নরসিংদী

লটকন বাগান

লটকন মানেই নরসিংদী জেলার নাম সবার আগে আসবে কারন নরসিংদী জেলার রায়পুরা, শিবপুর, মরজাল এসব উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন হয়ে থাকে। লটকন আমাদের সবারই প্রিয় ফল কে না পছন্দ করে, যারা সারাদিনই কাজে ব্যাস্ত থাকেন তাদের জন্য ১ দিনের খুব আরামপ্রিয় একটা ভ্রমন। তবে লটকন বাগানের পাশাপাশি অনেক কিছু আপনার মন ভরে দিতে পারে বিশেষ করে মাটির তৈরি বাড়ি, চারিদিকের শান্ত পরিবেশ এগুলোতো আছে তার পাশাপাশি নানা ধরনের ফল তো আপনাকে অবশ্যই আকর্ষন করবে।

বাগানে ঢুকার আগে আর লটকন পারার আগে অনুমতি নিয়ে নেন। সবচেয়ে ভালো হবে অটো চালককে বলবেন ওনার পরিচিত বাগানে নিয়ে যেতে। লটকন বাগানের থেকে লটকন আনতে পারেন কিন্তু দামদামি করে নিয়েন কেজি প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে নিতে পারে, সাথে ইচ্ছা করলে কাঁঠাল, পেয়ারা আনতে পারেন আর নরসিংদীর কলা টেস্ট করে দেখতে পারেন হতাশ হবেন নাহ নিশ্চিত। এগুলো যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে বাজার থেকে নিতে পারেন।

সবচেয়ে বেশি লটকনের গাছ পাবেন নরসিংদীর শিবপুরে। শিবপুর উপজেলার ছোটাবন্দ গ্রামে পা দিয়েই দেখা মিলবে অসংখ্য লটকন (Lotkon) গাছের। ইচ্ছেমতো লটকন খেতে পারবেন গাছ থেকে পেড়ে। তবে অবশ্যই বাগানের মালিকের সাথে কথা বলে নেবেন। তিনিই আপনাকে দেখিয়ে দেবেন কোন গাছের লটকন বেশি মিষ্টি আর কোন গাছেরটা টক!

নরসিংদী ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন আরও অন্যান্য বাগান। উয়ারি বটেশ্বর বেড়াতে গেলে তার খুব কাছেও একটি বাগান পাবেন। স্থানীয় মানুষজনকে জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দেবে। এছাড়া এখানকার যোশর, আগরপুর, মাকাল্লা, ভিটিখৈনকুট, দক্ষিণ কামালপুর, লালখারটেক, কামারটেক, চৈতন্য, চান্দারটেক, শরীফপুর, কুলুরটেক, টঙ্গিরটেক, পুরানা আটশিয়া, আমরাতলী, কাজিয়ারা, লেটাব, মাছিমনগর, মালিয়ারা, নৌকাঘাটা, নন্দিরটেক, মুরগীবের, দেবালেরটেক, পাহাড়ফুলদী, শৈকারচর, শ্রীরামপুর, সৃষ্টিগড়, ভঙ্গারটেক, জাঙ্খারটেকসহ আশপাশের সব গ্রামেই লটকনের বাগান আছে।

দেশের অন্যান্য আরও অনেক এলাকাতে লটকন হয়। তবে স্বাদের সেরা লটকন পাবেন এখানেই। বাগান ভ্রমণের সাথে সাথে কিনে নিয়ে যেতে পারেন প্রিয়জনদের জন্যেও।

লটকন বাগানে যাওয়ার উপায়

ঢাকা থেকে যেকোনো সিলেটগামী বা কিশোরগঞ্জগামী বাসে মরজাল আসবেন ভাড়া ৬০ বা ৬৫ টাকা নেবে দামাদামী করে নেবেন। তারপর নামার পর রাস্তার সাথেই অটোস্ট্যান্ড আছে বলে উঠেন যে লটকন বাগান যাবেন রিজার্ভ নিলে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা নেবে, রিজার্ভ নিলে সবচেয়ে ভালো হয় খুব তাড়াতাড়ি পৌঁছাতে পারবেন। বাগানের থেকে আসা যাওয়ার জন্য ৩০০ টাকা দিলেই হবে দামাদামি করে উঠেন।

এছাড়া আপনি শিবপুর এর লটকন বাগানে যেতে চাইলে শিবপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড অথবা কলেজ গেইট থেকে সিএনজি যোগে ১০ কিলোমিটার দূরে আজকিতলা বাজার (জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে)। যেতে সিএনজি ভাড়া (রিজার্ভ) নিবে ১৫০ টাকা। আজকিতলা বাজারে নেমে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই লটকন বাগান দেখিয়ে দেবে। আজকিতলা বাজার থেকে মিনিট খানেক হাটলেই লটকন বাগান দেখতে পাবেন।

অথবা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শিবপুরস্ত কামারটেক বাসস্ট্যান্ড থেকে সিএনজি যোগে ০৬ কিলোমিটার দূরে আজকিতলা বাজার (জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে); যেতে সিএনজি ভাড়া (রিজার্ভ) নিবে ১০০ টাকা। আজকিতলা বাজারে নেমে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই লটকন বাগান দেখিয়ে দেবে। আজকিতলা বাজার থেকে মিনিট খানেক হাটলেই লটকন বাগান দেখতে পাবেন।

অথবা ঢাকার সায়েদাবাদ, বনানী, মহাখালী বা উত্তরা থেকে যেকোনো নরসিংদীর বাসে উঠে পাঁচদোনা বাসস্ট্যান্ড নামবেন। সেখান থেকে সিএনজি/ মাইক্রোবাস ভাড়া করে চলে যাবেন মরজাল। সেখানে চালককে বললেই হবে যে লটকন বাগান দেখতে যাবেন, তিনিই আপনাকে কামারটেকের রাস্তা দিয়ে সৃষ্টিগড় পর্যন্ত নিয়ে যাবেন। এই ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার সরু রাস্তার পুরোটাজুড়েই লটকন বাগান। লটকন জুলাই মাসের পর আর পাওয়া যাবে না। ফেরার সময় ভেলনগর বা পাঁচদোনা হয়ে আবার চলে আসতে পারেন।

ঢাকা থেকে নরসিংদীর পাঁচদোনা পর্যন্ত বাসভাড়া ১০০ টাকা। অথবা ঢাকা থেকে মাইক্রোবাস ভাড়া করে নিতে পারবেন। ভাড়া নেবে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।

ট্রেনে যেতে চাইলে – আপনি সকালের ট্রেনে ঢাকা থাকে নরসিংদী যেতে পারেন। স্টেশন থেকে ভেলানগর বাসস্ট্যান্ড যেয়ে লেগুনা নয়তো ভৈরব/সিলেটগামী বাসে মরজাল বাসস্টেন্ড নামবেন। তারপর অটোরিক্সা নিয়ে মরজাল ও ওয়ারী বটেশ্বর এলাকার লটকন বাগানগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। 

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ foodfruitlotkonnarsingdi