আমার ভূটান ভ্রমণ ও খরচের আদ্যোপান্ত

ভূটান যাবার ইচ্ছা আমার অনেকদিনের। অনেক দিন ধরে যাবো যাবো করেও যাওয়া হয়ে উঠছিলো না। অবশেষে কি ভেবে একদিন দুম করে সবকিছুর খোজ খবর নেওয়া শুরু করলাম একাই। প্রথমে খুজলাম দুজনের ট্রাভেল প্যাকেজ, কিন্তু সর্বনিম্ন যা পেলাম তা হল ৫ দিন ৪ রাতের জন্য এয়ার ফেয়ার/বাস ভাড়া বাদে ১৮ হাজার টাকা প্রতিজনে, অর্থাৎ ৩৬ হাজার টাকা দুজনে। তো সেই ট্রাভেল এজেন্টের অফিসে গিয়ে খবর নিলাম, তাদের আইটেনারি দেখলাম এরকমঃ প্রথম দিন আপনি বিকালে পারো পৌঁছবেন বাই এয়ার, তারা আপনাকে থিম্পু নিয়ে যাবে, সন্ধ্যা থিম্পু থাকবেন, দ্বিতীয় দিন থিম্পু ঘুরবেন। তৃতীয় দিন তারা আপনাকে পুনাখা নিয়ে যাবে, ওইদিন পুনাখা ঘুরবেন (থিম্পু থেকে পুনাখা যেতেই ৩-৪ ঘন্টা লাগে)। চতুর্থ দিন পারো নিয়ে যাবে (আবার ৩-৪ ঘন্টার যাত্রা) এবং পারো ঘুরাবে। পঞ্চম দিন সকালে হোটেল থেকে এয়ারপোর্টে ট্রান্সফার করবে। এই হল ঘোরাঘুরি! যা বুঝলাম, এর পেছনে আমি ৩৬ হাজার টাকা খরচ করব না, কারন বোঝাই যাচ্ছে রাস্তায়ই আমার সবসময় চলে যাবে, মন ভরে কিছুই দেখা যাবে না।

তারপর ট্রাভেলারস অব বাংলাদেশ গ্রুপে খোজ করা শুরু করলাম। এখানে নির্ঝর দাস ভাইয়া অনেক অনেক তথ্য দিয়ে উপকার করেছেন! তাঁর প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা।

ভারতের ট্রান্সিট ভিসার জন্য আবেদন করেই নিজেই ইন্টারনেট আর ট্রিপ এডভাইজার ঘুরে ঘুরে ভূটান ট্র্যাভেল প্ল্যান ডিজাইন করলাম, ভূটানের শহরভেদে হোটেল খোজার একটা ভালো ওয়েবসাইট আছে, ওগুলোর খবর নিলাম, ট্রিপ এডভাইজারের ফোরামগুলোর সাহায্য নিলাম, ৫-৬ দিনের মধ্যে সুন্দর একখানা আইটেনারি দাঁড়িয়ে গেল। বলে রাখি, কোন শহরে গিয়ে শুধু দর্শনীয় স্থান দেখতে আর লাক্সারী হোটেলে থাকতে আমার ভালো লাগে না। আমি যে কোন শহরে গেলে শহরের রাস্তায় হাটতে, লোকাল খাবার দোকানে খেতে, মানুষদের সাথে খুব রিলাক্সডভাবে গল্প করতে পছন্দ করি। ঠিক ওভাবেই প্ল্যানটা করলাম। প্ল্যান দাড়ালো ১০ দিনের, বাসে যাওয়া আসার ২দিন সহ। ঠিক করলাম থিম্পু, পারো, পুনাখা, হা, ফোবজিকা ঘুরব।

এস-আর শ্যামলীর শিলিগুড়ির টিকেট করলাম (ভারতের ট্রান্সিট ভিসার জন্য এই টিকেট টা ভিসা আবদেনপত্রের সাথে দেয়া লাগে), যাওয়া-আসা প্রতিজনে ৩০০০ টাকা।

