ভ্রমণপিপাসুদের কাছে লাদাখ (Ladakh) হলো এক স্বপ্ন। আমাদের দুজনের স্বপ্ন ছিল লাদাখ ভ্রমণের। পূজার ছুটিকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ১২ দিন হাতে নিয়ে প্ল্যান করে দুজন বেরিয়ে পড়লাম লাদাখ ভ্রমণের উদ্দেশ্যে। আজ লাদাখ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমি শেয়ার করব। ২রা অক্টোবর কোলকাতা থেকে রাতের ফ্লাইটে দিল্লী হয়ে আমারা শ্রীনগর পৌছালাম পরের দিন দুপুরে। সেদিন ডাল লেক দেখে হোটেলে স্টে করি। পরের দিন সকালে শ্রীনগর থেকে বেরিয়ে পথের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আমরা সোনমার্গ পৌছালাম। সোনমার্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে আমরা জোজিলা পাস, নামিকলা এবং ফটুলা পাস ক্রস করে সেদিন লামায়ুরুতে স্টে করি।সোনমার্গ থেকে লেহ র দিকে যেতে পাহাড়ের বৈচিত্র্য দেখা যায়, পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে আলাদা আলাদা রূপ, রঙ, সৌন্দর্য। সব পাহাড় রুক্ষ, শুষ্ক, সবুজবর্জিত।পাহাড়ের এত রং এত বৈচিত্র্য সেটা লাদাখ না গেলে জানতে পারতাম না। কিছু জায়গা বাদে বাকি রাস্তা খুব ভালো। একদিকে বৈচিত্র্যময় পাহাড় আর অন্য দিকে রাস্তার পাশ দিয়ে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী। সত্যি মনে হচ্ছিল যেনো স্বর্গ।
প্রথম দিন
ব্রেকফাস্ট করে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়লাম লামায়ুরু থেকে লেহ লোকাল সাইট সিনের উদ্দেশ্যে। যে গুলো দেখেছি- Lamayuru Monestery, Lamayuru Moon Land, Pathar Sahib গুরুদ্বার, Mangnectic হিল, Confluence of Indus & Zanskar এবং Hall of fame দেখে লেহ হোটেলে স্টে করি।
দ্বিতীয় দিন
ব্রেকফাস্ট করে সকাল ৯ টায় বেরোলাম KhardungLa হয়ে Nubra Valley র উদেশ্যে। লেহ থেকে নুব্রা ভ্যালি দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার।World 2nd highest motorable রোড, যার উচ্চতা ১৭৯৮২ ফুট। লেহ থেকে খারদুংলা এর দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার। খারদুংলা যাওয়ার সময় উপরি পাওনা হিসেবে একরাশ বরফ পেলাম।আমদের জার্নির প্রথম বরফ আমরা খারদুংলা পাসে পাই। বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে গরম কফি পান করতে করতে আমরা এগিয়ে চললাম। Shyok নদীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আমরা পৌছালাম হুন্ডার ভ্যালিতে double humped camel দেখতে। কিছুটা সময় কাটিয়ে আমরা হুন্ডার হোমস্টেতে যাই।
তৃতীয় দিন
আমরা এই দিন তুরতুক, তেয়্যাকসি, থাঙ গ্রাম দেখতে যাই। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যৈ পরিপূর্ণ ছোটো গ্রামগুলো। থাঙ হলো ভারতের শেষ গ্রাম, তারপর থেকে শুরু পাকিস্তানের সীমানা।
চতুর্থ দিন
হোটেল থেকে ব্রেকফাস্ট করে আমরা বেরিয়ে পরলাম World highest saltwater lake pangong এর উদ্দেশ্যে। পথে Diskit monastery দেখে নিলাম। পথ দীর্ঘ হলেও পথের সৌন্দর্য সময়ের দীর্ঘতা উপলব্ধি করতে দেয়নি।
হুন্ডার থেকে প্যানগং এর দুরত্ব ২৪২ কিলোমিটার। সময় লেগেছিল প্রায় ৯ ঘন্টা। পথের সৌন্দর্য ক্যামেরাবন্দি করার জন্য যেতে সময় লেগেছিল।
পঞ্চম দিন
প্যানগং এর পাশে অবস্থিত মান, মেরাক গ্রাম দেখে মাহে ব্রিজে পারমিশন চেক করে আমরা পৌছালাম সোমোরিরি তে। পথে পড়বে কায়গার সো। প্যানগং থেকে সোমোরিরি যাওয়ার রাস্তাটি খুব সুন্দর। এই পথে আমরা ব্ল্যাক নেকড ক্রেন, মারমেটস্, কিয়া্ং, পাশমিনা গোট দেখতে পাই। সেইদিন আমরা সোমোরিরিতে স্টে করি।
ষষ্ঠ দিন
সোমোরিরি থেকে Taglangla ক্রস করে লেহ-মানালি হাইওয়ে হয়ে লেহ তে পৌছালাম। যাওয়ার পথে Tso kar দেখে স্টাকনা মনাস্ট্রির পাশে সিন্ধু নদের কাছে সময় কাটিয়ে থিকসে মনাস্ট্রি ও রাঞ্চো স্কুল দেখে লেহ হোটেলে স্টে করি।
সপ্তম দিন
সকালে ব্রেকফাস্ট করে শান্তি স্তূপা এবং লে প্যালেস দেখে লেহ মার্কেটে টুকটাক শপিং করে লেহ হোটেলে রাত্রিবাস।
অষ্টম দিন
দুপুরের ফ্লাইট ধরে ভায়া দিল্লী হয়ে পরের দিন কোলকাতা ফেরা।
ছবিঃ Gourab dey
Leave a Comment