ভেলোরে চিকিৎসা করতে দেশ ও বিদেশ থেকে বহু মানুষ সারাবছর এসে থাকেন। CMC vellore, ভারতবর্ষের চিকিৎসা ক্ষেত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। এই পোস্টে ছোট্ট করে চিকিৎসা ও ভেলোর জেলার দ্রষ্টব্য স্থান গুলি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভাগ করতে এলাম।
১. অনলাইনে বুকিং করুন পেশেন্ট এর যাবতীয় ডিটেলস দিয়ে, ও রোগের বিবরণ অনুযায়ী ডাক্তার ও এপয়েন্টমেন্ট স্লট বুক করুন। লিংকটি দিয়ে দিলাম – https://clin.cmcvellore.ac.in/webapt/CMC/Login
মনে রাখবেন ৩/৪ মাস আগে থেকে বুকিং করা ভালো না হলে বুকিং পাবেন না।
২. হসপিটালে গিয়ে প্রথমে চলে যান ISSC building এ। সেখানে গিয়ে আপনার অনলাইন বুকিং এর স্লিপটি দেখালে একটি atm card এই মতন ছোট্ট patient card পাবেন। এই কার্ডটা দ্বারা আগামী দিনে যাবতীয় চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।
৩. কোথায় ডাক্তার দেখবেন, কত নম্বর রুমে যেতে হবে সেসব তথ্য লেখা থাকবে অনলাইন বুকিং স্লিপে। সেই স্লিপ টি যে কোনো security guard কে দেখলেই তারা বুঝিয়ে দেবে কোন বিল্ডিং এ যেতে হবে। (গোটা হাসপাতাল চত্বর জুড়ে অসংখ্য security guard আছে, আর প্রত্যেকে ভীষণ ভাবে সাহায্য করেন)
৪. ডাক্তার দেখিয়ে যে টেস্ট করতে হবে সেটা ডাক্তার লিখে দেবে, নির্ধারিত MRO counter এ (টাকা জমা করবার counter যা প্রত্যেক ডাক্তার এর চেম্বার এই বাইরেই পাবেন) টাকা জমা দিলে ওরা কোন রুমে কখন টেস্ট হবে যাবতীয় লিখে স্লিপ দেবে সেই অনুযায়ী টেস্ট করাতে হবে। ওষুধ নেয়ার ক্ষেত্রেও এক ই ব্যাপার, সংলগ্ন MRO counter এ taka জমা দিয়ে ওষুধ নিয়ে হবে।
৫. ভেলোর ছাড়াও CMC আরো একটি ক্যাম্পাস আছে পাশের জেলা রানীপেতে। অনলাইনে বুকিং এর সময় যদি আপনার নির্ধারিত রোগের ডিপার্টমেন্ট রানীপেতে হয় তাহলে প্রথমে চলে আসুন CMC গেটের কাছে। সেখানে সারাদিন ধরে বিনামূল্যে বাস যায় রানীপেতে। চিকিৎসা করিয়ে অনায়াসে ফিরে আসুন ভেলোরে।
চিকিৎসা পর্ব মিটে গেলে চলুন ভেলোর জেলাটি আশেপাশে ঘুরে নেওয়া যাক। কি কি দেখবেন পর পর দিয়ে দিলাম।
১. ভেলোর ফোর্ট – ১৪শ শতকে তৈরী এই ঐতিহাসিক দুর্গটি CMC থেকে মাত্র ১ km দূরে। চারিদিকে পরিখা ঘেরা সুন্দর দুর্গটির উপর থেকে ভেলোর শহরটির দারুন ভিউ পাওয়া যায়।
২. Archeological museum – ফোর্ট এর ভিতরেই আছে museum, ৫ টাকা জনপ্রতি টিকিট, খোলা থাকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। বিজয়নগর সাম্রাজ্যের বহু ঐতিহাসিক স্থাপত্য এখানে দেখা যায়।
৩. জ্বালাকান্টেশ্বর মন্দির – অপরূপ কারুকার্য ভরা মহাদেব এর এই প্রাচীন মন্দিরটা ফোর্ট এর মধ্যেই অবস্থিত।
৪. পালামোথি মুরুগণ মন্দির – ফোর্ট এই বাইরে থেকে ২৫০/৩০০ টাকার বিনিময়ে একটি অটো বুক চলে আসুন পালামোথি। ছোট্ট টিলা পাহাড়ের কোলে অবস্থিত একদম অফবিট এই মুরুগণ অর্থাৎ কার্তিকের মন্দিরটি ঘুরতে দারুন লাগবে।
৫. শ্রীপুরাম স্বর্ণ মন্দির- পালামোথি ঘুরে চলে আসুন কিছুটা দূরে স্বর্ণ মন্দিরে। অনেকটা জায়গা জুড়ে বিশাল নারায়ন মন্দির। ছবি তোলার নিয়ম নেই। ভীষণ সুন্দর মন্দির, সোনার পাতে মোড়া।
৬. বালামুরুগণ মন্দির রত্নগিড়ি- এই মন্দিরটি রানীপেতে অবস্থিত। ভেলোর থেকে ১৫ km মতন তাই অটোতে আলাদা করে ৫০০ টাকা নেবে। রত্নগিরি নামক পাহাড়ের উপর তৈরী কার্তিকের মন্দির। সংলগ্ন একটি পুষ্করিনি ও দেখার মতন।
চিকিৎসার পাশাপাশি সময় থাকলে ভ্রমন করে নিন ভেলোর জেলাটি। দুই দিনেই সব ঘোরা হয়ে যাবে। ভেলোরে থাকার জন্য প্রচুর হোটেল আছে। হোটেলে রান্নার সরঞ্জাম ভাড়া পাওয়া যায়। পাশেই বাজারে সব কিছু কিনতে পাওয়া যায় এবং আশেপাশের সবাই হিন্দি ও বাংলা বুঝতে ও বলতে পারে। তাই আগে থেকে বুকিং এই কোনো দরকার ই নেই। তবুও আমরা যে হোটেলে ছিলাম তার ডিটেলস দিয়ে দিলাম।
Hotel vishnu annex – 9626391010, Non ac 800, ac 1000
Leave a Comment