৭ সেপ্টেম্বরঃ

রাত ৯টায় আমি আর আমার স্বামী শ্যামলীর কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে বাসে উঠলাম।

৮ সেপ্টেম্বরঃ

সকাল প্রায় ১০.৩০ টায় বুড়িমারি (লালমনিরহাট) পৌছালাম। বর্ডার ক্রস, ইমিগ্রেশন, কাস্টমসের কাজ সব শ্যামলী পরিবহনই সাহায্য করে। উল্লেখ্য, বর্ডার পার করবার সময় আপনার পাসপোর্টের কপি, চাকরির নো অব্জেকশন সার্টিফিকেটের কপি, পরিচয়পত্রের কপি, ডলার এন্ডর্স্মেন্টের/ ব্যাঙ্ক স্টেট্মেন্টের কপি সাথে রাখবেন। প্রায় ১২টার দিকে ভারতে প্রবেশ করেই (জায়গাটার নাম চ্যাংড়াবান্ধা) ডলার ভাঙালাম, আসলে আপনি বাংলাদেশি টাকাই নিয়ে যেতে পারেন, ডলারের চেয়ে বাংলাদেশি টাকা নেয়াই সুবিধাজনক, ভারতের বর্ডারের মানি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশি টাকা নেয় এবং ভালো রেটেই রুপি দেয়। ভূটানে ইন্ডিয়ান রুপি চলে। তাই ইন্ডিয়ান রুপি নেয়াই ভালো। চ্যাংড়াবান্ধা থেকে ট্যাক্সি নিলাম জয়গাও পর্যন্ত। আমাদের দুজনের জন্য ট্যাক্সি ১৬০০ রুপি চাচ্ছিলো। পরে আমরা একটা বিশাল বাংলাদেশি গ্রুপের দেখা পেলাম ওখানে, তারা দুটো গাড়ি ভাড়া করে, একটায় জায়গা ছিল, আমরা তাদের সাথে যুক্ত হলাম। দুজনের ৪৬০ টাকা লাগল জয়গাও যেতে, পৌছলাম ৪টার দিকে । জয়গাও ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করে, ভূটানে ঢুকে ইমিগ্রেশন অফিসে গেলাম। ভূটানের বর্ডারের এই শহরের নাম ফুনশোলিং। জয়গাও-ফুনশোলিং এর মাঝে একটি সুন্দর গেট আছে, তার মধ্য দিয়ে ভারতীয় এবং ভূটানী মানুষ ও গাড়ির অবাধ চলাচল, আর সেই গেট পেরিয়ে কয়েক কদম হাটলেই ভূটান ইমিগ্রেশন অফিস। আমরা তখনো বাংলাদেশি সেই গ্রুপের সাথেই ছিলাম, বড় গ্রুপ, তাই ইমিগ্রেশন শেষ হতে হতে সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমরা ডিনার সারলাম ইমিগ্রেশন অফিসের বিপরীতে এক রেস্টুরেন্টে। রাত ৮টার দিকে আমার দুটো গাড়ি ভাড়া করে থিম্পুর জন্য রওনা হলাম। আমার আর আআম্র স্বামীর হোটেল বুকিং দেয়া ছিল না, কিন্তু ওই গ্রুপের ছিল, আমরা ভাবলাম তাহলে ওনাদের হোটেলেই উঠব, তারা ফোনে আগেই বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। থিম্পু পৌছলাম রাত প্রায় ২টায়, এর কারন রাতে পাহাড়ী রাস্তায় কুয়াশায় খুব ধীরে ধীরে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক, ১০-১৫ কিমি/ঘন্টা গতিতে। রাতে গিয়ে হোটেলে উঠলাম, রাতের থিম্পুও কি যে সুন্দর!

