সুনির্দিষ্ট প্ল্যান এবং গুগল ম্যাপের সঠিক ব্যবহার জানলে যে কোন ট্যুরে সময় এবং খরচ দুটোই সেভ করা সম্ভব। পতেঙ্গা সী বিচ আগেই ঘুরেছি তাই আমি পুরাতন মন্দির, মসজিদ, নগরে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়, শহীদ মিনার এসব স্থানে গিয়েছিলাম।
এটি পাহাড়তলিতে অবস্থিত অনেক পুরাতন একটি আশ্রম। পাহাড়ের উপরে অবস্থিত এই আশ্রমের সৌন্দর্য যে কাউকে অবাক করবে। এ.কে খান মোড় থেকে জিইসির দিকে ৮০০ মিটার গেলে হাতের বামে একটি রাস্তা।প্রায় দশ মিনিট হাঁটলে একটি রেলক্রসিং।রেলক্রসিং পার হলেই কৈবল্যধাম রাম ঠাকুর আশ্রম।
কৈবল্যধাম রাম ঠাকুর আশ্রম থেকে বেড়িয়ে প্রধান সড়কে এসে লেগুনায় করে জিইসি আসি। তারপর হেঁটে হেঁটে লালখান বাজার হয়ে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমীর রাস্তায়। এই রাস্তা ধরে সামনে গেলেই বাদশা মিয়া রোড। রোডের মাথা হতে ভেতরে ৫০ মিটার গেলেই ওয়ার সিমেট্রি। জিইসি থেকে প্রায় ১৫/২০ মিনিট হাঁটা পথ। রিকশায় ২৫/৩০ টাকা নিবে ওয়ার সিমেট্রি। ২য় বিশ্ব যুদ্ধে নিহত বেশ কিছু সৈন্যদের সমাধি রয়েছে এখানে।
খোলা থাকে: সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
ওয়ার সিমেট্রি থেকে বেড় হয়ে সামনের দিকে ১ মিনিট হাঁটলেই ফাইন আর্ট ইন্সটিটিউট। অবশ্যই ইন্সটিটিউটের ভেতর হৈচৈ করা হতে বিরত থাকবেন এবং অনুমতি ক্রমে সব ডিপার্টমেন্ট ঘুরে দেখুন। আমি ক্লাস রুমে থাকা ভাইয়া আপুদের কাছ থেকে অনুমিত ক্রমে সব ঘুরেছিলাম। Sculpture Department এ সব থেকে বেশি সময় দিয়েছিলাম।
ফাইন আর্ট থেকে বেড়িয়ে রিকশায় ৩০ টাকা। আমি অবশ্য এখানে এসেছিলাম আড়ং থেকে শপিং এর জন্য। আপনারা এই সময়ে হযরত বাইজিদ বোস্তামি রহঃ এর মাজারে যেতে পারেন।
বিমান এয়ারলাইন্স থেকে বেড়িয়ে একটু সামনে আসলে টেম্পো স্ট্যান্ড। পাঁচ টাকা থেকে দশ টাকা নিবে চকবাজার। যেখানে নামিয়ে দিবে তার পাশেই অলি খা মসজিদ। ৬ গম্বুজ বিশিষ্ট একটি পুরাতন মসজিদ।
অনেকে এই মসজিদ কে চন্দনপুরা মসজিদ বলে থাকলেও এর নাম মসজিদে সিরাজউদ্দৌলা। তবে রিকশাচালক কে চন্দনপুরা বললে সহজে চিনবে। অলি খা মসজিদ থেকে রিকশায় ২৫ থেকে ৩০ টাকা নিবে এই মসজিদ পর্যন্ত। এটি সিরাজউদ্দৌলার শাসনকালে তৈরী মসজিদ, যার সৌন্দর্য এবং কারুকাজ কারিগরদের নৈপুন্যতার কথা মনে করিয়ে দিবে।
মসজিদে সিরাজউদ্দৌলা থেকে চেরাগি পাহাড় রিকশায় ২৫ টাকা। পাহাড়ে ঢোকার পূর্ব রাস্তায় সুন্দর একটি টাওয়ার দেখতে পাবেন।আর সেই সাথে অনেক ফুলের দোকান। পাহাড়ের উপরে আড্ডা দেওয়ার মত প্লেস। বসে বিশ্রাম নিতে পারেন। চা,ফুচকা পাবেন এখানে।
মসজিদে সিরাজউদ্দৌলা থেকে বেড় হবার সময় ঘরিতে সময় ছিলো দুপুর ২টা। তাই সেখানেই দুপুরের খাবার সেরে ফেলেছিলাম।মসজিদ থেকে একটু সামনে ABC Restaurant। খাবার ভালো ছিলো।
চেরাগি পাহাড়ের সাথেই রাস্তার পাশে বৌদ্ধ বিহার।বৌদ্ধ ধর্মীয় অনেক কিছুই রয়েছে দেখা ও জানার জন্য।
বৌদ্ধ মন্দির থেকে বামে প্রায় দশ মিনিট হাঁটলে চট্টগ্রাম শহীদ মিনার। অনেক সুন্দর একটি স্থান। আর ভালো বিষয় হলো শহীদ মিনারটি পাহাড়ের উপরে। যদিও শহীদ মিনারটিকে স্মৃতি স্তম্ভ বলাই ভালো।
শহীদ মিনার থেকে রিকশায় দশ টাকা পথ নিউমার্কেট। নিউমার্কেট থেকে লেগুনায় করে সরাসরি বাটালি পাহাড়ের মুখে যেতে পারবেন।বাসে গেলে আপনাকে টাইগারপাস নামতে হবে এবং একটি রিকশায় দশ টাকা দিয়ে বাটালি পাহাড়। নিউ মার্কেট থেকে লেগুনায় দশ টাকা/বাসে পাঁচ টাকা।
এই পাহাড় থেকে আপনি চট্টগ্রাম শহরের একাংশ দেখতে পাবেন। অনেক সিড়ি বেয়ে পাহাড়ে উঠতে হয় তাই অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করুন। পাহাড়ের উপরে বসার মত দৃষ্টিনন্দন জায়গা রয়েছে। পাশেই চট্টগ্রাম ডিআইজির বাংলো। নিচে নামার সময় সিড়ির বদলে রাস্তা ব্যবহার করুন। রাস্তা খুবই প্যাঁচানো, পুরোপুরি দার্জিলিং স্টাইল।
খাবার: ২১০ টাকা
বাস-রিকশা-লেগুনা:২০০(প্রায়)
যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। ধর্মীয় স্থানে আপত্তিকর আচারণ হতে বিরতি থাকি। ধর্মীয় স্থান ও শহীদ মিনারে জুতা পায়ে উঠার বিষয়ে সতর্ক থাকি (অর্থাৎ যেখানে নিষেধ সেখানে জুতা পায়ে উঠবো না)।
ধন্যবাদ
Leave a Comment