বান্দরবান

আন্ধারমানিক

আন্ধারমানিক (Andharmanik) শব্দটিই রহস্যময়। এই নৈসর্গিক সৌন্দর্যময় স্থানটি নিজের চোখে দেখলে অনুভব করতে পারবেন এর বিশালতা। আন্ধারমানিক এর অবস্থান বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার বড় মদক এর পরে। বড় মদকের পর আর কোনো সেনা বাহিনী বা বিজিবি ক্যাম্প না থাকায় নিরাপত্তার কারণে প্রায়ই এখানে যেতে অনুমতি দেয়া হয় না। আন্ধারমানিকের মূল আকর্ষণ হল নারিশ্যা ঝিরি। ঝিরির দুই পাশ প্রায় ৬০/৭০ ফুট পাথরের দেয়াল সমান্তরাল ভাবে অনেক দূর চলে গেছে। মনে হল ঢালাই দিয়ে কেউ বানিয়ে রেখেছে। এক অদ্ভুত সৃষ্টি এই আন্ধারমানিক। সূর্যের আলো কম পৌঁছার কারণে জায়গাটি সব সময় অন্ধকার দেখা যায়। তাই আন্ধারমানিক বলতে মূলত আমরা এই জায়গাটিকেই বুঝি।

আন্দারমানিক নিষিদ্ধ কেন?

আন্দারমানিক বাংলাদেশর সাউদার্ন কর্ণারে অবস্থিত সুতরাং এ অঞ্চলে গভীর অরণ্য, বন্য প্রাণী ভয় এবং মিয়ানমারের আরকান বাহিনী সহ বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের আনাগোনা রয়েছে। সো যে কোন সময় যেকোন অবস্থায় বড় ধরনের বিপদ হওয়ার আশংঙ্কা রয়েছে।

আন্ধারমানিক যাওয়ার উপায় এবং খরচ

ঢাকা থেকে প্রথমে বান্দরবান যেতে হবে। ভাড়া নন এসি ৬২০ টাকা। এসি ৮৫০ টাকা। বান্দরবান থেকে থানছির বাসভাড়া জনপ্রতি ২০০ টাকা। থানচি থেকে আন্ধারমানিক যাওয়া আসা ট্রলার রিজার্ভ বাবদ ১০,০০০ টাকার মতো নেবে। তবে বড় মদক বিজিবি ক্যাম্পের অনুমতির উপরই আন্ধারমানিক যাওয়া নির্ভর করে। চারদিন সময় নিয়ে গেলে ভালো করে দেখে আসতে পারবেন।

আন্ধারমানিক যেতে প্রথমেই আপনাকে যেতে হবে বান্দরবানের থানছি ওখান থেকে বোটে তিন্দু, রেমক্রি ফেলেও যেতে হবে আরো অনেক দূর। রেমাক্রির পরের জায়গাটির নাম বড় মদক। যার স্থানীয় নাম ‘মুরং ওয়া’। এখানে ‘মুরং ওয়া’ নামে একটি পাড়াও আছে। বড়মদক থেকে নদীপথে পাড়াটির দূরত্ব আট কিলোমিটার। এর পরেই শুরু হয় রহস্যময় সৌন্দর্যের অন্ধকার জগৎ আন্ধারমানিক।

দীর্ঘ এই নদীপথের দুই পাশের পাহাড়ের দেয়াল খাড়া নেমে গেছে পানির গভীর তল পর্যন্ত। পাহাড়ের উঁচু উঁচু গাছ ভেদ করে সূর্যের আলো পৌঁছায় খুব কম। তাই এই জায়গার নাম আন্ধারমানিক যা গেছে লিক্রি পর্যন্ত। পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে বয়ে চলে অসংখ্য ঝর্না। লিক্রি থেকে মিয়ানমারের সীমানা কাছেই।

আন্ধারমানিক যাওয়ার রুট

ঢাকা – বান্দরবান – থাঞ্চি – রেমাক্রি – ছোটমদক – বড়মদক – আন্ধারমানিক – নারিশ্যা ঝিরি (নৌপথে বা ট্রেক করে)

রেমাক্রি থেকে বড় মোদকে পৌঁছে অবশ্যই বিজিবির অনুমতি নিতে হবে আন্ধারমানিক যাওয়ার জন্য।

কোথায় খাবেন

রেমাক্রিতে খাবার পাবেন। ছোট মদক ও বড় মদকে নিজেদের রান্না করে খেতে হবে।

কোথায় থাকবেন

রেমাক্রিতে কয়েকটি গেস্ট হাউজ আছে। ছোট মদক ও বড় মদকে আদিবাসীদের ঘরে থাকতে পারবেন।

যা সাথে নেওয়া উচিত

  • ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর ফটোকপি
  • গামছা, ট্রেকিং এ স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন এমন থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট এবং টি-শার্ট (প্রয়োজনমত)
  • ট্রেকিং এর জন্য খুব পাতলা কিন্তু আরামদায়ক জুতা। থাঞ্চি বাজারে পাওয়া যায়। দাম ১৫০ টাকা
  • ছোট টর্চ
  • সানগ্লাস, ক্যাপ/হ্যাট, সানস্ক্রিন, রেইনকোট
  • চার্জের জন্য পাওয়ার ব্যাংক
  • বৃষ্টি হলে আপনার ব্যাগ সেইভ করার জন্য পলি।
Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ andharmanikBandarban