সেদিনের গাড়ি খরচ ৫০০ রুপি, খাওয়া ৩০০ রুপি দুজনে মিলে।

৯ সেপ্টেম্বরঃ

আমরা ছিলাম হোটেল ডেস্টিনিতে। সকালে ওখানে নাস্তা সারলাম।তারপর নিজেরা পায়ে হেটে আসেপাশে কিছু জায়গা ঘুরলাম, বইয়ের দোকানে গেলাম, স্যুভিনির শপ দেখলাম। থিম্পুর আসে পাশে সব জায়গা ঘোরার জন্য একটা ট্যাক্সি করলাম ১৫০০ রুপিতে। পুনাখা, হা, ফোবজিকা যেতে থিম্পু থেকে পারমিট নিতে হয়। ট্যাক্সি চালকই আপনাকে সেখানে নিয়ে সব কাজ করে দিবে। ১১টার দিকে পারমিটের জন্য আপ্লাই করলে, দুপুর নাগাদ পেয়ে যাবেন। মাঝখানের সময়টা আশে পাশে ঘোরাঘুরি করতে পারেন। আমরা বুদ্ধা পয়েন্ট গেলাম, তাসি জং গেলাম, চেরি মনেস্টারি গেলাম, আর্চারি স্ট্যাডিয়াম, মেমোরিয়াল চর্টেন, ডেচেংফু লাখাং, পেন্টিং স্কুল এবং চিড়িয়াখানা গেলাম। একখানা সার্ক ট্রেড ফেয়ার হচ্ছিল, সেখানে গেলাম বাংলাদেশি দোকান দেখতে, নিজের দেশের দোকান থেকে একখানা সোয়েটারও কিনলাম 😛 । ট্রেড ফেয়ার দেখতে ভূটানী রাজকন্যা আর কুইন মাদার এসেছিলেন, তাদের ও দেখলাম, কিন্তু ছবি তোলা নিষেধ ছিল।

সেদিনের গাড়ি খরচ ১৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ১০০০ রুপি, খাওয়া ৪০০-৫০০ রুপি দুজনে মিলে।

১০ সেপ্টেম্বরঃ

একটা ট্যাক্সি ভাড়া করলাম ৬ দিনের জন্য, ২৫০০ রুপি প্রতিদিনের খরচ। কিন্তু সেই আমাদের একশহর থেকে অন্য শহর, শহরের ভেতর সাইটসিইং করাবেন। এইদিন গেলাম পুনাখায়। সকাল ৯টায় রওনা দিলাম। রাস্তায় দোচুলা পাস এ থাম্লাম, ঘুরলাম, কফি খেলাম। পুনাখা পৌছলাম ২টার দিকে। হোটেলে উঠলাম। নাম হোটেল ফিনসাম, ট্যাক্সি ড্রাইভার হোটেল ঠিক করে দিয়েছিল ১৫০০ রুপিতে। পরে বুঝলাম ওখানে পৌছে কথা বললে অনেক কমে হোটেল পাবেন। ১৫০০ রুপি অনায়াসে ৯০০-১০০০ এ নেমে আসবে। হোটেলে উঠে ফ্রেস হয়েই গেলাম রাফটিং করতে। ১১০০ রুপি খরচ পড়ল, কিন্তু দুর্দান্ত একখানা অভিজ্ঞতা! সেদিন আর তেমন ঘুরিনি, লোকালয়ে হাটাহাটি করলাম।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ১৫০০ রুপি, খাওয়া ৫০০ রুপি দুজনে মিলে।

১১ সেপ্টেম্বরঃ

রওনা দিলাম ফোবজিকার উদ্দেশ্যে। ট্রিপ এডভাইজারের মতে অসাধারন সুন্দর এই উপত্যকা। সকাল ৯টায় রওনা দিয়ে পৌছলাম দুপুর ২টায়। পথে খুব সুন্দর সুন্দর অনেকগুলো ঝর্ণা পেলাম। এই রাস্তাটা এখনো নির্মাণাধীন, তাই সবার জন্যে যাত্রা খুব আরামপ্রদ নাও হতে পারে। কিন্তু ফোব্জিকা গিয়ে আমরা রীতিমত বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম! কি যে সুন্দর বলে বোঝানো যাবে না। সেখানে গাংটে গোয়েম্পা নামক একটি উপসনালয় আছে, সেটা দেখলাম। এখানে ৪ তারা একটি হোটেল, হোটেল গাকিলিং, পেলাম যেখানে বার্ড ওয়াচাররা আসে শীতকালে ব্ল্যাকনেক ক্রেন দেখতে। হোটেলটা আমাদের গাড়িচালকের পরিচিত ছিল, ১৫০০ রুপিতে চমৎকার হোটেল পেলাম। রুমের বাইরের বারান্দা থেকে দৃশ্য যে কী সুন্দর, কী বলব! গাড়ি নিয়ে আশে পাশে ঘুরে ছবি তুললাম, নদীর পাশে অনেকক্ষণ বসে থাকলাম।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ১৫০০ রুপি, খাওয়া ৪০০ রুপি দুজনে মিলে।

