আমার ট্যুরটা ছিলো মাত্র ১৭ দিনের। এই কদিনে আমি ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে শিমলা হয়ে মানালি হয়ে লেহ গিয়েছি। লেহতে বেশ কিছুদিন থাকতে হয়েছে সবকিছু কভার করতে যেয়ে। এরপর লেহ থেকে শ্রীনগর হয়ে জাম্মু হয়ে ফিরেছি। এই ১৭ দিনের মহারণ ট্যুর শেষ করে এসে বিস্তারিত আলোচনা করছি৷
নন এসিঃ ৯০০-১০০০(রয়েল,দেশ, শ্যামলী,সৌদিয়া)
এসিঃ ১৫০০-১৭০০(রয়েল,দেশ,শ্যামলী,সৌদিয়া,গ্রীনলাইন-সৌহার্দ্য)
তবে বর্তমান সময়ে ফেরিতে যেই সময় ব্যায় করতে হয় আমার মতে ফ্রেন্ড গ্রুপ হলে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বেনাপোল গেলে অনেক সময় বেচে যাবে৷
নোটঃ শুধুমাত্র গ্রীনলাইন-সৌহার্দ্য বাস সরাসরি কলকাতা পর্যন্ত যেতে পারে৷
কলকাতা শহরে ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা দামের ও হোটেল আছে৷ যদি ফ্লাইট থাকে তাহলে দমদম এরিয়া তে হোটেল নিবেন, আর যদি ট্রেন থাকে তাহলে হাওড়ার আশে পাশে কোনো হোটেলে উঠবেন৷ কলকাতা শহরটা অনেক আধুনিক, চারপাশে সব আধুনিক স্থাপনা৷ প্রথমবার কলকাতা গেলে অনেকে ফ্লাইওভারের শহর ও বলতে পারেন!
কলকাতা শহরে আমি ছিলাম দমদম এরিয়াতে, খাবারটা সেরকম ভাবে টেস্ট করতে পারিনি৷ তবে পুরো ভারতেই খাবারে তাদের নিজস্ব মসলা ব্যাবহার করায় আমাদের কাছে তা খারাপই লাগবে৷
বাই এয়ার এ ২৭০০-৭০০০ রুপী পর্যন্ত হয়, যাওয়ার ডেট এর যত আগে কাটবেন তত কমে পাবেন৷ বাই ট্রেনে গেলে কালকা চলে যাওয়াই ভালো৷ হাওড়া থেকে কালকা পর্যন্ত কালকা মেইল এ করে যাওয়া যায়৷ ৩৬ ঘন্টা সময় নেয় ট্রেইনটি৷
স্লিপিং থেকে ফার্স্ট টায়ার এর তারতম্য
৭০০-১৮০০-৩০০০-৪৫০০ রুপী। কালকা মেইলের টিকেট কাটলে সাথে সাথে কালকা-শিমলা টয় ট্রেন ও এটাচড করে দিবে আপনি চাইলে৷
টয় ট্রেনের ভাড়াঃ শিবালিক ডিলাক্স – ২৫০-৪০০ রুপী
শিমলা শহরে ১০০০-৬০০০ টাকায় ভালো মানের হোটেল পাওয়া যায়৷ শিমলা তে খাবার এর দাম ১২০-২০০ রুপী পর্যন্ত৷ বিখ্যাত ম্যাল রোড, দা রিজ চার্চ শহরের উপরাংশে যা হেটেই যাওয়া যায়৷ শিমলা থেকে কুফরী, ফাগু যেতে হলে একটি জ্বীপ ভাড়া করে নিতে হবে৷ ৪ জনের মারুতী হলে ২০০০-২৫০০ আর ৮ জনের স্করপিয়ো হলে ৩০০০-৫০০০।
কুফরীতে ঘোড়ার খরচঃ (বাধ্যতামূলক)
কেন বাধ্যতামূলক? কুফরী থেকে কুফরীর এডভেন্চার পয়েন্ট পর্যন্ত যেই রাস্তা তা একটি সিন্ডিকেট৷ রাস্তাটা মানুষের অনুপযোগী করে সৃষ্টি করা হয়েছে৷ ঘোড়া বারগেইন করার উপর ৩০০-১০০০ রুপী পর্যন্ত৷
