ঝটিকা সফরে আমার কায়রো ভ্রমণ (প্রথম পর্ব)

ইরানে যখন ছিলাম, তখন একটা নিয়্যত ছিল, ইরানে থাকা অবস্থায় তুর্কী (ইস্তানবুল), মিশর আর দুবাই ঘুরে যাওয়ার একটা চেষ্টা করব। শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব হয় নি। ২০১৬ এর জুন মাসে ইরান ছেড়ে জুলাই মাসে মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদে চলে আসলাম একটা নতুন চাকরি নিয়ে। ইন্টারনাল রিসোর্স হওয়ার সুবাদে দুই সপ্তাহের মাথায় নোটিশ চলে এল, কায়রো যেতে হবে নতুন চাকুরেদের প্রশিক্ষণ এর জন্য, কোম্পানি পরিচিতির জন্য। প্রশিক্ষণ মাত্র দু’দিনের, তবে এনজামেনা (চাদের রাজধানী) থেকে কায়রোতে প্রতিদিন ইজিপ্ট এয়ারের ফ্লাইট না থাকাতে এক দিন অতিরিক্ত পেয়ে গেলাম। 🙂

সমস্যা হল, ভিসা নিয়ে। ট্রেনিং অগাস্টে, আমি চাদে ঢুকেছি এক মাসের একটা ভিসা নিয়ে, এখন এই ভিসার পর এক বছরের দীর্ঘ মেয়াদি ভিসা এবং রেসিডেন্স পারমিট নিতে হবে। এছাড়া ইজিপ্ট এম্বেসি ভিসা দিবে না। চাদের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট ঢিলা, প্রতিদিন অফিসের এডমিনে খোজ নিতে লাগলাম, ওরা যে সময় বলে তাতে আমার ইজিপ্ট ট্রেনিং এর সময় পার হয়ে যাবে! বহু কাঠ খড় পুড়িয়ে শেষ পর্যন্ত চাদ ভিসা হাতে পেয়ে ইজিপ্ট এম্বেসিতে ভিসার এপ্লিকেশন জমা দিয়ে আসলাম। ফোন দিয়ে বলল, পর দিন সকাল ১১ টায় আমাকে ইজিপ্ট এম্বেসিতে দেখা করতে যেতে হবে। এম্বেসিতে যেতেই গেইটে সুদর্শন উচু লম্বা এক অফিসার আমার পাসপোর্ট (বাংলাদেশী পাসপোর্ট) দেখে বলে – আপনাকে ভিসা দিতে আমাদের কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ সময় লাগবে, সিকিউরিটি চেক করতে হবে। আমার তো মাথায় হাত, বলে কি? আমি আমার ট্রেনিং এর ইনভাইটেশন সংক্রান্ত সব ই-মেইল প্রিন্ট করে নিয়ে গিয়েছিলাম। অফিসারকে বললাম – আপনি যদি তিন সপ্তাহ পরে আমাকে ভিসা দেন, তখন আসলে আমার আর ঐ ভিসার দরকার হবে না।

বলেই ই-মেইলগুলো দেখালাম। জিজ্ঞেস করে, আচ্ছা, আপনাদের ইজিপ্ট অফিস থেকে কি কোন ইনভাইটেশন লেটার আছে? মনে মনে বললাম, আরে বাবা, আমার এপ্লিকেশন ফাইলটাতো অন্তত: খুলে দেখ! সেখানে ইজিপ্ট এবং চাদ, দুই অফিসের ইনভাইটেশন/ফরোয়ার্ডিংই দেয়া আছে। আর গলায় তো আমার আইডি কার্ড ঝুলছেই! সব দেখে বলে, ওহ আচ্ছা ঠিক আছে, তাহলে আগামী শুক্রবারে (৩ দিন পর) আপনি এসে আপনার ভিসা নিয়ে যাবেন। এই হল আমাদের পাসপোর্টের মূল্যায়ন, বড়ই দুঃখের কথা! 🙁

