মরিশাস ভ্রমণ

সময়ঃ ১৬ ই জুলাই ২০১৬

লাল, খয়েরি, বেগুনি, সবুজ, নীল, হলুদ আর পার্পল – মাটির সাতটি রঙ? ভাবতে পারেন? এমন জায়গা আছে নাকি পৃথিবীতে? প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে সেভেন কালার্স (Seven Colored Earth) পয়েন্টের জমজমে রেস্তরাঁ কাম আ্যন্টিকের এই দোকানটার ভিতর থেকে আমি কিন্তু এখন সেটাই দেখছি।

এবার মরিশাস (Mauritius) আসতে হয়েছে দিন সাতেকের জন্য। তা আমার জাহাজের কাজ মিটে যেতে আজ একটু বেরিয়েছি। কোলকাতায় বর্ষা চলেছে কিন্তু এখানে এখন শীতকাল। তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২৪ ডিগ্রি, অর্থাৎ মনোরম। তবে বৃষ্টি হচ্ছে থেকে থেকে। আকাশ ভর্তি মেঘ আর রামধনুর খেলা। আমার সারথী নারায়নম। ক্যাসকেড ফলস দেখে মিনিট পনেরোর মধ্যেই আকাশের রামধনু আর বৃষ্টি ভেদ করে ও আমাকে নিয়ে এসেছে এই মাটির রামধনু দেখাতে। জায়গাটা দক্ষিন পশ্চিম মরিশাসে। নাম চামারেল, জেলা RIVIERE NOIRE। এখানে আরও বেশ কিছু ট্যুরিস্টের গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে। আমি ৩৫০ মরিশাস রুপি খরচা করে টিকিট আর পার্কিং ফী দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েছি।

ঘেরা অঞ্চলটার ভিতরের ঢেউ খেলানো মাটিতে রামধনুর রঙ। তার চারপাশে সবুজের বন্যা। দূরে টিকালো নাকের মতো পাহাড়। যেটা মরিশাসের ট্রেড মার্ক। একটু ঢাল দিয়ে জায়গাটায় প্রবেশ করেই ডান দিকে এই আ্যন্টিক আর ফাস্ট ফুডের দোকান।

এক কালের জীবন্ত আগ্নেয় গিরির জীবন্ত লাভা মিশ্রিত পাথরের বিয়োজন হয়ে প্রায় মাটির রূপ নিলো। এ পাথর অবশ্য মুলত ব্যাসল্ট জাতীয়। তারপর সেই লোহা মিশ্রিত পাথরের হাইড্রোলিসিস হোল সম্পূর্ণ ভাবে। সে হোক, কিন্তু তারই ফল এ রকম সাতরঙা পৃথিবী? – নাঃ। ভাবা যাচ্ছে না।

রঙিন মাটির পাশেই সবুজ মাঠ। সেখানে একটা ঘেরা জায়গায় কয়েকটা পেল্লাই কচ্ছপ। একটা আবার বাইরে পাইচারী করতে বেরিয়েছে। আর যায় কোথায়? সঙ্গে সঙ্গে ফটোগ্রাফারের দল ঘিরে ফেলেছে বেচারাকে। আমিও গেলাম। “Side please, side please” – বলতে বলতে এক ইওরপিয়ান ভদ্রলোক আমাকে সরিয়ে দিয়ে এমন ভাবে কচ্ছপের সঙ্গে রেসের ভঙ্গিমায় ছবি তুলল যে বোঝাই গেলো ও ঈশপের গল্পটা ছোটো বেলা থেকেই জানে।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ mauritiusseven colored earth