কালিম্পং, লাভা ও রিশপ ভ্রমণ

বছর তিনেক আগেকার কথা। মার্চের শেষ সপ্তাহে গেছিলাম উত্তরবঙ্গের দু একটি জায়গাতে ঘুরতে। আমি পাহাড় ভালোবাসি। আর পাহাড়ের কথা মনে হলে সবার আগে আমাদের রাজ্যের কথাই মনে হয়। হিমালয় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে এই রাজ্যে। আজ এই সময় এতো টানা পোরেনের মধ্যে দাঁড়িয়ে যখন আমার সাধের উত্তরবঙ্গ আবার কবে পর্যটকদের জন্য অবারিত হবে সেই আশায় দিন গুনছি তখন আমার সেই ছোটো ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কথা আজ সবার সাথে ভাগ করে নিতে খুব ইচ্ছে করছে।

নির্দিষ্ট দিনে রাতের বেলা দার্জিলিং মেল এ চেপে বসলাম। পরদিন সকাল নয়টা নাগাদ পৌঁছলাম নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। সেখান থেকে অনেক দর দাম করে একটা গাড়ি ঠিক করে রওনা দিলাম কালিম্পং এর উদ্দেশে। ঠিক হলো গাড়িটি আমাদের সাথেই থাকবে আর ভ্রমণ শেষে আমাদের আবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ছেড়ে দেবে। মোটামুটি ৭০-৭৫ কিলোমিটার দূরে ১২৫০ মিটার উঁচুতে পাহাড়ি শহর এই কালিম্পং। দার্জিলিং এর মতো উচ্ছলতা নেই, চা বাগিচাও নেই কালিম্পং এ। তবে আয়তন ও আয়োজনে পর্যটক সমাগম উল্লেখ্য না হলেও ডেলো ও দুরপিনদারা দুই পাহাড়ের মাঝে অর্কিডের দেশ স্কটিশ মিশনারিদের গড়া কালিম্পং এর শান্ত স্নিগ্ধ প্রশান্ত রূপটি অবকাশ যাপনের পক্ষে মনোরম।

অতীতে সিকিম রাজ্যের দখলে ছিলো কালিম্পং। অতীতে সিকিম তথা তিব্বতের সঙ্গে ভারতীয় বাণিজ্যের মূল ঘাঁটি ছিলো কালিম্পং। আমরা মূল শহরের মধ্যেই একটা হোটেল নিলাম। খুবই ব্যস্ত জমজমাট শহর। সেদিন আর ঘুরতে যাবার মতো সময় হাতে ছিলো না। তাই ঘরেই বিশ্রাম নিলাম। ঠান্ডা খুব একটা ছিলো না সেই সময়। বেশ উপভোগ্য আবহাওয়া। ক্রমে সন্ধ্যা নামলো। আমাদের হোটেলে কোনো খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় রাতের খাবারের জন্য বাইরে যেতে হবে। হোটেল থেকে জানিয়ে দিলো এখানে রাত সাড়ে আটটার মধ্যে সব নাকি বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমাদের তার আগেই খেয়ে আসতে হবে। অগত্যা বেড়িয়ে পড়লাম। হোটেল এ আমরা ছাড়া আর কেউ নেই ও। অফ সিজন বলে নাকি পর্যটক সমাগম নেই প্রায়। রাস্তাতে বেড়িয়ে অবাক হবার পালা। দুপুর বেলা যে জমাট শহর দেখেছিলাম কোথায় গেলো সেই শহর? রাতের কুয়াশাতে মোড়া এক জনমানবহীন শহরে পরিণত হয়েছে আমার কিছুখন আগের দেখা সেই প্রাণচঞ্চল জায়গা। মানুষ তো দূর কোনো গাড়ি ও দেখতে পেলাম না রাস্তা তে। দোকান বাজার সব বন্ধ। মিথ্যে বলবো না সত্যি এবার গা ছম ছম করতে লাগলো। হোটেল থেকে আমাদের খাবার জন্য একটা রেস্টুরেন্ট এর খোঁজ দিয়েছিলো। আমরা তাদের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী এগিয়ে চললাম।

