কুতুবদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ

আমরা সংখ্যায় ছিলা মাত্র ২ জন। আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২০শে এপ্রিল সকাল ৬ টাই। আমাদের প্ল্যান ছিলো, আমরা সকাল ৬ঃ৩০ এর ট্রলারে করে ফিরিংগি বাজার থেকে কুতুবদিয়ার (Kutubdia Island) উদ্দেশ্যে রওনা দিবো। আমরা ৬ঃ২৫ এ ঘাটে পৌছায় কিন্তু ট্রলার পাইনি। আমরা পৌছানোর ৫ মিনিট আগেই ট্রলার ছেড়ে দিয়েছে। যারা ট্রলারে করে যেতে চান তারা ৬ টার মধ্যে ঘাটে পৌঁছে গেলে ট্রলার মিস করবেন না। ভাড়া নিবে ১০০ টাকা। দরবার ঘাটে নামিয়ে দিবে।

আমরা ট্রলার মিস করার পরে তাড়াতাড়ি করে চলে নতুন ব্রীজ। সেখান থেকে হানিফ বাসে করে আমরা চকরিয়া নামি, ভাড়া ১৫০ টাকা একজন। চকরিয়া পৌছায় ১০ঃ৪০ এ। সেখান থেকে টেক্সি নিয়ে মংনামা ঘাটে চলে যাই। ভাড়া ৪০ টাকা করে একজন। ঘাটে পৌছায় ১১ টায়। তারপর আমরা বোটে উঠে যাই। বোট ভাড়া নেয় ২০ টাকা দরবার ঘাটে। যদি বড়ঘোপ ঘাটে যান তাহলে ভাড়া নিবে ৪০ টাকা। স্পিড বোটও ছিলো। স্পিড বোট ভাড়া ৮০ টাকা একজন। আমরা সাগর পর হয়ে প্রথমেই দরবার চলে যাই। ঘাট থেকে দরবার এর ভাড়া একজন ২০ টাকা করে। আমরা রিকশা নিয়েছিলাম ৫০ টাকা দিয়ে। দরবারে নেমে অজু করে কিছুক্ষন বিশ্রাম নেই। তারপর দুপুরে নামাজ পরে দরবারে দুপুরের ভাত খেয়ে ৩ টাই আমরা দরবার থেকে বের হই। সেখান থেকে রিকশা নিয়ে আমরা চলে যায় বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকা এবং তার চার পাশের এলাকা যে এত সুন্দর এবং এত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বলার মতো না।

বীচের পাশেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র। খুব সুন্দর পরিবেশ। শুধু পরিবেশ না, মানুষ গুলো যে এত ভালো, তাদের ব্যবহার, তাদের আপ্যায়ন আপনি কখনো ভুলবেন না। আমাদের কে বীচের পারে দেখে অনেকে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলো আপনারা কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন। তাদের দেখানো পথে আমরা বীচের পাশ দিয়ে হাঠতে থাকি, একটা বাজারে উঠি। তখন সময় সন্ধ্যা ৬ঃ৩০ মিনিট। আমরা ওখানে কিছু চিনতাম না। আমাদেরকে বাজারে হাটাহাটি করতে দেখে কিছু লোক আমাদেরকে জিজ্ঞাস করেন, আপনারা কি থাকার রুম খুজচ্ছেন? আমরা বললাম হ্যা। তারপর আমাদের কে ডাক বাংলাতে নিয়ে যায়। আমরা ওটাতে থাকি৷ দুই বেড অনেক বড় রুম, ভাড়া নেয় ৩০০ টাকা। রুমে ফ্রেশ হয়ে একটু ঘুম দি ১১ঃ৩০ টাই আমরা আবার বীচে চলে যায়। ১১ঃ৩০ বীচে যাওয়ার কারন হচ্ছে কুতুবদিয়া দীপে কারেন্ট থাকে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ১১ঃ৩০ মিনিট পর্যন্ত। তাই গরমে আমরা রুমে থাকতে পারছিলাম না। তাই বীচে চলে যাই। চাঁদনি রাতে আমরা ট্রলারের উপরে বসে ছিলাম। রাত একটা আমরা রুমে গিয়েই ঘুমাই।

আমরা ঘুম থেকে উঠি সকাল ৮ঃ৩০ এ। ঘুম থেকে উঠে নাস্তা করে আবার বীচে যাই। বীচ দিয়ে হাটতে হাটতে ঝাঊ বাগানে চলে যাই। ঝাউ বাগানের পাশেই থাকা ঘর গুলোর ছোট ছোট ছেলে গুলো আমাদের পিছু ছাড়ছে না। তারা আমাদের জন্য আম নিয়ে আসলো এবং আমাদের সাথে অনেক্ষন গল্প করলো। আমরা যখন ঐখান থেকে চলে আসছিলাম। সেখান থেকে তখন সেই ছেলে গুলো আমাদের পিছু পিছু অনেক দূর চলে এসেছিলো। আমি বললাম আমরা আবার আসবো, তোমরা চলে যাও। তারপর ওরা চলে গেলো।

২ টায় রুম ছেড়ে ভাত খেয়ে আমরা একটা টেম্পুতে উঠি। ওটা নাকি ঘাটে যাবে৷ কিন্তু সেই ঘাট দিয়ে যে মংনামার ঘাটে যাওয়া যায় না তা যানতাম না। একজন লোকে আমাদেরকে ওই টেম্পু থেকে নামিয়ে একটা রিকশায় তুলে দেয়। রিকশাওয়ালাকে বললো আমাদের ঘাটে নামিয়ে দিতে। রিকশাওয়ালা আমাদেরকে বড়ঘোপ ঘাটে নামিয়ে দেয়। সেখানে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে মংনামা ঘাটে পৌছাই। সেখান থেকে সান লাইন বাসে করে নতুন ব্রীজ আসি। ভাড়া নেয় একজন ১৫০ টাকা।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ Coxsbazarislandkutubdia