জাপানের কিয়োটো (Kyoto) শহরের উপকণ্ঠে জনপ্রিয় টুরিস্ট স্পট আরাশিয়ামা। আরাশিয়ামা বসন্তে চেরি ফুলের বিস্তৃতি আর শরতকালে রঙের ছোঁয়ায় অপরূপ সাজ নেয়। এ এলাকাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে জাপানের বিখ্যাত সাগানো বাঁশ বাগান বা সাগানো ব্যাম্বো ফরেস্ট (Sagano Bamboo Forest)। একে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে বাঁশ ঝাড়ের মাঝখানে তৈরি হয়েছে পায়ে চলা পথ। বাঁশ বনের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই পথের দূরত্ব ৫০০ মিটার। তেনরিউজি টেম্পল থেকে নোনোমিয়া শ্রাইন পর্যন্ত বিস্তৃত। এখানে আছে লেক এবং ডজন ডজন রেস্টুরেন্ট যেগুলোতে পাওয়া যায় চমৎকার সব জাপানী খাবার। পর্যটদের আকর্ষণের মূলে থাকে এখানকার বাঁশের ঝোপ ঘেরা পায়ে চলা পথ। এই এলাকায় যে প্রজাতির বাঁশ জন্মায় তা পথটিকে ঘিরে তৈরি করেছে টানেল।
বাঁশ নিয়ে জাপানিদের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। কথিত আছে, বাঁশ গাছের সঙ্গে মানুষের সবল ও শক্তিশালী হয়ে ওঠার একটা সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন উৎসবে নানা আকৃতির বাঁশ ব্যবহারের প্রচলন রয়েছে। বাঁশের তৈরি আইসক্রিম বাটি, ঘরবাড়ি, ঘেরা হরহামেশাই চোখে পড়ে। এই বনের বাঁশের তৈরি কাপ, বাক্স, ঝুড়ি, পাটির কদরও রয়েছে এই এলাকায়। কিন্তু এই এলাকায় গড়ে ওঠা প্রকৃতির এমন নান্দনিক সৌন্দর্য আর কোথাও দেখা যায় না। দেখে মনে হবে, চারপাশে ঘন বাঁশ বনের প্রতিটি গাছ যেনো লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
বাঁশ বনের এই পথের শুরু তেনরিউজি টেম্পল এর প্রবেশপথ থেকে। এখানেই প্রথম বাঁশ ঝাড়ের গোড়াপত্তন হয়। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন বাঁশ বনে রূপান্তর ঘটে। বাঁশ ঝাড়ে সূর্য কিরণের আলোকচ্ছটার বিচ্ছুরণ এবং পথজুড়ে হালকা ছায়ার আনাগোনা উপভোগ করতে বাইক ভাড়া নেওয়া যায়। মৃদু পায়ে হেঁটেও এগুনো যায় সেই পথ ধরে। চলতে চলতে বাঁশের পাতায় বাতাস দোল খেয়ে যাওয়ার দৃশ্যও আরো উপভোগ্য হয়ে ওঠে। মন চাইলে কোনো তরুণ জাপানি রিকশাচালককে নিয়েও এ পথে ঘুরে আসা যায়। এজন্য ভাড়া গুনতে হতে পারে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার ইয়েন। এটা নির্ভর করবে গন্তব্যের ওপর।
দু’ভাবে আরাশিয়ামা যাওয়া যায়। জে আর ট্রেন ধরে সাগা-আরাশিমা স্টেশন গিয়ে পৌঁছুলেই চলবে অথবা হেংকুয়া রেলপথ দিয়ে আরাশিমা (Arashiyama) – হেংকুয়া স্টেশন গেলেই নাগাল মিলবে বাঁশ বনের পথটির। এ দুটি পথ ধরে যদি কেউ গন্তব্যে যেতে ব্যর্থ হন, তাঁরা তেনরিউজি টেম্পল অথবা নোনোমিয়া শ্রাইন লক্ষ্য করে এগিয়ে গেলেও দেখা পাবেন বাঁশ বনের।
Leave a Comment