মনে পড়লো এই কালিম্পংকে কেন্দ্র করে অনেক ভূতের গল্প পড়েছি ছোটোবেলাতে। নিশুতি রাস্তা ধরে কিছুটা এগোনোর পর রেস্টুরেন্টটির খোঁজ মিললো। সেখানে গিয়ে দেখলাম তাদেরও যথেষ্ট তাড়া দোকান বন্ধ করার জন্য। কোনো রকমে রুটি আর ডিম ভাজার অর্ডার নিলো। তাদের জিগ্যেস করলাম এতো তাড়াতাড়ি নিঝুম হয়ে যাবার কারণ। তারা বললো সবার নাকি অনেক দূর বাড়ি। এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে কেবল অফিস আদালত আর কিছু হোটেল। তাই সবাই তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে যে যার বাড়িতে রওনা দেয়। যাই হোক তবু একটা কারণ জেনে মনটা একটু আশস্ত হলো। তাড়াতাড়ি খেয়ে দেয়ে আবার আমাদের হোটেলে ফিরে এলাম। এই একটা রাতই আমাদের কালিম্পং এর জন্য ধার্য করা ছিলো।

ক্যাকটাস বাগান, কালিম্পং

পরদিন সকাল হতেই আবার সেই কর্মব্যস্ত শহর। আজ আমরা সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়লাম। এখনকার যা কিছু দ্রষ্টব্য তা দেখে যাবো আরো এক পাহাড়ি ছোটো গ্রাম লাভা তে।

ডেলো, কালিম্পং

অর্কিড আর ক্যাকটাস এর জন্য কালিম্পং (Kalimpong) বিখ্যাত। আমরা প্রথমেই গেলাম অর্কিড হাউস দেখতে।খানে দেখলাম নয়ন লোভন নার্সারি। এরপর গেলাম শহর থেকে শ পাঁচেক ফুট নিচে শান্ত স্নিগ্ধ মনোরম পরিবেশে শ্বেত মর্মর এর মঙ্গল ধাম মন্দির। অপুর্ব সুন্দর এই মন্দির ও তার পরিবেশ। কৃষ্ণভক্ত গুরু মঙ্গল দাসের সমাধি রয়েছে এক তলায়। দ্বিতলে মূল মন্দির। নানান দেব দেবী। শহরের অপর প্রান্তে ১৭০৪ মিটার উঁচু ডেলো পাহাড়। সুন্দর করে সাজানো। ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যাচ্ছে নিচে বহমান তিস্তা নদী। সেখানে বেশ কিছু টা সময় কাটিয়ে আমরা চললাম লাভার পথে। যাবার সময় দেখলাম গৌরীপুর ভবন তথা চিত্রভানু। এই ভবন থেকেই ২৫ শে বৈশাখ ১৩৪৫ সনে টেলিফোনে জন্মদিন কবিতা আকাশ বাণীতে সরাসরি আবৃতি শোনান রবি ঠাকুর। এরপর দূর্পিনদারা ভিউ পয়েন্ট থেকে তিস্তা ও রংগিত নদীর মিলন দেখলাম। এতো উঁচু থেকেও দুটি নদীর জলের রঙ্গের পার্থক্য স্পষ্ট চোখে পড়লো। তিস্তার পান্না সবুজ জল আর রংগিত এর গাঢ় নীল জলের সংমিশ্রণ দেখে মুগ্ধ হলাম।

