রঙ্গারুন ভ্রমণ

যাঁরা পাহাড়কে নিরিবিলিতে উপভোগ করতে চান তাঁরা দুটো দিন এখানে কাটিয়ে যেতে পারেন। আর এখানে যে চা বাগান দেখতে পাবেন তা অনেক চা বাগানকেই হার মানিয়ে দেবে।

আমি আজকে এমন একটি পাহাড়ী সুন্দরী জায়গার কথা বলবো যেখানে পর্যটকদের অতোটা ভিড় এখনও জমে উঠেনি, যেখানে আধুনিকতার ছাপ এখনও পৌঁছায়নি, যেখানে রয়েছে শুধুমাত্র কিছু পাহাড়ী ঘর বাড়ি আর কিছু হোমেস্টে, সঙ্গে থাকছে প্রকৃতির অসাধারণ সৌন্দর্য্য।

শহরের কোলাহল, দৈনন্দিন জীবন থেকে রেহাই পাবার জন্য দুটো দিন শান্ত , নিরিবিলি পরিবেশে কাটানোর জন্য সেরা ঠিকানা হলো এই সুন্দরী ছোট্ট পাহাড়ী গ্রাম রঙ্গারুন (Rangaroon), আর আপনি যদি চা বাগান ভালোবাসেন তাহলে এই জায়গাটিকে আপনার স্বর্গপুরী মনে হবে। দার্জিলিং থেকে মাত্র 18 কিমি দূরে দার্জিলিং এর ঠিক উল্টো পাহাড়ে টাইগার হিলের পাদদেশে অবস্থিত এই সুন্দরী অচেনা পাহাড়ী গ্রাম রঙ্গারুন।

প্রথম দিন

NJP থেকে কার্শিয়াং হয়ে আমারা রঙ্গারুন পৌঁছালাম। যাত্রাপথে আমরা দেখলাম রাস্তার পাশে অসাধারণ একটি সুন্দর পাহাড়ী ঝর্ণা ও কার্শিয়াং এর অসাধারণ সৌন্দর্য্য। ঝর্ণা দেখে কার্শিয়াং এর সাইটসিইং করেও পৌঁছে যাওয়া যায় রঙ্গারুনে। প্রথম দিন হোমেস্টে পৌঁছে একটু রেস্ট নিয়ে রঙ্গারুন গ্রামটিকে পায়ে পায়ে খুব ভালো করে ঘুরে দেখলাম। আজকেই দেখে নেওয়া যেতে পারে 1776 সালে ইংরেজদের হাতে তৈরি চা ফ্যাক্টরী, চা ম্যানাজারের বাংলো, ফুটবল গ্রাউন্ডের পাশে গ্রামটির একমাত্র চার্চটিকে। সঙ্গে ঘুরে দেখতে পারেন এখানকার বিভিন্ন হোমেস্টে, পাহাড়ী ঘরবাড়ি আর সঙ্গে অবশ্যই থাকছে রঙ্গারুনের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর সুবিস্তৃত চা বাগান।

আকাশ পরিষ্কার থাকলে পুরো রঙ্গারুন থেকে দারুন দেখতে পাওয়া যায় সুবিশাল কাঞ্চনজঙ্ঘাকে।হোমেস্টে থেকে রাতের বেলায় সামনের পাহাড়ে দেখতে পাবেন অজস্র জোনাকি পোকার মতো আলো জ্বেলে রয়েছে দার্জিলিং শহর যেন সমগ্র পাহারটির সৌন্দর্য্য বহুগুনে বাড়িয়ে তুলেছে। এ যে কি ভালো লাগা যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।

দ্বিতীয় দিন

সকালে ঘুম থেকে উঠে হোমেস্টের বারান্দায় বসে চা খেতে খেতে উপভোগ করলাম সামনের সু বিস্তৃত চা বাগান সহ সমগ্র পাহাড়ী সৌন্দর্য্যকে। সকালের breakfast করে একজন গাইড নিয়ে বেরিয়ে পড়ুন এখানকার সুবিস্তৃত চা বাগানের মধ্য দিয়ে রংবং নদী পর্যন্ত।

এই চা বাগানের মধ্য দিয়ে ট্রেকিং মনে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরদিন। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই রাস্তার Natural Beauty মন কেড়ে নেবার মতন। গিয়ে ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে। ট্রেকিং করে ফিরে শরীর থাকবে ক্লান্ত। তাই রুমে এসে রেস্ট। বিকালে একটু পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়ানো।

তৃতীয় দিন

আজই হবে রঙ্গারুনের শেষ দিন। আমরা গতদিন যেদিকের চা বাগানে ট্রেকিং করেছিলাম আজ যাব ঠিক তাঁর উল্টো দিকে, সেদিকেও রয়েছে সুবিস্তৃত চা বাগান। সকালে সেদিকের চা বাগানটিকে দারুন উপভোগ করলাম সঙ্গে গ্রামের যে দিকটা এখনও যাওয়া হয়নি সেই দিকটাও ঘুরে দেখলাম। ঘুরে এসে হোমেস্টেকে বিদায় জানিয়ে আমারা বেরিয়ে পড়লাম পরের গন্তব্য তাবাকোশির উদ্দেশ্যে।

রঙ্গারুনে আমাদের থাকার আস্তানা ছিলো Gyalchen Homestay. এখানে থাকা খাওয়া জন প্রতি ১৫০০ টাকা। বুকিং এর যোগাযোগ করতে পারেন এই নাম্বারে – 9933703073, 8918088746

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ DarjeelingRangaroon