মহানন্দা ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারির প্রায় শীর্ষে ৪৫০০ ফুট উচ্চতার এক গ্রাম লাটপানচার। এমন এর অবস্থান যে গরম কালে নিম্ন উচ্চতার পাখিরা উপরে উঠে এখানে আশ্রয় নেয় আর শীত কালে অধিক উচ্চতার পাখিরা নেমে আসে। পাখিপ্রেমীদের কাছে স্বর্গরাজ্য বলা যেতে পারে। প্রায় ৩৬ রকমের প্রাণী আর ২৪০ প্রজাতির পাখি আছে লাটপানচার জঙ্গলের আনাচেকানাচে। কিন্তু প্রচারের অভাবে পর্যটক এর আনাগোনা কম। Rufous nacked Hornbill হলো এখানকার বিশিষ্ট পাখি।
ভোরবেলা পাইন, ধুপির জংলা পথ বেয়ে রোমাঞ্চকর ট্রেক রুট ধরে পৌঁছে যাওয়া সানরাইজ ভিউ পয়েন্ট। এখান থেকে পাখির চোখে দেখা তিস্তার অপরূপ চলন আর দিগন্তপ্রসারী কাঞ্চণজঙ্ঘা ফেলে রেখে যাওয়া শহুরে জীবন ভুলিয়ে দেবেই। আর আছে সিঙ্কোনার চাষ ভূমি, আছে চা বাগান। কিছুটা দুরে সিটং এ কমলা লেবুর চাষ। ছোট্ট একটু ট্রেক করে যাওয়া সরসরিদাড়া থেকে পুরো লাটপাঞ্চার (Latpanchar) গ্রাম এর দৃশ্য – এক অনন্য অনুভূতি।
পাখি ছাড়াও আর একটি অতি বিশিষ্ট প্রাণীর দেখা মিলতে পারে ভাগ্যে থাকলে। ডাইনোসর যুগের বিলুপ্ত প্রায় অতি দুর্লভ প্রাণী – স্যালামান্ডার। ১.৫ কিমি দুরের নামথিং পোখরিতে নাম মাত্র সংখ্যায় এখনো জীবিত। দেখতে ভুলবেন না। নামথিং পোখরির নিজের রূপও অসাধারণ।
পথের ধারে ধারে ফুটে থাকা নাম-না-জানা পাহাড়ি ফুল, ধাপে ধাপে চাষ করা সবুজ ফসলের দল আর নানা বিরল প্রজাতির পাখিদের বিদায় জানিয়ে দুদিন ছুটি কাটিয়ে যখন ফিরবেন, নিশ্চিত জানি নিজের কাছেই আবার আসার আবেদন রাখবেন।
পাখি দেখা, জঙ্গল ট্রেইলের জন্য গাইড সঙ্গে নেওয়া জরুরী। বাইনোকুলার থাকলে খুব ভালো হয়।
বর্ষা ছাড়া সারা বছরই হরেক পাখির সম্ভার নিয়ে লাটপাঞ্চার স্বাগত জানাতে তৈরী। অর্থাৎ অক্টোবর থেকে এপ্রিল অবধি খুব ভাল সময়।
নিউ জলপাইগুড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে সেবক – কালিম্পং – কালিঝোরা হয়ে যেতে হবে ৪৪ কিমি দুরের লাটপাঞ্চারে।
থাকার জন্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বেশ কয়েকটি হোম স্টে। চা বাগান বেষ্টিত Hornbill Nest সব থেকে আকর্ষণীয়। Hornbill Nest Homestay – Padam Gurung : 08926015477 & P. C. Rai : 08640040528
এছাড়াও লাটপাঞ্চারে রাত্রিবাসের জন্য রয়েছে লাটপাঞ্চার সিঙ্কোনেস্ট, এখানে থাকা খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি একদিনের খরচ ১২৫০ টাকার মত। যোগাযোগ – ৯৮০০১৭৭৮৫৫২।
Leave a Comment