জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান যা আগে ছিল জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলায় পূর্ব হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত একটি জাতীয় উদ্যান। তোর্সা নদীর তীরে অবস্থিত এই অভয়ারণ্যের সামগ্রিক আয়তন ১৪১ বর্গ কিলোমিটার। এই অভয়ারণ্য যদিও ১৯৪০-৪১ সাল থেকেই প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষিত, তবু অভয়ারণ্যের স্বীকৃতি জোটে ১৯৭৬ সালে। ১০ মে, ২০১২ তারিখে জলদাপাড়া বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করা হয়েছে। গরুমারার মতো এখানেও দেখা যায় হাতি, নানা প্রজাতির হরিণ, গাউর, বুনো শুয়োর, লেপার্ড, বাঘ আর অসংখ্য পাখি। ভাগ্য ভালো থাকলে এখানে পর্যটকরা বন্য জন্তুর দেখা পাবেনই।
জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে হাতি সাফারির ব্যবস্থা আছে। হাতির পিঠে চড়ে জঙ্গলের গভীরে যাওয়া যায় এবং বন ও তৃণভূমিতে গন্ডার, হাতির পাল ও অন্যান্য জীবজন্তুর বন্যজীবন প্রত্যক্ষ করা যায়। এলিফ্যান্ট সাফারি ছাড়াও বনে কার সাফারিও করা যায়।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান (Jaldapara National Park) এক শিং বা শৃঙ্গওয়ালা গন্ডারের জন্য বিখ্যাত। কয়েকটি মাত্র নির্দিষ্ট এলাকায় এই লুপ্তপ্রায় সৌন্দর্যকে খুঁজে পাওয়া যায়। অসমের কাজিরাঙা ও পবিতারাকে বাদ দিলে, জলদাপাড়াই দীর্ঘদিন যাবৎ এই প্রাণীর নিরাপদ আশ্রয়। এখানকার ঘাসে ঢাকা জলাভূমি এই গন্ডারের প্রাকৃতিক আবাসস্থল হিসেবে কাজ করে।
জলদাপাড়ায় বেড়াতে গেলে ১২ কিলোমিটার দূরের সাউথ খয়েরবাড়ি নেচার পার্ক দেখতে ভুলবেন না। এই পার্কের পাশেই তোর্ষা নদী। এটি বাঘ এবং চিতাবাঘের পুনর্বাসনকেন্দ্র। টোটোয় চেপে লেপার্ড সাফারিও করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে ভীষণ সতর্ক থাকা জরুরি। যারা এলিফ্যান্ট সাফারি করতে চান তারা চলে যান মাদারিহাটে। এখানে রয়েছে এলিফ্যান্ট রাইডিং কাউন্টার। আগে থেকে নাম নথিভুক্ত করুন এবং হাতির পিঠের চেপে অরণ্যের শোভা দেখার আনন্দ নিন।
বুড়িমাড়ি বর্ডার থেকে জীপ নিয়ে সরাসরি চলে যেতে পারেন, তেমনি ভাবে শীলিগুড়ি থেকে বাসে কিংবা জীপে চেপে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান যেতে পারবেন। এছাড়া শিয়ালদহ রেল ষ্টেশন থেকে রাত্রি ৮টা ৩০ মিনিটে ১৩১৪৯ কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেসে চেপে পরদিন নিউ জলপাইগুড়ি / নিউ মাল জংশন / হাসিমারা নামুন। সেখান থেকে ভাড়া গাড়িতে সরাসরি জলদাপাড়া।
বাসে যেতে চাইলে, শিলিগুড়ির তেনজিং নোরগে বাসষ্ট্যান্ড থেকে জয়গাঁর বাসে মাদারিহাট। মাদারিহাট বাসষ্টপের সামনেই জলদাপাড়া অরণ্যের প্রবেশদ্বার।
জলদাপাড়া অরণ্যের মধ্যে বিলাসবহুল হলং বাংলো, এছড়াও রয়েছে নানা মানের হোটেল।
Leave a Comment