কুফরী তে এডভেন্চার করতে চাইলেঃ
জীপলাইন, ভ্যালি ক্রসিং, ব্যালেন্স রোপ, ক্লাইম্বিং রোপ ইত্যাদি৷ ৬০০-১৭০০ রুপী পর্যন্ত, আপনার বারগেইন করার উপর ডিপেন্ড করে৷
শিমলা নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রতি রাতে মানালীর উদ্দেশ্যে এসি বাস ছেড়ে যায়৷ ভাড়া ৬০০-৯০০ রুপী৷ আর জীপে বা গাড়ি ভাড়া করে যেতে চাইলে শিমলা-মানালী ৪ সিটের মারুতী ৪০০০-৬০০০ রুপী৷ ৮ সিটের স্করপিয়ো ৬০০০-৮০০০ রুপী, আমরা একটি স্করপিয়ো নিয়েছিলাম৷
কুল্লুতে এডভেন্চার
কুল্লুতে পৌছানোর আগে মান্ডি নামক জায়গায় বিয়াস নদীতে হয় রাফটিং করা যায় যা মানালী থেকে শ্রেয়৷
রাফটিং খরচঃ ৬ কিলো ৫০০-৮০০ রুপী এবং ১০ কিলো ৮০০-১২০০ রুপী।
রাফটিং রেটিংঃ ২+
প্যারাগ্লাইডিং খরচঃ ৬০০০ ফিট থেকে ১৮০০-৩৫০০ রুপী এবং ৩০০০ ফিট থেকে ১৫০০-৩০০০ রুপী।
মানালী শহরে ১০০০-১৫০০০ রুপী এর মধ্যে ভালো মানের হোটেল পাবেন, তবে থাকার জন্যে ওল্ড মানালী অত্যাধিক সুন্দর৷ মানালী শহরে খাবার ১২০-২০০ রুপী তে ভালো পাবেন৷ মানালীতে ঘুরার মতো রোহতাং পাস, হাদিম্বা টেম্পল, সোলাং ভ্যালি আছে৷ এগুলো ঘুরতে হলে ৪ সিটের মারুতী ১৮০০-২৫০০ রুপী এবং ৮ সিটের স্করপিয়ো ৩০০০-৪৫০০ রুপী নিবে।
সোলাং ভ্যালিতে এডভেন্চারঃ প্যারাগ্লাইডিং ২৭০০ ফিট থেকে ১৭০০- ২৫০০ রুপী নিবে।
কেনাকাটা করার জন্য মানালী শহর এর ম্যাল রোড ভালো৷
মানালী-লেহ এর ৪৭৪ কিলোমিটার রাস্তা মে এর দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে অক্টোবর এর প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত খোলা থাকে৷ এই সময়ে প্রতিদিন দুই ধরনের বাস চলে৷
বাস ছাড়ে প্রতিদিন সকাল ১১ টায় মানালী থেকে, পরদিন কেলং থেকে ছাড়ে সকাল ৪ টায়৷ এছাড়াও শেয়ার ট্যাক্সি করে যেতে পারেন যা ১৫০০-২৫০০ রুপী৷ রিজার্ভ জ্বীপ নিলে ৪ সিটের মারুতী ৭০০০-১২০০০ রুপী, ৮ সিটের স্করপিয়ো ৯৫০০-১৫০০০ রুপী এবং ১২ সিটের টেম্পু ট্রাভেলার ১৫০০০-২৪০০০ রুপী।
মানালী-লেহ পথের যেকোনো গ্রামে হোমস্টে আছে, থাকতে চাইলে খরচ হবে ২০০-৩০০ রুপী করে প্রতিরাত৷
লেহ তে হোস্টেলাবি লেহ নামক একটি হোটেল আছে যা ডরমিটরি হলেও আমি বলবো প্রতিটি সোল ট্রাভেলার এর বেজ ক্যাম্প 🙂 হোটেলটিতে প্রতিজন ব্রেকফাস্ট সহ ৩০০ রুপী। এছাড়াও ৬০০-১২০০ তে অনেক ভালো রুম পেয়ে যাবেন শহরে৷