২৩ শে অগাস্ট ২০১৬ যাত্রার দিন। এয়ারপোর্টে বসে দেখলাম, নির্ধারিত সময়েই ইজিপ্ট এয়ার অবতরণ করল। তাই আমরাও উড়াল দিলাম সঠিক সময়েই। ২৬০০ কি.মি. দূরত্ব, বেশী দূরে নয়, ঘন্টা চারেকের মধ্যেই কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছে গেলাম।

কায়রোর আরবী নাম কিন্তু আসলে এল কাহিরাহ (القاهرة‎‎ al-Qāhirah)। কাহিরাহ শব্দের অর্থ হল “The Vanquisher” or “The Conqueror” অর্থাৎ যে জয় করে। ইংরেজদের এই নাম উচ্চারনে সমস্যা হয় দেখে ওরা এর নাম দিয়েছিল কায়রো। যাহোক, ইমিগ্রেশন শেষ করে যেই না বেরিয়ে যাচ্ছি, কোত্থেকে এক অফিসার উড়ে এসে বলে, আপনার পাসপোর্ট দেখান! বলাবাহুল্য, আমার মুখে দাড়ি আছে। সিসি ক্যামেরায় সেটা দেখেই উনি উড়ে এসেছেন আমাকে আটকাতে, কোন জংগী যদি খুজে পাওয়া যায়! ব্যাটা আবার ইংরেজি জানে না, রুমের ভেতরে বড় কর্তার কাছে নিয়ে গেল। উনি ইংরেজি জানেন। কেন এসেছি জিজ্ঞেস করতে বললাম আসার হেতু। বলে, আপনি মিনিট ১৫ একটু বাহিরে বসুন, গিয়ে চেয়ারে গিয়ে বসতে না বসতেই চ্যাংড়া অফিসার দেখি পাসপোর্ট নিয়ে হাজির! বলে, যান। জংগী ধরার সম্ভাব্য একটু সুযোগ বেচারাদের হাতছাড়া হয়ে গেল! 😛 😉

এ প্রসংগে দু’টো কথা বলি, এখন যাদের আমরা জংগী হিসেবে দেখছি, মারছে, মরছে, তাদের অধিকাংশেরই কিন্তু দাড়ি নেই, স্মার্ট পোলাপান সব জংগী হয়ে গেছে, জান্নাতে চলে যাচ্ছে। আমার দাড়ি জংগীদের চেয়ে বড়। আজ পর্যন্ত এই জন্য কোন সমস্যায় পড়তে হয় নি। এই প্রথম কায়রো এয়ারপোর্টে একটু গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়লাম। যাহোক, কায়রো শহরে ঢুকে দেখলাম, এই শহরে নিরাপত্তা ব্যাপক কুকুর নির্ভর! মানে বড় বড় স্থাপনার প্রবেশ মুখে প্রহরীরা সব বিশাল সাইজের কুকুর নিয়ে বসে আছে, গাড়ি চেক করার দায়িত্ব মূলতঃ ঐ কুকুরদের! 😛

ড্রাইভার সময়মতই গাড়ি নিয়ে হাজির ছিল। ফোন করতেই পাচ মিনিটে চলে এল। আমার গন্তব্য হল হোটেল হলিডে ইন, কায়রো মা’য়াদি এলাকায়। এই যে মা’য়াদি (المعادى) এখানে আরবি “আইন” এর উচ্চারণ করতে হবে, গলায় নিয়ে, নইলে দেখবেন ওরা বুঝবে না আপনি কোন জায়গার কথা বলছেন!

