নুহাশ পল্লী ট্যুর

লেখক হুমায়ূন আহমেদ এর একজন ভক্ত হিসেবে তাঁর স্মৃতি বিজরিত নুহাশ পল্লী (Nuhash Polli) আমাকে বেশ টানে। সেই টানে ছুটে যাই নুহাশ পল্লীতে। বৃষ্টিবিলাস, লীলাবতী দিঘি, ভুতবিলাস আর ট্রি হাউজ এবং নুহাশ পল্লির সবুজ! আহা!! কি শান্তি।

টিকেট কেটে ভেতরে ঢুকেই একটা শান্তি কাজ করলো। চারিদিকে সবুজাভ একটা পরিবেশ। ভেতরে ঢুকে হাতের ডান দিকে রয়েছে একটি সুইমিংপুল এবং তার পাশেই ছোট করে বসার জায়গা। আর চোখ আটকে যায় এখানে অবস্থিত “মা ও শিশু” ভাস্কর্য দেখে। এরপর পায়ে চলার পথ ধরে কিছুদূর এগিয়ে গিয়ে হাতের ডান পাশে দেখলাম চমৎকার বসার ব্যবস্থা, সাথে একটা টেবিল। এখানে কিছুক্ষণ বসে একটু গল্প আড্ডা দেয়া যায় বেশ। নুহাশপল্লীতে ঢুকে যে বিশাল মাঠ দেখা যায় সেটা সবারই ভালো লাগে। কারন মাঠেই রয়েছে নুহাশ পল্লীর বিখ্যাত এবং সবার আকর্ষণ এর সেই ট্রী হাউজ। যেখানে একটু উঠে না বসলে যেন মন ভরে না৷ আমরা সবাই বেশ কিছুক্ষণ এখানে সময় কাটাই।

দিঘির মাঝে এক কৃত্রিম দ্বীপ রয়েছে

কিছুদূর যেতেই দেখা মিলবে একটি দৈত্যাকার ভাস্কর্য এবং একটা মৎসকন্যার ভাস্কর্য যা কিনা পানির মাঝে রয়েছে। এছাড়াও ডাইনোসরদের কিছু ভাস্কর্য দেখা যাবে এখানে। আরেকদিকে রয়েছে একটি চমৎকার মাটির ঘর। একটু দূরেই পাওয়া যাবে দিঘি লীলাবতী। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এই দিঘিটা বেশ ভালো লাগে। এর ঘাটে কিছুক্ষণ বসে এক শান্তি অনুভব করা যায়। দিঘির মাঝে এক কৃত্রিম দ্বীপ রয়েছে যেখানে যাওয়ার জন্য কাঠের একটি ব্রিজ আছে এবং এর সাথেই রয়েছে ভুতবিলাস নামের ভবনটি। দিঘির চারপাশ দিয়ে পায়ে হাঁটার পথ রয়েছে। এখান দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করে।

দিঘি লীলাবতী

নুহাশ পল্লীর মাঠের এক পাশে বৃষ্টিবিলাসে বসে বিশ্রাম বা আড্ডা আর খাওয়া দাওয়া করা যায় চাইলে। নুহাশ পল্লীর এক পাশে নীরবে নিভৃতে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন হুমায়ূন আহমেদ।

যেভাবে নুহাশ পল্লী গিয়েছিলাম

আমরা সকালে কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ১০.৩৫ এর জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে জয়দেবপুর নামি। টিকেট ৫০ টাকা করে নিলো। এরপর জয়দেবপুর থেকে সরাসরি সিএনজি রিজার্ভ করে হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ড আসি, ভাড়া ৩০০ টাকা। এছাড়াও জয়দেবপুর থেকে ১০/১৫ টাকা অটো ভাড়া দিয়ে গাজীপুর চৌরাস্তা নেমে সেখান থেকে বাসে করে কম খরচে হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ড আসা যায়। হোতাপাড়া থেকে অটো নিয়ে সরাসরি নুহাশপল্লি। ভাড়া ১৫০/২০০ (রিজার্ভ)। এছাড়াও সরাসরি এয়ারপোর্ট থেকে প্রভাতী বনশ্রী বাসে যাওয়া যায় হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ড।

বৃষ্টিবিলাস

খাওয়া-দাওয়া

খাওয়া দাওয়ার জন্য হোতাপাড়া বাস স্ট্যান্ডে নিরালা হোটেল মোটামুটি ভালো।

নুহাশ পল্লী প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে মাগরিবের আজান পর্যন্ত খোলা আছে। জনপ্রতি প্রবেশ ফি ২০০ টাকা। ১০ বছরের নিচে বাচ্চা ও গাড়ী চালকদের প্রবেশ ফি লাগবেনা।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ daytourdaytripnuhashpolli