রাস্তাতেই গরম গরম মোমো খেয়ে শুরু করলাম লাভা এর উদ্দেশ্যে যাত্রা। লাভা পৌঁছতে শেষ বিকেল হয়ে গেলো। পাহাড়ি ছোটো গ্রাম এই লাভা হলো ২১৯৫ মিটার উঁচু মেঘ পরীদের দেশ। পাহাড় ও জঙ্গলের নৈসর্গীক শোভা মনকে আবিষ্ট করে।লাভা নেপালী বস্তি পেরিয়ে দশ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে রচেলা পাহাড়ে ৩১৭০ মিটার উচ্চে ৮৮ বর্গ কিলোমিটার ব্যাপ্ত ১৯৯২ এ গড়া ভার্জিন ফরেস্ট নেওড়া ভ্যালি ন্যশনাল পার্ক। আছে একটি অত্যন্ত সুন্দর মনাস্ট্রি। আমরা বিকেল বেলা পায়ে পায়ে ঘুরে এলাম শান্ত পরিবেশে সেই মনাস্ট্রিতে। ছোটো জায়গা, তার মধ্যেই সব ছোটো ছোটো হোটেল। পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায় গ্রামটা। চারিদিকে পাইন-চির -ধুপিবন।

লাভা মনেস্ট্রী

পরদিন লাভা থেকে জিপ এ করে চলে গেলাম নেওড়া ভ্যালি ফরেস্ট (Neora Valley Forest) এ। যাবার সময় পথে পড়লো কোলাখাম (Kolakham) বলে একটি জায়গা। সেখানেই একটি হোম স্টে মতো জায়গাতে আমরা টিফিন করলাম। জায়গাটি পক্ষী প্রেমিকদের জন্য স্বর্গ। হিমালয়ান রেড পান্ডা ঈগল ছাড়াও নানান পশু পাখির বৈচিত্র্যে এই উদ্যান অনবদ্য। বর্ষা এড়িয়ে মার্চ জুন আবার অক্টোবর-ডিসেম্বর পার্ক প্রবেশের আদর্শ সময়।

আমাদের গাড়িটা এক থাকলেও গাড়ির চালক কিন্তু বদল হচ্ছিলো। কালিম্পং থেকে যিনি আমাদের নিয়ে এসেছিলেন উনি লাভা তে এসে অন্য আর একজন চালককে দায়িত্ব দিলেন আমাদের নিয়ে যাবার তবে জঙ্গল যাবার জন্য আলাদা ধরনের গাড়ি বরাদ্দ হলো। নতুন চালকটির বয়স বেশ কম, বাচ্ছা ছেলেই বলা যায়। নাম হলো নিমা। যাই হোক জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে গাড়ি এগিয়ে চললো, রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পরে ধস নেমে রাস্তা সবই ধ্বংস প্রায়। সে সব মেরামতও হয় না। যাই হোক এক জায়গা তে এসে গাড়িটা থেমে গেলো। এখান থেকে অনেক গুলো সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামলে দেখা যাবে পাহাড়ি ঝোরা ছাঙ্গে। শুরু করলাম সিঁড়ি ভাঙ্গতে। অনেক গুলো ধাপ নিচে নেমে দেখতে পেলাম ঝরনা। চারিদিকে পাহাড় ঘেরা আর তার মধ্যে দিয়ে নেমেছে ছাঙ্গে জলপ্রপাত। চারিদিকে ঝর্ণার জল জমে রয়েছে, ঝর্ণার উল্টো দিকে একটা গুহা। সেখানেও ঝর্ণার জল ভর্তি। এই জঙ্গলে চিতা তো আছেই, শুনছিলাম রয়েল বেঙ্গল টাইগার এর খোঁজ ও মিলেছে। আশপাশ টা একেবারেই ফাঁকা, আমরা কজন ছাড়া আর কেউ নেই। এতোটা নিচে এই গভীর জঙ্গলে যদিও এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সাথে আমাদের গাড়ির চালক নিমাও নেমেছে নিচে। তবু ওকে দেখে একটু ভরসা হলো। চারিপাশের পরিবেশটা দেখে মনে হলো এই বুঝি বাঘ মামার জল খেতে আসার উপযুক্ত পরিবেশ। কিছুটা সময় কাটালাম এখানে। এমনিতেও এতো তা পথ সিঁড়ি ভেঙ্গে এসে খুব ক্লান্ত।

