অন্নপূর্ণা

অনেকগুলো পর্বতের সমষ্টি নিয়ে অন্নপূর্ণা পর্বতসারি (Annapurna Range) যা নেপালে অবস্থিত। অন্নপূর্ণা প্রাকৃতিক সংরক্ষিত এলাকা এবং পেশাদার পর্বতারোহীদের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্র্যাকিং। হিমালয়ের পশ্চিমাংশের কয়েকটি চূড়ার সারি এখানে অবস্থিত। অন্নপূর্ণার সবচাইতে উঁচু চূড়াটির উচ্চতা ৮০০০ মিটার। এর পাসের চূড়াটির উচ্চতা ৭০০০ মিটার। অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্র্যাক অবশ্যই অন্নপূর্ণা অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থান। যারা ট্র্যাক করে তাদের জীবনে একবার হলেও এখানে যাওয়ার ইচ্ছে জাগবে। নেপালের অন্নপূর্ণা অঞ্চলের কেন্দ্রীয় উত্তর অংশে অবস্থিত স্থানের নামকরণ করা হয়েছে ‘হিমালয়ের গর্জন’। বছরের যে কোন সময় এখানে ট্র্যাক করা যায়। তবে অতিরিক্ত বরফের কারণে মাঝে মাঝে শীতকালে ট্র্যাক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে বসন্তকাল হচ্ছে ট্র্যাকিং-এর উপযুক্ত সময়। এসময় রাজকীয় ভাব পাওয়া যায়।

অন্নপূর্ণা এর মূল পীক হচ্ছে গভীর হিমবাহ পরিহিত স্থান যা অ্যাম্পিথিয়েটার নিয়ে প্রায় ১০ মাইল ব্যাস একটি বৃত্তে প্রায় অবিকল সাজানো। এটি অন্নপূর্ণা হিমাল, হিয়ান চুলি, অন্নপূর্ণা দক্ষিণ, অন্নপূর্ণা ফ্যাঙ্গ, অন্নপূর্ণা-১, গঙ্গাপূর্ণা, অন্নপূর্ণা-৩, গন্ধরবা চুলি এবং মাছাপুছেরে নিয়ে গড়া।

অন্নপূর্ণা পর্বতসারিকে ঘিরে বেশ কয়েক  প্রকার ট্রেকিং রুট আছে –

  • অন্নপূর্ণা সেঞ্চুয়ারি ট্রেক
  • অন্নপূর্ণা বেইসক্যাম্প ট্রেক
  • অন্নপূর্ণা সার্কিট ট্রেক

এগুলোই জনপ্রিয় তবে এর সাথে এড-অন হিসেবে আরো কিছু ট্রেক আছে।

কখন যাবেন

অন্নপূর্ণায় বেড়ানোর সবচেয়ে ভাল সময় সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ থেকে এপ্রিল।

ট্রেকিং এ যেসব জিনিস সাথে নিতে হবে

  • যারা যাচ্ছেন তাদের মাইনাস ১৫ ডিগ্রি তে চলার কাপড় চোপড় ব্যক্তিগত ভাবে জোগাড় করে নিতে হবে। ঢাকার গুলিস্থানের বঙ্গবাজার থেকে কিনে নিতে পারেন।
  • কান টুপি, ইনার ফুল অথবা হাফ স্লিভ (পলেস্টার বা সিনথেটিক হতে হবে যাতে ঘামে ভিজে আবার ঠান্ডা না লেগে যায়), ডাউন জ্যাকেট (হাল্কা হলে ভালো এবং হাল্কাগুলো একটু দামি), উইন্ড ব্রেকার, মোটা টাইটস, ট্রাউজার।
  • আরামদায়ক বুট
  • ট্রেকিং স্যান্ডেল
  • মোজা ৩/৪ জোড়া
  • ক্যামেরা – চার্জার – ব্যাটারি, মোবাইল, পাওয়ার ব্যাঙ্ক 
  • ট্রেকিং ব্যাগ – অবশ্যই ভালো মানের ট্রেকিং ব্যাগ যা দীর্ঘক্ষণ ট্রেকিং এ ও পিঠ ঘামাবে না এবং কোমড়ের উপরে চাপ সৃষ্টি করবে না।
  • রেইন কভার
    পেট্রোলিয়াম জেলি – ছোট কৌটা
  • পোলার্ড আইস সানগ্লাস
  • মাইনাস ১৫ তে থাকার মত স্লিপিং ব্যাগ সাথে থাকা ভালো – যা পোখারা থেকেও ভাড়া করা যাবে
  • গ্লাভস ভালো মানের (২ রকম ১টি পাতলা আরেকটি মোটা)
  • রেইন কোর্ট (পাঞ্চ টাইপ)
  • পাসপোর্টের ফটোকপি – ৬ টা পাসপোর্ট সাইজ ছবি 

সম্ভাব্য ঔষধের তালিকা

  • এইস এক্স আর – ১/২ পাতা
  • প্যান্টোনিক্স বা ম্যাক্সপ্রো যে যেই গ্যাসের ঔষধ খান – ৩ পাতা
  • মাসল পেইনের জন্য – মায়োলাক্স ৫০ মিগ্রা – ১ পাতা
  • অন্য পেইনের জন্য ন্যাপ্রোসিন প্লাস ৫০০ মিগ্রা ( রেডিয়েন্ট ) – ১ পাতা
  • রগে টানা অথবা লিগমেন্ট পেইনের জন্য টোরাক্স ১০ মিগ্রা ( স্কয়ার ) – ১ পাতা
  • তাৎক্ষণিক ঘন ঘন টয়লেট বন্ধের জন্য – ইমোটিল
  • হেক্সিসল ( ছোট কৌটা হলেও চলবে ) – নেপাল থেকে নিতে হবে – বিমানে লিকুইড নেয়া যায় না
  • ভালো শিন শিন ব্যান্ড ( ওয়ান টাইম ব্যান্ড এইড ) – ফোস্কা পড়ে ভেঙ্গে গেলে লাগানো যায়
  • মাইক্রোপোর ব্যান্ডেজ – এটিও ফস্কা পড়া বা কেটে যাওয়া যায়গায় ভালো কাজে দিবে
  • AMS এর আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা দেখলে – ACEMOX ( একমি ) ২৫০ মিগ্রা ( এর অর্ধেক – দুই বেলা ১২ ঘণ্টা পর পর খেতে হবে )
  • আইস কুল ম্যাক্স – ১/২ টিউব

কিভাবে যাবেন

অন্নপূর্ণা ট্রাকিং এ যাওয়ার একটি পথ হলো থুরং লা পাস এর রুট। এক্ষেত্রে সময় লাগবে ১২-১৯ দিন। থুরং লা পাস এর এই পথে আপনাকে যেতে হবে ৫,৪১৬ মিটার। অপূর্ব এই ট্রাকিং এ দেখতে পাবেন কাছ থেকে মানাসলু, ল্যাংট্যাং হিমেল, অন্নপূর্ণা ১, ২, ৩ ও ৪ এবং গঙ্গাপূর্ণা।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ annapurnabasecampmassifnepal