আমার রাতের খাবার

বিকেলের কায়রো সিটি দেখতে দেখতে মা’য়াদি যাচ্ছি। হালকা পাতলা জ্যাম ঠেলে চলে এলাম হোটেলে। পথ ঘাট দেখে ঢাকার সাথে কিছু মিল পেলাম, সেটা হল রাস্তা ঘাট অপরিচ্ছন্ন আর লোকজন এর রাফ গাড়ি চালানো, ডান বাম এর লেন, যেদিক দিয়ে খুশী। তবে রাস্তা ঘাট ঢাকার চেয়ে কিছুটা প্রশস্ত আর ভাল। হোটেলে চেক ইন করে একটু ফ্রেশ হয়ে সন্ধ্যা আটটা নাগাদ বের হয়ে গেলাম, উদ্দেশ্য কিছু ডলার ভাংগানো আর এলাকাটা ঘুরে দেখা। কাল থেকে আবার ট্রেনিং শুরু। একটু এগুতেই দেখলাম শিশা খাওয়ার দোকান, আমার এক মিশরীয় সহকর্মী বলে দিয়েছিল, কায়রোতে তুমি এটা রাস্তা ঘাটে দেখবে, বাস্তবেও তাই। তা ঐ শিশার দোকানের পাশেই দেখি এক মানি এক্সচেঞ্জ, কিন্তু টাকা ভাঙ্গাতে ব্যাংক রেইট বলে। ১ ডলার = ৮.৯ মিশরীয় পাউন্ড! অথচ আমার সহকর্মী বলে দিয়েছে, রেইট ১২ পাউন্ডের মত। বুঝলাম আরো খুজতে হবে। শেষ পর্যন্ত এক বিদেশীর দেখা পেলাম, উনি বললেন মেট্রো রেল স্টেশনের কাছে উনি এক সপ্তাহ আগে ভাংগিয়েছেন ১২ পাউন্ড রেইটে। ঐ লোকের কাছ থেকে পথের নির্দেশনা নিয়ে মেট্রো রেল স্টেশনে পৌছে আশে পাশের সব অলি গলি খুজে যখন প্রায় হতাশ, তখনই এক গলিতে পেয়ে গেলাম একটা মানি এক্সচেঞ্জ আর রেইটও ১২ পাউন্ড করে। ২০০ ডলার ভাংগিয়ে ফেললাম। ব্যাপক ক্ষুধা লেগেছে, কাছেই দেখি এল শাবরাওয়ি নামে এক রেস্টুরেন্টের সামনে লোকজনের ব্যাপক ভীড়। বুঝলাম, এটা ভাল কোন রেস্টুরেন্টই হবে। কাউন্টারের ওখানে খাবার অর্ডার করছে একজনকে পেয়ে গেলাম ভাল ইংরেজি বলে, তার পরামর্শে মাত্র ২৫ পাউন্ডে একটা শাওয়ার্মা (বাংলাদেশে যেটাকে আমরা শর্মা বলে ডাকি) অর্ডার দিয়ে ফেললাম। শাওয়ার্মার দুই প্রকার আছে, ঐ রুটি দিয়ে রোল মত আর মিল টাইপ। আমি মিল টাইপ নিলাম। খাবার ভাল, কিন্তু একটাই সমস্যা, তেল প্রচুর বেশী দেয় আর পরিমাণেও দেড় জনের খাবার দেয়। ছবিতে দেখুন আমার রাতের খাবার।

হোটেলে ফেরার পথে এক পেস্ট্রি শপে পেস্ট্রি চেখে দেখতে ভুললাম না!

সকালে উঠে নাশতা করতে গিয়ে দেখি দারুণ এক দৃশ্য! আমাদের হোটেল একেবারে নীল নদের পাড়েই! রাতে যেটা বুঝতে পারিনি।

হোটেল রুম থেকে নীলনদ
শপিংমল, কায়রো

হোটেলের বুফে নাশতা আমার বরাবরই প্রিয়। ব্যাপক একটা নাশতা খেয়ে ট্রেনিং রুমে ঢুকলাম। ট্রেনিং এ আমার পাশেই মিশরীয় এক ভাই বসেছিল। তার সাথে ভালই খাতির হয়ে গেল। ট্রেনিং এর পর আমার “মল এল আরব” যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। সে বলল, সে আমাকে নামিয়ে দিতে পারবে, কারণ, ট্রেনিং শেষে সে অফিসে যাবে আর অফিসের কাছেই আরব মল। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ও গুগল ম্যাপে নেভিগেটর অন করতে দেখি হোটেল থেকেই মল ৩৬ কি.মি. দূরে! যাওয়ার পথে দূর থেকে পিরামিড দেখলাম, আনন্দে মনটা নেচে উঠল আর বললাম, শুক্রবারেই তোমাকে দেখতে আসছি ইনশাআল্লাহ! 😀

