অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প ট্রেক

২০১৮ সালে প্রথম নেপাল গেছিলাম। সেবার শুধু পোখরা তে ল্যাদ খেয়েছি। তখনি প্রথম শুনি অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প বলে এক খানা ট্রেক করা হয়। তখন থেকে আমার ইচ্ছা ছিল একবার সেখানে যাওয়ার। কারণ গুগলে কিছু ফটো দেখে অড্রিনালিন যা হাই হয়েছিল, আর নামে নি।

২২’ ডিসেম্বর ২০২২

তারপর এই ২০২২ এর ডিসেম্বর। ২ মাস আগে প্ল্যান বানিয়ে, ২২ শে ডিসেম্বর দুর্গাপুরে সন্ধ্যে বেলায় মিথিলা এক্সপ্রেস ধরে, পরদিন রক্সৌলে নামলাম বেলা ১০ টার দিকে, টাঙা করে বীরগঞ্জ এ এসে পোখরা যাওয়ার বাস পেয়ে গেলাম। বাস ছাড়লো ১ টা নাগাদ, আমরা হেলতে দুলতে প্রায় রাত্রি ১১ টা নাগাদ, পোখরা পৌছালাম। আমাদের হোটেল বুক ছিল, ব্যাগ রেখে নেপালি খাওয়ার খেয়ে রেস্ট নিলাম।

২৩’ ডিসেম্বর ২০২২

পরদিন গেলাম ACAP অফিসে পারমিশন করাতে। ৩০ মিনিটের মধ্যে পারমিশন হয়ে গেল, আমরা ব্রেকফাস্ট করে কিছু শপিং করে একটা ক্যাব নিয়ে বেরিয়ে গেলাম নায়াপুলের উদ্দেশ্যে, ২ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছে গেলাম। পরে সেখান থেকে, অন্য একটা শেয়ার ক্যাব ধরে এলাম আমাদের প্রথম পয়েন্ট ঘান্দ্রুক।

২৪’ ডিসেম্বর ২০২২ ঘান্দ্রুক

এখানে এসে একটু খোঁজাখুঁজি করে পেয়ে গেলাম বেশ সুন্দর একটা হোমস্টে, ব্যাগ পত্র রেখে একটু আসে পাশে ঘুরে এলাম। একদল লোকাল লোকজন, আগুনের তাপ নিচ্ছিল, আমরাও একটু হাত গরম করে এলাম। রাত্রে সুন্দর ডিনার করে, একটু আড্ডা মেরে জলদি শুয়ে পড়লাম।

ঘান্দ্রুক

২৫’ ডিসেম্বর ২০২২

পরদিন কুয়াশা কাটতে ফার্স্ট অন্নপূর্নার সোনালী ঝলক দেখে, নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বুঝতে পারলাম যে একদম বেস ক্যাম্পে ভিউ টা কেমন হতে চলেছে। একগাদা ফটো তুলে, ব্রেকফাস্ট করে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের অফিসিয়াল ট্রেক স্টার্ট হলো ঠিক সকাল ৯:৩০ নাগাদ। আজকের টার্গেট লোয়ার সিন্যুয়া।

ছোট ছোট গ্রামের ভিতর দিয়ে হেঁটে চলেছি, পিঠে রুকস্যাক টা থাকায় একটু প্রবলেম হচ্ছিল, আমরা টাইম আর টাকা বাঁচানোর জন্য বেশ কিছু খাবার ক্যারি করছিলাম। আর বেশি খেয়ে নিয়ে হাঁটা টাও একটু চাপের। পাহাড়ি পাথুরে রাস্তা,ছোট ছোট নদী, অনেক অনেক সিঁড়ি পেরিয়ে হেঁটে চলেছি। প্রথম দিনেই পায়ের শ্রাদ্ধ হয়ে যাবে মনে হচ্ছিল।

রাস্তায়, কখনো একটু আধটু দাঁড়িয়ে রেস্ট নিচ্ছি, সঙ্গে কিছু ড্রাই ফ্রুটস, বিস্কিট দিয়ে লাঞ্চ সারলাম। রাস্তা ঘাটে, খাবার জলের অনেক অপশন আছে, কাছে বোতল থাকলে জলের চিন্তা নেই। এভাবে হেঁটে হেঁটে চমরং ঢুকলাম প্রায় ৪:৪৫ নাগাদ। এখানে পারমিট অফিসে, পারমিশন চেক করানোর পর, ওখানকার অফিসার নেত্র শর্মাজির সাথে বেশ কিছু আড্ডা হলো। উনি বললেন, আজ কে আর সিনুয়া না যেতে, কারণ আরো অনেক টাইম লাগবে, অন্ধকার হয়ে গেলে প্রবলেম হতে পারে, তাই তাঁর কথা মতো চমরঙ এ থেকে গেলাম একটা হোমস্টে তে।