১২ সেপ্টেম্বরঃ

আবার পুনাখার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। পুনাখা পৌছে ঘুরলাম পুনাখা জং, চিমি লাখাং আর পুনাখা নদীর উপর বিরাজমান বিশাল আয়রন সাসপেনশন ব্রিজ। ১০ তারিখ যে হোটেলে ছিলাম সেখানেই উঠলাম, ১০০০ টাকায় রুম পেলাম।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ১০০০ রুপি, খাওয়া ৩০০ রুপি দুজনে মিলে।

১৩ সেপ্টেম্বরঃ

পুনাখা থেকে হা ভ্যালীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ট্রিপ এডভাইজারের মাধ্যমে জানতে পারি যে আপনি চাইলে হা তে ভূটানী পরিবারের সাথে থাকতে পারেন। Haa homestay লিখে সার্চ দিলেই পাবেন।বাংলাদেশে ১৩ তারিখ ঈদ ছিল। ভাবলাম ঈদের দিনটা কোন পরিবারের সাথেই কাটাই। দুটো অপশন আছে, চিমি হোমস্টে আর উগুয়েন হোমস্টে। চিমির বাড়িতে ভ্যাক্যান্সি ছিল, আগেই মেইল করে ওখানে বুকিং করেছিলাম, অগ্রিম পয়সা দেয়া লাগে না, মেইল করে করফার্ম করলেই হয়। চিমির বাড়ি পৌছতেই চা-নাস্তার আপ্যায়ন হল। ভূটানী বাড়ি কাঠের তিনতলা। চিমির বাড়ি থেকে ৫ মিনিট হাটার দূরত্বে একটা বিশাল হেলিপ্যাড, যার পাশ ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে এক খরস্রোতা নদী। সূর্যাস্ত পর্যং ওখানেই কাটালাম। চিমির বাড়িতে ফিরে এসে গল্প করলাম, ওকে রাতের খাবার প্রস্তুতিতে সাহায্য করলাম, ওর পরিবারের সাথে আড্ডা দিতে দিতে রাতের খাবার সারলাম, চা খেলাম। আমাদের রুমটা খুব পরিষ্কার ছিমছাম ছিল। খুব ভালো লেগেছে হোমস্টে করে।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোমস্টে খরচ ১০০০ রুপি, খাওয়া ৩৫০ রুপি দুজনে মিলে।

১৪ সেপ্টেম্বরঃ

সকালে চিমির আপেল বাগান থেকে নিজ হাতে আপেল পাড়লাম, চা বিস্কুট খেলাম। চিমি এক পলিথিন ব্যাগ ভরে আপেল দিয়ে গেল রাস্তায় খাবার জন্য। পারোর উদ্দেশ্যে রওনা হলাম ১০টায়। পৌছলাম ১টায়। হোটেল ড্রাগলে উঠলাম। এখানে বাঙ্গালী খাবার পাওয়া যায়। বের হয়ে সাইটসিইং করলাম, রাতে শপিং এরিয়াতে ঘুরলাম, দেখলাম। ১৬ তারিখ পারো থেকে রওনা দিয়ে ফুনশোলিং যাবো ওদের লোকাল কোস্টার বাসে। টিকেট কাটলাম। জনপ্রতি ২৩৫ রুপি।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ৯০০ রুপি, খাওয়া ৪০০ রুপি দুজনে মিলে।

