ঢাকা-বুড়িমারি/চেংরাবান্ধা-জয়গাঁও/ফুন্টসোলিং-থিম্পুঃ রাতের বাসে ঢাকা থেকে বুড়িমারি। নন-এসি/এসি বাসে ভোর বেলায় বুড়িমারি পৌঁছে বাস কাউন্টারে ফ্রেশ হয়ে বুড়ির হোটেলে খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে বর্ডার পার। তারপর একটা গাড়ি ভাড়া করে জয়গাঁও পর্যন্ত। জয়গাঁও পৌঁছুতে সময় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। জয়গাঁও গিয়ে প্রথম কাজ ইন্ডিয়ান ইমিগ্রেশন অফিসে যাওয়া। ফুন্টসোলিং গেটের কাছে ভুটান ইমিগ্রেশন অফিসে, ওখানে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে ট্যাক্সি ঠিক করে থিম্পুর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু। রাতে ১১-১২ টার মধ্যে থিম্পু পৌঁছে হোটেলে চেক-ইন।
পরদিন সকালে থিম্পু সাইট সিইং। কিংস মেমোরিয়াল চর্টেন, বুদ্ধ দরদেনমা স্ট্যাচু বা বুদ্ধ পয়েন্ট, সিমতোখা জং। এগুলো দেখা শেষে শহরে ফিরে দুপুরের খাওয়া। খাওয়ার পরে তাশিচো জং (TashicchoDzong)। জং মানে সরকারি অফিস, সাথে মন্দিরও আছে। এই জং এর পাশেই ওদের পার্লামেন্ট হাউস আর রাজার প্রাসাদ।
এদিন সকাল সকাল বের হয়ে উদ্দেশ্য দোচু লা পাস। দোচু লা পাস যেহেতু পুনাখা ডিস্ট্রিক্ট-এ পড়েছে, তাই থিম্পু থেকে পারমিশন নিতে হয়। দোচলা পাস ঘুরে আসতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময়। শহরে ফেরার পথে চ্যাংগাংখা মন্দির। শহরে ফিরে লাঞ্চ সেরে নিয়ে একে একে ফোক হেরিটেজ মিউজিয়াম, আর্ট স্কুল, ন্যাশনাল লাইব্রেরি – এগুলো সব এক জায়গায়। এরপর আর্চারি গ্রাউন্ড। তীরন্দাজদের ১৫০/২০০ মিটার দূরের নিশানা নিজের চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না। এরপ রওনা পারোর উদ্দেশ্যে। থিম্পু থেকে পারোর রাস্তাটা অসাধারণ সুন্দর। হাতে সময় থাকলে একদিন রাখতে পারেন পুনাখা এর উদ্দেশ্যে।
সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে রওনা চেলেলা পাসের উদ্দেশ্যে। এটা ভুটানের সবচেয়ে উঁচু রাস্তা, হা যাওয়ার পথে পড়ে, উচ্চতা ৩৯৮৮ মিটার। ভুটানের ২য় সর্বোচ্চ পর্বত জমলহারি এখান থেকে পরিষ্কার দেখা যায়। আর একটু ঠান্ডা পরলে এখানেও বরফ/তুষার পাওয়া যায়। এখান থেকে ফিরে আসতে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময়। ফেরার পথে এয়ারপোর্ট ভিউ পয়েন্টে একটু ছবি তোলা। শহরে ফিরে লাঞ্চ সেরে নিয়ে তা জং বা ন্যাশনাল মিউজিয়াম। এরপর পাশেই অবস্থিত পারো রিনপুং জং বা পারো জং। হাতে সময় থাকলে একদিন রাখতে পারেন টাইগার মোনাস্ট্রি ট্রেকিং এর জন্যে।
ভুটানে এদিন সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই রওনা ফুন্টসোলিং এর দিকে। উদ্দেশ্য, দুপুর একটায় জয়গাঁও থেকে কালিম্পং এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া শেয়ার জিপ ধরার। ভাড়া জনপ্রতি ২০০ রুপি। পথে চুখাতে থেমে নাস্তা। দুপুর সাড়ে এগারটার দিকে ফুন্টসোলিং/জয়গাঁও। ইন্ডিয়ার টাইম তখন এগারটা। প্রথমে ভুটানের ইমিগ্রেশন থেকে exit, তারপর ইন্ডিয়ার ইমিগ্রেশন থেকে entry সিল। তারপর কালিম্পং এর গাড়িতে চেপে ৪ঃ৩০-৫ ঘণ্টা পর কালিম্পং।
এদিন কালিম্পং সাইট সিইং। কালিম্পং শহরের মধ্যে যা কিছু আছে তা ঘুরতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। পাইন ভিউ ক্যাকটাস নার্সারি, দূরপিন মন্দির, গলফ কোর্স, দেওলো হিল, সাইন্স সেন্টার, বুদ্ধ মন্দির, হনুমান তোক (মুর্তি), গ্রাহাম’স হোম ও স্কুল আর মঙ্গল ধাম মন্দির। শহরে এসে লাঞ্চ সেরে মার্কেটে। সন্ধ্যের পরে হেঁটে হোটেলে।
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে হোটেল ছেড়ে দিয়ে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে গিয়ে হাজির হতে হবে শিলিগুড়ি এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া শেয়ার জীপ ধরার জন্যে। সকাল আটটার দিকে শেয়ার জিপ , ভাড়া একজন ১২০-১৫০ রুপি। দশটা বাজতে না বাজতেই শিলিগুড়ি শহরে। নাস্তা সেরে রিক্সা করে বিধান মার্কেট আর হংকং মার্কেট। বারোটার দিকে তেনজিং নোরগে বাস টার্মিনাল। ওখান থেকে চ্যাংরাবান্ধার বাস ছাড়ে কিছুক্ষণ পরপর। ভাড়া ৪০ রুপি করে, বাস সার্ভিস খুবই ভালো। পৌনে তিনটার দিকে বাস বর্ডার থেকে ৩ কিমি দূরে, বাইপাস বাসস্টপে নামিয়ে দিবে। একটা অটো করে বর্ডারে। বর্ডার পার করে পৌনে ছয়টার বাসে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু।
Alternative plan: You can Travel by Shamoly AC bus from Shiliguri (1pm) to Dhaka.
জয়গাও থেকে ট্যাক্সি রিজার্ভ করে একই সময়ে দার্জিলিং এ পৌঁছে যেতে পারবেন। পরের দিনটা দার্জিলিং সাইট সিইং এর উদ্দেশ্যে রেখে ঘুমিয়ে যান।
সারাদিন দার্জিলিং দিন : সকালে টাইগার হিল যেতে পারেন কাঞ্চনজঙ্ঘার সুর্যোদয় দেখতে। এটা দেখে নাস্তা সেরে ফেরার পথে একে একে জাপানিজ ট্যাম্পেল, রক গার্ডেন, হিমালিয়ান মাউন্টরিং ইন্সটিটিউট এবং চিড়িয়াখানা, রোপওয়ে ক্যাবলকার, টয় ট্রেন, বাতাশিয়া লুপ, টেনজিং রক ও গুম রক, চা বাগান, সাথে সম্ভব হলে গঙ্গামায়া পার্ক ইত্যাদি। সন্ধ্যায় শপিং টাইম।
Leave a Comment