বালি (Bali) দ্বীপটি ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত। এটি জাভা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে এবং বিষুবরেখার ৮ থেকে ৯ ডিগ্রী দক্ষিণে অবস্থিত। বালি দ্বীপটি সমস্ত পৃথিবী থেকে আগত পর্যটকদের মধ্যে জনপ্রিয়। ইন্দোনেশিয়া (Indonesia) দেশের বাকিদের থেকে বালি বেশ খানিকটা ভিন্ন প্রকৃতির এবং এটি একটি প্রদেশ। এটির নিজস্ব সরকার রয়েছে, তবে জাকার্তা ভিত্তিক সরকার উচ্চ মাত্রায় অর্থনীতি নিয়ন্ত্রিত করে। দ্বীপ-এর বালিনীয় সংস্কৃতি পর্যটকদের জন্য একটি প্রধান আকর্ষণ। এই সংস্কৃতি, এই অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে অতিক্রান্ত, বিশেষত ইউরোপ, চীন ও ভারতের ন্যায় বহু সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত রয়েছে।
একটি উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ হল যে দ্বীপটি তার পর্যটকদের উপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখিয়েছে, তবে বালির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ধীরে হয়েছে। হোটেল, রেস্তোঁরা ও অন্যান্য সার্বজনীন স্থানগুলি উচ্চ মানের হলেও, দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য সংযোগ এই অঞ্চলে প্রতিশ্রুত করা যাবে না। এই বাস্তবতা সত্ত্বেও, পর্যটন এবং বিশেষ করে মধুচন্দ্রিমার প্রসঙ্গে আসলে বালি দ্বীপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। প্রচুর নববিবাহিত দম্পতি ও রোমান্টিক জুড়ি অবকাশ যাপনের জন্য এই অঞ্চলটিকে খুবই পছন্দ করে।
বালিতে বাংলাদেশীদের জন্যে ভিসা এক্সপেম্পশন যার মানে হলো ভিসা ফ্রি। অন এরাইভাল ভিসা আর ভিসা এক্সপেম্পশন এর মধ্যে বেশ ভালো পার্থক্য আআছে। অন এরাইভালে কিছু টাকা দিয়ে ভিসা নিতে হয় কিন্তু এক্সেম্পশনে একদম ফ্রি। ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট দিলেই আপনাকে সীল দিয়ে ছেড়ে দিবে। মাঝে মাঝে আসার কারন জানতে চাইতে পারে। এছাড়া সন্দেহ হলে হোটেল বুকিং দেখতে চায়।
বালির আবহাওয়া সারা বছর ধরেই বেশ মনোরম থাকে। তবে, মার্চ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের অভিজ্ঞতা হতে পারে। ভ্রমণার্থীদের শুষ্ক মরশুম (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) এই দ্বীপটিতে পরিভ্রমণের জন্য বেছে নেওয়া উচিৎ। তবে, প্রচুর মানুষ এই সময় বালি পরিদর্শনে আসায়, জিনিষপত্রের মূল্য বৃদ্ধির ঝোঁক বেড়ে যায় এবং পর্যটনস্থলগুলিও বেশ ঘনসন্নিবিষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু এপ্রিল ও মে মাসের মধ্যে ভ্রমণে এলে আপনি বৃষ্টি এবং সেইসাথে ভিড় এড়াতে সক্ষম হতে পারেন।
বালি একটা ছোটো দ্বীপ। এর দক্ষিণ থেকে উত্তর – প্রায় সর্বত্র মানুষ থাকেন। তাই হোটেলও বালির নানা স্থানে পাওয়া যায়। এয়ারপোর্ট হল ডেনপাসারে, যেটা বালির একেবারে দক্ষিণ পূর্ব প্রান্তে। এয়ারপোর্টের কাছাকাছি উলুবাটু, সেমনিয়াক, জিম্বারান, কুটা, সানুর এইসব জায়গাগুলো সমুদ্র উপকূলবর্তী। অসংখ্য হোটেল আর রিসর্টে ভরে আছে এইসব জায়গা। এইসব এলাকা প্রায় সারারাত জেগে থাকে বহু দোকানপাট, নাইটক্লাব, পাব ইত্যাদির সমাবেশে।
বালিতে বিভিন্ন দামের ও মানের হোটেল পাওয়া যায়। এবং ভীষনই প্রতিযোগিতামূলক বাজার হওয়ায়, সব হোটেলই মোটামুটি একটা মান বজায় রাখে। দিনপ্রতি ২০০,০০০ রুপিয়া থেকেই হোটেল পাবেন। ৫০০,০০০ রুপিয়া মত খরচ করলে বেশ ভালো হোটেল বা গেস্ট হাউস পাবেন। বাংলাদেশে যে হোটেল ৬ হাজার টাকায় পাবেন, বালিতে সে হোটেল ২ হাজার টাকা। বালিতে হোটেলের অভাব নেই। ৭০০ থেকে শুরু করে লাখ টাকারও হোটেল আছে। মোটামুটি ভাল একটা ১৫০০ থেকে ২৫০০ বাংলাদেশী টাকার মধ্যে পাবেন যার মধ্যে সকালের ব্রেকফাস্ট ইনক্লুডেড।
বুকিং ডট কম বা এয়ার বিএনবির সাহায্য নিয়ে হোটেল বুক করুন। যত আগে বুক করবেন, তত সস্তায় ঘর পাবেন। উপরন্তু, বুকিং ডট কমে বুক করলে বেশিরভাগ সময় অগ্রিম টাকা দিতে হয় না।
বালিতে যাতায়াত এর অনেক মাধ্যম আছে। বেস্ট অপশন একটা স্কুটার ভাড়া নেয়া। প্রতিদিন ৬০-৮০ হাজার রুপিয়া। মানে ৩৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। কিন্তু একটু দামাদামি করে ৫০ হাজার রুপিয়া তে ভাড়া নেয়া কোন বেপারই না। ৫০ হাজার মানে ৩০০ টাকা। স্কুটার আপনার হোটেল এর রিসিপশনেই পাবেন। না থাকলে রিসিপশন থেকেই বলে দিবে যে কাছে কোথায় স্কুটার ভাড়া দেয়।এছাড়া একটা অ্যাপ আছে না গো জেক (GO-JEK)। এটা অনেকটা পাঠাও এর মতো। এটা ব্যবহার করে আপনি ঘুরতে পারবেন। আর গ্র্যাব (GRAB) তো আছেই।
বালিতে সংক্ষিপ্ত ভ্রমণের জন্য লিমো এবং ট্যাক্সি ভাড়া করা সহজ। ছোট-ছোট দলসহ, বালিতে বহু আকর্ষণগুলি তাদেরকে দর্শন করাতে পারে এমন একজন পেশাদার চালকের মাধ্যমে তারা চারপাশে ভ্রমণ করতে পছন্দ করে।
Leave a Comment