১৫ সেপ্টেম্বরঃ

ভূটানের ভেতর শেষদিন, এইদিন গেলাম টাইগার নেস্ট, তাতসাং মোনাস্টেরী। ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত উঠে আর পারছিলাম না, নেমে গেলাম। সকাল সকাল যাওয়া ভালো, একেবারে উপরে উঠতে আড়াই ঘন্টার মত লাগবে। নামতে এক ঘন্টা। ওঠার চেয়েও নামা বেশি কষ্ট মনে হয়েছে আমার। ওখান থেকে ড্রুগুয়েল গেলাম, ন্যাশনাল মিউজিয়াম, এয়ারপোর্টের বার্ডস আই ভিউ, আরও কয়েকটা জায়গা। সেদিন বিকালে গাড়ি ছেড়ে দিলাম। কোজাগরি রাতে পারোর রাস্তায় হেটে বেড়ালাম দুজন। রাতে একটা পিজ্জা শপে ২টা বিশাল পিজা খেলাম মন ভরে!খুব ভালো ছিল পিজ্জাগুলো।

সেদিনের গাড়ি খরচ ২৫০০ রুপি, হোটেল খরচ ৯০০ রুপি, খাওয়া ৮০০ রুপি দুজনে মিলে।

১৬ সেপ্টেম্বরঃ

সকালে কোস্টার বাসে ঠিক ৯টায় যাত্রা শুরু করলাম ফুনশোলিং এর দিকে। পৌছালাম ৩টায়। রাস্তায় খাবার বিরতি ছিল। ফুলশোলিং এসে ইমিগ্রেশন শেষ করে জয়গাও আসলাম। জয়গাও এ হোটেল কস্তুরিতে উঠলাম, খুব ভালো হোটেল। ইমিগ্রেশনের কাজ সারলাম। দুজন মিলে বিভিন্ন দোকান ঘুরলাম, স্ট্রিট ফুড খেলাম।

সেদিনের গাড়ি খরচ ৪৭০ রুপি, হোটেল খরচ ৯০০ রুপি, খাওয়া ৩০০ রুপি দুজনে মিলে।

১৭ সেপ্টেম্বরঃ

হোটেলের সামনে থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করলাম, ১৪০০ টাকায় এসি গাড়িতে চ্যাংড়াবান্ধা আসলাম। বর্ডার থেকে টুকটাক চকলেট কিনলাম। সীমানা পেড়লাম, সব কাজ শ্যামলীই করে দিল। সন্ধ্যা ৬টায় বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম।

স্বপ্নের মত ক’টা দিন গেল! আমার ভূটানি খাবার ভালো লেগেছে খুব, আমরা মোমো আর এমাদাসি (ভূটানি মরিচ আর চিজের তরকারি)খেয়েই দিব্যি ছিলাম। আর সত্যি বলতে আমরা বেশ আয়েশেই ছিলাম। ভালো হোটেলেই থেকেছি, মন ভরে ঘুরেছি। কিন্তু পুরো খরচ ভারতীয় ভিসা ফি ৬০০টাকা আর শ্যাম্লীর টিকেটসহ দাঁড়ালো ৪১৩০৪ টাকা। প্রায় ৪৫০০০টাকাই ধরি। তার মানে জনপ্রতি আসা যাওয়া সহ ১০দিনের খরচ ছিল প্রায় ২২৫০০ টাকা। যেখানে ট্রাভেল প্যাকেজে ৩দিনে ১-২ শ্তার হোটেলে থাকার জন্য যাওয়া আসা বাদে জনপ্রতি ১৮০০০টাকা দেয়া লাগত! যথাসম্ভব বিস্তারিত দেয়ার চেষ্টা করলাম। বড় গ্রুপ হলে খরচ আরো কমবে। শপিং করলে ভারত থেকে করাই ভালো।

ভূটানের গাড়িচালক, ফোবজিকা আর পুনাখার হোটেলের ঠিকানা আর পারোর পিজ্জার দোকানের ঠিকানা ছবিতে দিলাম।

পারো আর থিম্পুতে হোটেল গেলেই পেয়ে যাবেন!

Leave a Comment
Share