বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। এখানকার দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নানা ধরনের খাবারের হাতছানি সবসময়ই পর্যটকদের আকর্ষণ করে। তবে ভ্রমণকে আরও আনন্দময় এবং নিরাপদ করতে কিছু বিষয় অবশ্যই মনে রাখতে হবে। নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
বর্তমান সময়ে যারা কক্সবাজারে ঘুরতে যাবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য এই সতর্কতাগুলো মাথায় রাখবেন
কক্সবাজারে বাস থেকে নামার পর গন্তব্যের উদ্দেশ্যে অটোতে ওঠার আগে অবশ্যই ভাড়া নিয়ে কথা বলে নিন। এক্ষেত্রে দরদাম করে ভাড়া ঠিক করে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কোনো অটোচালক যদি আপনাকে বিশেষ কোনো হোটেলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়, তবে তা এড়িয়ে চলুন। তারা সাধারণত কমিশন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট হোটেলে নিয়ে যেতে চায়, যেখানে আপনার খরচ বেশি হতে পারে।
কক্সবাজারে আসার আগে সম্ভব হলে অনলাইন থেকে হোটেল বুকিং করে আসুন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে হোটেলের ছবি, সুযোগ-সুবিধা এবং পর্যটকদের রিভিউ দেখে নিজের পছন্দ অনুযায়ী হোটেল বেছে নিতে পারবেন। আগে থেকে বুকিং করলে সাধারণত ভালো রুম পাওয়া যায় এবং দামও তুলনামূলকভাবে কম থাকে। যদি আগে থেকে বুকিং করতে না পারেন, তবে কক্সবাজারে পৌঁছে নিজেরা যাচাই করে রুম দেখে ভাড়া ঠিক করুন। এক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো না করে কয়েকটি হোটেল ঘুরে compare করে সিদ্ধান্ত নিন। মনে রাখবেন, এক্ষেত্রেও কোনো অটোচালকের পরামর্শে হোটেল ঠিক করবেন না।
হোটেলে ওঠার সময় রিসেপশনে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি জমা দিতে হতে পারে। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, তাই পরিচয়পত্র সাথে রাখতে ভুলবেন না।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেলে কিছু বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন:
কক্সবাজারে ছবি তোলার জন্য অনেক ফটোগ্রাফার ঘোরাঘুরি করেন। ছবি তোলার আগে তাদের সাথে দাম নিয়ে আলোচনা করে নিন। সম্ভব হলে ফটোগ্রাফারের লাইসেন্স আছে কিনা, তা যাচাই করুন এবং তার মোবাইল নম্বর ও একটি ছবি তুলে রাখুন।
বিচ বাইক বা ওয়াটার বাইকে চড়ার আগে অবশ্যই তাদের নির্ধারিত মূল্য তালিকা দেখে নিন এবং দরদাম করে দাম ঠিক করে নিন। নিরাপত্তার জন্য লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন এবং তাদের দেওয়া নিয়মাবলী ভালোভাবে মেনে চলুন।
সমুদ্রে নামার আগে জোয়ার-ভাটার সময় জেনে নিন। ভাটার সময় পানিতে নামা বিপজ্জনক হতে পারে। লাইফগার্ডের আশেপাশে চিহ্নিত স্থানে গোসল করুন। লাল পতাকা দেখলে পানিতে নামা থেকে বিরত থাকুন।
কক্সবাজারে যেকোনো ধরনের হয়রানির শিকার হলে দ্রুত ট্যুরিস্ট পুলিশের সহায়তা নিন। তাদের হেল্পলাইন নম্বরগুলো সবসময় হাতের কাছে রাখুন: ডিউটি অফিসার – 01320159087, এএসপি – 01320159209
কক্সবাজারে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। হোটেলে খাবার গ্রহণের আগে মেনু দেখে দাম জেনে নিন। বর্তমানে স্ট্রিট ফুড পরিহার করার কথা বলা হচ্ছে, তাই স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়াই ভালো।
কক্সবাজার বিচ এলাকা সাধারণত নিরাপদ। তবে সন্ধ্যার পর ঝাউবন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন এলাকা এড়িয়ে চলুন। রাতে সৈকতে একা ঘোরাঘুরি না করাই ভালো।
কক্সবাজারের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি। উপরে দেওয়া টিপসগুলো অনুসরণ করে আপনি একটি নিরাপদ এবং আনন্দময় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন। যেকোনো প্রয়োজনে ট্যুরিস্ট পুলিশ সবসময় আপনার পাশে আছে।
Leave a Comment