মলে ঢুকে দেখি, বিশাল মল, তবে সব ব্র্যান্ডের জিনিস পত্র, মেলা দাম। সত্যি কথা বলতে কয়েক গুণ দাম দিয়ে ঐসব নামী দামী ব্র্যান্ডের কাপড় চোপড় আমাকে কখনোই খুব একটা আকর্ষণ করে না, মনে হয় পয়সা নষ্ট। যদিও আমাদের দেশের আর্টিস্টি বা ইনফিনিটি, এক্সটেসিরা মোটামুটি বিদেশী ব্র্যান্ডগুলোকে দামের দিক দিয়ে ছুয়েই ফেলবে মনে হয়। বউয়ের দাবী অনুসারে হিজাবের জন্য ব্যবহৃত কিছু স্কার্ফ কিনলাম, এটা না কিনলে খবর আছে। 😛

এরপর স্পিনি নামে এক সুপার শপে ঢুকে এক গাদা চকোলেট আর শ্যাম্পু, বডি স্প্রে কিনে ফেললাম। একটা ড্রিংকিং ইয়োগার্ট খেতে খেতে মল থেকে বিদেয় হলাম। আমার সেই মিশরীয় বন্ধুই আবার অফিসের কাজ শেষে আমাকে মল থেকে তুলে হোটেলে নামিয়ে দিয়ে গেল।

পর দিন ট্রেনিং শেষে যাবার প্ল্যান হল খানে খালিলি আর মোয়েজ স্ট্রিট। এটা পুরনো কায়রোতে পড়ে। ওখানে ইমাম হোসেন (রাঃ) এর নামে একটি মসজিদও আছে।

পুরনো কায়রো

খানে খলিলি’র কাছে আমার সেই মিশরীয় বন্ধু তার গাড়ি করে নামিয়ে দিয়ে গেল। বলল, সেও আসবে কি না আমার সাথে। আমি বললাম, বন্ধু তুমি অনেক করেছ, অনেক কৃতজ্ঞ আমি, তুমি বাড়ি যাও, আমি সামলে নেব। প্রথমেই ইমাম হোসেইন মসজিদের দেখা পেলাম।

ইমাম হোসেইন মসজিদ

আশে পাশেও সব পুরনো স্থাপনা, ইসলামিক স্থাপত্য। এগিয়ে যেতেই খানে খালিলি। এটা মূলতঃ মিশরীয় ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্পজাত পণ্য বিক্রির স্থান। অনেক সুন্দর সুন্দর জিনিস আছে। সমস্যা হল, এক দোকানে ঢুকলেই আটকে যেতে হয়। পর্যটকের সংখ্যা কম হওয়াতে সে কিছু না কিছু বিক্রি করে ছাড়বেই। যাহোক, বাচ্চাদের জন্য কিছু টি-শার্ট, দুই সেট পাথরের পিরামিড, কিছু কারুকার্য খচিত থালা (দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখার জন্য) এবং আরো টুকিটাকি জিনিস কিনে মোয়েজ স্ট্রিটের দিকে পা বাড়ালাম। খানে খালিলির ভাল একটা দিক হল, সব দোকানীরা ভাল ইংরেজি বলতে পারে, সুতরাং ভাষা নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হবে না।

খানে খালিলি
মোয়েজ স্ট্রিট

মোয়েজ স্ট্রিট মূলত প্রাচীন ইসলামিক স্থাপনা দিয়ে ভরা রাস্তা। একটু পর পর মসজিদ। সুন্দর আলোক সজ্জা করে রেখেছে, দেখে বোঝা গেল, মিশরীয়দের সময় কাটানোর খুব ভাল একটা জায়গা। রেস্তোরা আর বিভিন্ন পুরনো জিনিসের দোকানে ভরপুর। এর মধ্যে দেখি এক মেয়ে একটা বড় কাপড় কিনছে, দেখে ভালই লাগল। ইংরেজি জানে কিনা জিজ্ঞেস করতে হ্যা সূচক জবাব দিলে জিজ্ঞেস করলাম এটার ব্যবহার কি। সে মোবাইল খুলে দেখাল যে এভাবে দেয়ালে সজ্জা হিসেবে মিশরীয়রা এই কাপড়ের টুকরা ঝুলিয়ে রাখে। আইডিয়াটা পছন্দ হল, আমিও একটা কিনে ফেললাম।