প্রথম দিনঃ লেহ-খারদুংলা-ডিস্কিট-হুন্ডার-টুরটুক
দ্বিতীয় দিনঃ টুরটুক-শিয়ক ভ্যালি-পাংগং লেক
তৃতীয় দিনঃ পাংগং লেক-চাং লা পাস- কিয়োগার লেক
চতুর্থ দিনঃ কিয়োগার-সো মোরিরি-লেহ
খরচ – এই রুট টাতে ঘুরতে ৭- সিটের গাড়ীতে
ইনোবাঃ ৩০০০০ রুপী- ৩৫০০০ রুপী
জাইলোঃ ঐ
কোয়ালিসঃ ২৫০০০-২৮০০০ রুপী
শেয়ার ট্যাক্সিতে করে ঘুরতে চাইলে আপনার প্লাটফর্ম হওয়া উচিত সেই হোস্টেলাবি লেহ, সেখানে কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যেতে পারে৷
খাবার
লেহতে খাবারের মান সাদাসিধে, কিছু মুসলিম হোটেল আছে লেহ হসপিটাল গলিতে৷ মোটামুটি ১৫০-২০০ রুপীতে একবেলা খাবার ভালো মতো হবে৷
বাসঃ ১০২০ টাকা করে (রাস্তা খোলা থাকাকালীন সময়ে রোজ দুপুর ২ টায় ছেড়ে যায়, পরদিন সকালে গিয়ে শ্রীনগর পৌছায়)৷
ইনোবাঃ ৯০০০-১৫০০০ রুপী।
জাইলোঃ ঐ
কোয়ালিসঃ ৭০০০-১০০০০ রুপী।
শ্রীনগর এ হোটেলে থাকতে চাইলে বেস্ট যায়গা হবে খ্যায়াম চক৷ এটা বলতে গেলে বাংলাদেশের পুরান ঢাকা!! খাবারের গলি, বিখ্যাত বিখ্যাত সব রেস্টুরেন্ট এখানে৷ তার মধ্যে একটি হলো দিল্লি দরবার (দুইটা আছে, পুরোনো টাতে) এর চিকেন চাংগাজী ও রুমালি রুটি অবশ্যই টেস্ট করে দেখবেন৷
এখানে ১০০০ রুপীতে মোটামুটি ৪ জনের ভালো রুম পেয়ে যাবেন৷
রেফারেন্সঃ হোটেল ফ্যাবুলাস কাষ্মীর ( হোটেলের সুবিধা নিজস্ব রেন্ট এ কার, যা অন্য সবখান থেকে রেট কম)
প্রথম দিনঃ শ্রীনগর- সোনামার্গ- সিটি ট্যুর
দ্বিতীয় দিনঃ শ্রীনগর- পেহেলগাম
তৃতীয় দিনঃ গুলমার্গ
খরচ
৭ সিটের ইনোবা/ ট্রাভেরাঃ ৭০০০-৯০০০ রুপী
৪ সিটের মারুতীঃ ৫০০০-৭০০০ রুপী।
এখানে একটু ট্রিক খাটাবেন, নাহয় ১৪ ঘন্টায়ও পৌছাতে পারবেন না৷ কারন রাস্তায় ৪৭ কিলোমিটার একটি টানেলের কাজ চলছে৷ শ্রীনগর এর নওগাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকাল ৭ঃ৩০ টায় বানিহাল এর ট্রেন ধরবেন (ভাড়া ২০ রুপী)৷ ১ ঘন্টা ২০ মিনিট পর পৌছাবেন৷
জানতে চান কতটুকু রাস্তা পেরিয়েছেন? ১০০ কিলোমিটার যা বাই রোডে পার করতে ৮ ঘন্টা লাগবে৷
টেম্পু ট্রাভেলার: ৪০০ রুপী
সরকারী বাসঃ ১৯৫ রুপী
বানিহাল থেকে ৬ ঘন্টায় পৌছিয়ে যাবেন জাম্মু৷
সহজ করে দিচ্ছি। বাই রোড+ ট্রেনঃ একজনের ২৫০০০ রুপী-২৮০০০ রুপী এবং বাই রোড+ ট্রেন+ এক্টিভিটিজঃ একজনের ৩২০০০ রুপী-৩৫০০০ রুপী
World Top Passes
Data Based: SRTM
Leave a Comment