পারো

থিম্পু থেকে একঘন্টার দূরত্বে ৭,৫০০ ফুট উচ্চতায় পারো নদীর কোল ঘিরে পারো উপত্যকা। পারো জুড়ে আছে নানারকম গল্পকথা। তাছাড়া এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও ভোলার মত নয়। বিশেষ করে বসন্ত ঋতুতে পারোর রুপ হয়ে ওঠে অতুলনীয় এবং দর্শন সুখকর। পারোতে দেখতে পাবেন পারো জং, ন্যাশনাল মিউজিয়াম। তবে পারোর সবথেকে বড় আকর্ষণ টাইগার্স নেষ্ট। এই মনাষ্ট্রি পারো থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে একটি ক্লিফের উপর অবস্থিত। হেঁটে ওঠার পথটিও খুব সুন্দর। ভূটান ট্যুরিজম দর্শনার্থীদের গলা ভেজাতে এখানে একটি সুন্দর কফি হাউজ তৈরি করে দিয়েছে।

পারো শহরের আশপাশে বেশ কয়েকটি দ্রষ্টব্য স্থান পেয়েছে। এখানের রিমপু জংটি আগের জংগুলির মতো অত বড় না হলেও ঘুরে দেখতে বেশ ভালো লাগে। কিছুটা ওপরে উঠে পারো মিউজিয়াম। একসময়ের তাজং দুর্গটিই বর্তমানে জাতীয় মিউজিয়াম। মিউজিয়ামের ডাকটিকিট ও প্রাচীন মুদ্রার সংগ্রহ বেশ চমকপ্রদ। এখান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে তিব্বত সীমান্তে ড্রুকগিয়াল জং দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। দুর্গ থেকে নেমে পৌঁছতে হবে কিচু মনাস্ট্রি। মনাস্ট্রির ভিতরের কমলালেবুর গাছগুলিতে সারাবছরই ফল ধরে। মনাস্ট্রির মূল কক্ষে গুরু পদ্মসম্ভবের বিশালকায় একটি মূর্তি আছে। হাতে সময় থাকলে ট্রেক করে আসা যায় পাহাড়ের মাথায় তাকসাং গুম্ফা থেকে – কষ্টসাধ্য পথের জন্য এই গুম্ফার প্রচলিত নাম –‘বাঘের বাসা’ –‘টাইগার’স নেস্ট’! পারোতে রবিবারে থাকলে সাপ্তাহিক বাজারটি ঘুরে দেখতেও ভালোলাগবে। আবহাওয়া ভাল থাকলে পারোর পথে চলতে ফিরতে চোখে পড়বে ভুটান ও তিব্বতের বাসিন্দাদের কাছে অতি পবিত্র পর্বতমালা ‘চোমো লহরি’ (২৪,০৩৫ ফুট) – পারো থেকেই ট্রেক পথ গিয়েছে ‘ভোন্টে লা’ –চোমো লহরি বেস ক্যাম্পে।

কখন যাবেন

ভুটান যাবার সবথেকে ভালো সময় হলো বছরের অক্টোবর এবং নভেম্বর মাস। কারণ এ সময়টায় আকাশ পরিস্কার থাকে এবং পাহাড়,নদী,বনাঞ্চল বেশ ভালো পরিস্কার দেখা যায়। পাশাপাশি আবহাওয়াও ভালো থাকে এবং এই সময়টাতেই ভুটানের অধিকাংশ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

কীভাবে যাবেন

সড়কপথে গেলে ভুটানের এন্ট্রিপয়েন্ট তিনটি – সামদ্রুপ জোংখার (দক্ষিণ-পূর্ব ভুটান), গেলেফু (দক্ষিণ ভুটান) ও ফুন্টশোলিং (দক্ষিণ-পশ্চিম ভুটান)। সাধারণভাবে সড়কপথে গেলে ফুন্টশোলিং হয়ে যাওয়াই সুবিধাজনক। ট্রেনে নিউজলপাইগুড়ি অথবা আলিপুরদুয়ার পৌঁছতে হবে। স্থানীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস বা ভাড়া গাড়িতে ফুন্টশোলিং পৌঁছান যাবে। ফুন্টশোলিং থেকে আবার বাসে বা ভাড়ার গাড়িতে থিম্পু বা পারো যাওয়া যায়।

একমাত্র বিমানবন্দরটি এই পারো (Paro) শহরে। ঢাকা থেকে ড্রুক বিমানে করে পারো ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে চলে যান।

কোথায় থাকবেন

৮০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকার মধ্যে রয়েছে হোটেল পেলজরলিং (০০৯৭৫-৮-২৮১৩৫৬), সামদুপ সোলিং, জামলিং (২৭৩০২), পেমলিং, পারলে কটেজ, জুরমি দরজি (২৭২১৪০)। ১২০০-১৫০০ টাকা ভাড়ার হোটেলগুলোর মধ্যে রয়েছে পাহাড়ের মাথায় ম্যান্ডোলোর মধ্যে রয়েছে ম্যানেডেলা রিসর্ট (২৭১৯৯৭, ২৪২৪৭৯, ২৭২৪৮০০, হোটেল জোর ইয়াংজ (২৭১৭৪৭), কিচু রিসর্ট (২৯১৩৫), টাইগার সেন ট রিসর্ট (৭১৩৯১), ওথালাং (২৯১১৫), হোটেল ড্রুক (২৯১২০)।

এখান থেকে পারো তে থাকার হোটেল গুলো সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন

খাওয়া দাওয়া

এখানে নিরামিষ খাবারের প্রচলন বেশি। ডর্টসি বা গরুর দুধের পনির এবং এমা ডর্টসি বা গলানো পনিরে রান্না করা লাল মরিচ এখানকার অত্যন্ত পছন্দের খাবার।

কেনাকাটা

দর্শনীয় স্থানের মত এখানে কেনাকাটার স্থানেরও অভাব নেই। হ্যান্ডিক্রাফট এম্পোরিয়াম থেকে বিভিন্ন স্যুভেনির কিনতে পারেন। মাস্ক,প্রেয়ার হুইল,ডেকোরেটিভ মোটিভ,সিল্ক এবং উলের জামাকাপড় এখানকার ঐতিহ্যের অংশ।

সতর্কতাঃ সারা ভুটানেই ধূমপান একেবারে নিষিদ্ধ।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ bhutanparo