রাত সাড়ে আটটার একটু বেশী। হোটেলে ফিরতে হবে। ট্যাক্সিতেও যাওয়া যায়। ভাবলাম, খোজ নিয়ে দেখি মেট্রো আছে কি না আশে পাশে আর সেটা দিয়ে এল মা’য়াদি যাওয়া যায় কিনা। খোজ নিয়ে জানতে পারলাম, কাছে একটা মেট্রো স্টেশন আছে। ওরা বলল, “ওবরা”, পরে ম্যাপে দেখছি ওরা আসলে “ওপেরা” যেতে বলছিল। আরবীতে যেহেতু “প” উচ্চারণ নেই, এজন্য আপনি দেখবেন আরববা অনেক সময়ই “প” কে “ব” উচ্চারণ করছে। প্রায় আধা ঘন্টা হেটে (ম্যাপ অনুযায়ী ২.২ কি.মি.) মেট্রো স্টেশনের দেখা পেলাম। গরম থাকাতে কষ্ট হচ্ছিল কিন্তু লাভের লাভ যেটা হল, শহরের কিছু অংশ একেবারে কাছ থেকে দেখলাম। এক পর্যায়ে মনে হল ঢাকার গুলিস্তানে আছি! প্রচুর লোকজন, ফুটপাতে অসংখ্য দোকানী, সবাই কেনা কাটা করছে। তা যে মেট্রো স্টেশনে পৌছালাম, সেটার নাম ছিল আসলে “আতাবা”। ১ পাউন্ড (বাংলাদেশী ৬.৭৫ টাকা) দিয়ে টিকেট কাটার সময় যখন “মা’য়াদি” শব্দটি বললাম, স্মার্ট টিকেট সেলার পরিস্কার ইংরেজিতে জানিয়ে দিল, “সা’দাত” স্টেশনে নেমে ট্রেন পরিবর্তন করে “হেলওয়ান” এর দিকের ট্রেনে উঠতে হবে। আমি দ্রুত আমার সাথে থাকে কাগজে শব্দ দু’টো লিখে নিয়ে প্লাটফর্মের দিকে হাটা দিলাম।

সা’দাতে ট্রেন পরিবর্তন করতে গিয়ে দেখি বোর্ডে মা’য়াদি স্টেশন আছে তিনটা! Hadayek El-Maadi, Maadi আর Sakanat El-Maadi। সামনের সিটে বসা ভদ্রলোকদের জিজ্ঞেস করতেই একজন পাওয়া গেল যিনি ইংরেজি জানেন। আর পুরো ট্রেনে যেহেতু আমি ছাড়া আর কোন বিদেশী নেই, সেও আমার সাথে সানন্দে গল্প করা শুরু করল। বলল, মা’য়াদি স্টেশন এলে আমাকে সে বলে দেবে। কথা প্রসংগে সে বলল, তুমি যে হোটেলে থাক তার সামনে থেকেইতো পিরামিডের দিকে মাইক্রোবাস (এটাও এখানকার গণপরিবহন) যায়, তুমি সেটাতে করেই চলে যেতে পার। ভাবলাম, তবে তাই হবে, ট্যাক্সির পেছনে পয়সা খরচ না করে গণ পরিবহনেই উঠে পড়ব। তো পরে যেটা দেখা গেল, শুধু মা’য়াদিই হল আমার স্টেশন। আগের রাতে যেহেতু এই এলাকা চষে বেড়িয়েছি, তাই হোটেলে পৌছাতে খুব একটা বেগ পেতে হল না। 😀

ঝটিকা সফরে আমার কায়রো ভ্রমণ (শেষ পর্ব)

লেখকঃ
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম,
এনজামেনা, চাদ
+২৩৫৯৫১০০৮১৮

Leave a Comment
Share