কিছুক্ষণ পর আবার আস্তে আস্তে যে পথে এসেছিলাম সেই পথ ধরেই আবার উঠে চললাম। গাড়ি তে উঠে ফিরে চললাম লাভার পথে। মনটা একটু খারাপ, জঙ্গলে এলাম বটে কিন্তু কোনো জীব জন্তুর দেখা পেলাম না। যদিও সত্যি সামনে থেকে দেখা পেলে কতটা খুশি হতে পারতাম জানিনা। ভয়েতেই প্রাণ যেত হয়তো।

গাড়ি আবার এগিয়ে চললো। এই সময় একটা জায়গাতে এসে আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কেমন যেন সজাগ হয়ে উঠলো। কেমন একটা গন্ধ নাকে লাগলো। এই ধরনের গন্ধ চিড়িয়াখানা গেলে অনেক সময় পাওয়া যায়। আমি সজাগ হয়ে চারিদিক জরিপ করতে লাগলাম। গাড়িতে জানলার ধারেই বসে ছিলাম। সামনের দিকে মুখটা এগিয়ে দিয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় দেখতে থাকলাম। এই সময়ই মাত্র কয়েকহাত দূরেই একটা বিশাল গাছের অনেকটা ওপরের দিকের গুঁড়িতে একটা কিছু চোখে পড়লো। রঙটা গাছের কান্ডের সাথে একদম মেলানো কিন্তু অনেকটা বড়ো আয়তন হবার জন্য দূর থেকে চোখে পড়ছে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে বস্তা বাঁধা আছে। কিন্তু গাড়িতো চলছে তাই কয়েক মুহূর্তেই আরো একটু এগোতেই বুঝলাম ওটা মৌচাক; বেশ বড়ো আকারের। কিন্তু সেই গন্ধটা যেন একটু বেশীই নাকে এসে ঝাপটা দিলো। গাড়িটি ওই গাছটাকে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে আমি কিন্তু তাকিয়েই আছি মৌচাকের দিকে যেন জীবন্ত যা দেখা যায় সেটাই উপরি পাওনা। এতোক্ষণ আমার দৃষ্টি সামনে ছিলো, গাছটির পাশে আসতেই দৃষ্টিও গাছটি কে অনুসরণ করে।

গাড়ি গাছকে পাশ কাটিয়ে যখন সামনে এগোচ্ছে আমি এবার জানলা দিয়ে মুখ বাড়িয়ে পিছনে ফেলে আসা গাছটিকেই অনুসরণ করতে করতে এক মুহূর্তের জন্য কিছু চোখে পড়ায় চমকে উঠলাম। সেই মৌচাক থেকে যেন একটা লম্বা লেজ ঝুলছে।ভালো করে দেখতে যাবো কিন্তু সে সুযোগ হলো না। গাড়ি ততক্ষণ এ অন্য দিকে বাঁক নিয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে কথাটা সবাইকে বললাম। নিমা বললো লেজটা যদি আমি সত্যি দেখে থাকি তাহলে ওটা অবশ্যই চিতা ছিলো। এখানে এরকম চিতা গাছের ওপর উঠে বসে থাকে। সেই সময় ওদের গায়ের রং ও নাকি গাছের রঙ এর সাথে মিলে থাকে তাই চট করে বোঝা যায় না। আমি জানতাম গিরগিটি কেবল মাত্র রং পাল্টায় কিন্তু এখানে শুনলাম চিতা ও নাকি রং পাল্টাতে পারে। আমার সঙ্গীরা শুনে তো মহা গোলযোগ বাঁধালো। আমি কেনো সেই সময়ই তাদের বলিনি তাহলে তারা আরো ভালো করে দেখতো। কিন্তু ব্যপারটা এতো দ্রুত ঘটেছে যে আমি নিজে কি দেখলাম সেটা বোঝার আগেই গাড়ি এগিয়ে গেছে।

