়ছে। স্কটিশ অনুসন্ধানী ড. ডেভিড লিভিংস্টোন এই জলপ্রপাতের নাম দেন ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত। একে দেখার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো হেলিকপ্টারে চড়ে দেখা। তবে নিচ থেকে দেখার জন্য দু’টি দেশই ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের কাছে দু’টি পার্ক তৈরি করেছে। সে পার্কে দাঁড়িয়ে মাত্র ৬০ মিটার দূর থেকেই ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতকে দেখা যায়। এত কাছ থেকে দেখা যায় কিভাবে ওপর থেকে পানি নিচে পড়ে গর্জন করছে আর সে পানির তোড়ে ধোঁয়ার মতো বাষ্প উঠছে। সে দৃশ্য দেখলে বুঝতে মোটেই অসুবিধা হবে না কেন ভিক্টোরিয়াকে অনেকে বলেন ‘বিজলী ধোঁয়া’। তবে কোনো পার্ক থেকেই আসলে পুরোটা দেখা যায় না। জিম্বাবুয়ের অংশ থেকে দেখা যায় প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ, অন্য দিকে জাম্বিয়া অংশ থেকে দেখা যায় ২০ থেকে ১৫ শতাংশ।

২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ জলপ্রপাতের পুণরায় নামকরণ করে ‘মোজি-ওয়া-তুনিয়া’।

প্রবেশ মূল্য

আন্তর্জাতিক ভ্রমণার্থীদের মার্কিন ৩০ ডলার মূল্য দিতে হয়, অন্যদিকে অন্তর্দেশীয়/জাতীয় ভ্রমণার্থীদের জন্য টিকিটের মূল্য হল মার্কিন ২০ ডলার। ১২ বছরের নীচে শিশুদের জন্য টিকিটের মূল্য অর্ধেক।

Leave a Comment
Share