নিমা বললো আর পেছনে ফেরা সম্ভব না। আর কি? ফিরে গেলাম লাভা তে। সেদিন বিকেল থেকে অবিশ্রান্ত বৃষ্টি শুরু হলো। হোটেলের ঘর থেকে জানলা খুলে সেই বৃষ্টি দেখছি, মেঘগুলো ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ছে, হাত দিয়ে ছোঁয়া যাচ্ছে মেঘেদের।এমন অভিজ্ঞতা আমার জীবনে এই প্রথম। কতক্ষণ এভাবে কেটেছে মনে নেই। সম্বিত ফিরলো হোটেলের একটি ছেলের কথায়। সে ঘরে এসে আমার কাণ্ড দেখে তো অবাক। সে হিন্দিতে বললো “খিড়কি বন্ধ্ কর দিজিয়ে; নেহীতো সব পানি পানি হো যায়েগা “। সত্যি তো আমার তো খেয়ালই ছিলো না মেঘ ঘরে ঢুকে তো সব ভিজিয়ে দিচ্ছে। অগত্যা জানলা বন্ধ করতে হলো। রাতের বেলা নানান রকম জীব জন্তুর ডাক শুনতে শুনতে একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম।

পরদিন সকাল এ হোটেলের একটি ছেলের ডাকে ঘুম ভাঙ্গলো। তাড়াতাড়ি দরজা খুলে বাইরে এলাম। সে বললো আগের দিন বৃষ্টি হবার কারণে আজ মেঘ মুক্ত পরিষ্কার আকাশ; তাই আজ ঘরের জানলা থেকেই কাঞ্চনজঙ্ঘা ও নথুলা দেখা যাচ্ছে। এক মুহূর্ত দেরী না করে এক ঝটকায় জানলা খুলে দিলাম। চোখ রাখলাম যতদূর পর্যন্ত আমার দৃষ্টি যায় তত দূরেই। হোটেলের সেই ছেলেটির আঙ্গুল কে অনুসরণ করে আমার ভাগ্যে দর্শন জুটলো কাঞ্চনজঙ্ঘার। অনেক দূরে অস্পষ্ট। কিন্তু তাও বোঝা যাবে বেশ ভালো ভাবেই। হয়তো ক্যামেরা বন্দী করা যাবে না সেভাবে। পাশের আরো একটি বরফ ঢাকা শৃঙ্গ দেখিয়ে ছেলেটি বললো ওইটাই হচ্ছে নাথুলা। আমি সিকিম কখনো যাই নি তাই নাথুলা সম্পর্কে আমার ধারনা ও খুব একটা স্পষ্ট না। আরো শুনলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা কে আরো কাছ থেকে উপভোগ করার জন্য নাকি রিশপ অন্যতম।

সেদিন সন্ধ্যাতেই আমাদের ফেরার ট্রেন তাই চট করে তৈরী হয়ে বেরিয়ে পড়লাম রিশপ (Rishayp) যাবো বলে। মোটামুটি গাড়িতে ৪৫ মিনিট এর মতো রাস্তা। ট্রেক করেও যাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের হাতে অত সময় না থাকায় গাড়িতেই গেলাম।লাভার থেকে আরো বেশ কিছুটা উঁচুতে এই জায়গা। লোক বসতি প্রায় নেই বললেই চলে। হোটেলও বেশ কম। রাস্তা আরো খারাপ। যাই হোক এবার কিন্তু ভাগ্য সাথ দিলো না। যে আশা নিয়ে এসেছিলাম তা জুটলো না। মেঘ এসে আবার জমাট বাঁধায় কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখা মিললেও তাকে ক্যামেরা তে ধরতে পারলাম না। প্রায় সমস্ত সকালটা ওখানে কাটিয়ে দুপুরের আগেই লাভা তে চলে এলাম। দুপুরের খাওয়া সেরে বেড়িয়ে পড়লাম ফেরার উদ্দেশ্যে।

Leave a Comment
Share