ছোট্ট ছিমছাম একটা থাকার রুম, রাত বাড়ার সাথে সাথে, ঠান্ডা বাড়তে লাগল, সন্ধ্যে সন্ধ্যে খেয়ে নিলাম, এমনিও প্রায় ১৮ কিমি হেঁটে আর লাঞ্চ না করে ভালোই খিদে পেয়েছিল, খাবারের অনেক অপশন আছে,আমি এগ ফ্রাইড রাইস খেয়ে শুয়ে পড়লাম।

এখানে ফোন চার্জিং ফ্রী, মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, তবে ওয়াইফাই ছিল, তবে তার জন্য আলাদা টাকা লাগলো, ওই ৭৫ নেপালি টাকা পার ডিভাইস।

২৬’ ডিসেম্বর ২০২২

পরের দিন গরম জলে কফি বানিয়ে, বিস্কুট আর ছাতু দিয়ে ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়লাম। আজকের গন্তব্য, হিমালয়া। একটা ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম, আজকের গল্পঃ ও অনেক টা সেম, সেই ছোট ছোট পাহাড়ি রাস্তা, নদী, অনেক অনেক সিঁড়ি পেরিয়ে যখন হিমালয়া পৌঁছালাম, তখন প্রায় সন্ধ্যে ৬ টা। আজও, ৮ টার মধ্যে ডিনার করে শুয়ে পড়লাম। আজও প্রায়, ২০ কিমি হাঁটা হয়ে গেছে।

২৭’ ডিসেম্বর ২০২২

পরদিন সকাল সকাল সেই একই ব্রেকফাস্ট সেরে হাঁটা শুরু করলাম। রাস্তায় এত ভালো ভালো ভিউ, আর মাঝে মাঝে মাউন্ট মচ্ছপুচ্ছের উঁকি, অন্নপূর্ণার এক এক ঝলক দেখে নিজের ক্লান্তি কাটিয়ে, হেঁটে যাচ্ছি। দুপুর ২ এর দিকে এমবিসি এসে পৌঁছালাম, খেজুর,বিস্কুট, ডার্ক চকলেট দিয়ে লাঞ্চ করে একটু রেস্ট নিয়ে এগিয়ে গেলাম ABC এর উদ্দেশ্যে। আজকে আমাদের স্পিড অনেক কম, কারণ অলরেডি রোজ প্রায় ২০ কিমি হেঁটে হেঁটে পা এর পেশী খুবই টায়ার্ড। কিন্তু আজই পৌঁছাতেই হবে, এমনিও যা ঠান্ডা বাড়ছে, আর কোনো সেকেন্ড অপশনই নেই।

পড়ন্ত বিকেলের কমলা আভা যখন পাহাড়ের উপর আছড়ে পড়ছে, সে এক আলাদাই সৌন্দর্য তৈরি করছে, ছবি তুলতে তুলতে একটু একটু করে হেঁটে পৌঁছালাম এবিসি, তখন সেখানে কেউ নেই, সূর্য পুরো পুরি অস্ত যায় নি তখনও, সেই নমস্তে লেখা বোর্ড টা আমি গুগল সার্চ করে দেখতাম, অফিসে বসে বসে কাজের ফাঁকে এই ছবি দেখে ভাবতাম কবে আমি যেতে পারবো, আদৌ পারবো কি না, কিন্তু আজ কে আমি সেই বোর্ডের সামনে। তখন কেমন অনুভূতি হচ্ছিল, বলে বোঝানো সম্ভব নয়। একটা অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছিল।

অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প

একটু সময় কাটিয়ে, বুঝতে পারলাম ঠান্ডা বাড়ছে সাথে অন্ধকার ও। দেরি না করে এগিয়ে গেলাম এবিসি বেসক্যাম্পের দিকে। ওখানে গিয়ে একটা রুম নিলাম, গোটা বেস ক্যাম্পে গুটি কয়েক ট্র্যাভেলর। তাই রুম পেতে অসুবিধা হলোনা।পুরো বেস ক্যাম্প বরফে ঢেকে আছে, আর প্রচণ্ড ঠাণ্ডা, থার্মোমিটারে -১০°

হট চকলেট খেয়ে একটু আরাম পাওয়া গেল। সন্ধ্যে ৮ টার মধ্যে, ডিনার সেরে নিলাম। আজকে একটু মিক্স পিৎজা, আর ডিম কারি দিয়ে একটু ভাত খেয়ে জলদি জলদি রুমে গেলাম। এখানে খাবার দাম অনেক বেশি, সোলার এনার্জি তে পুরো বেস ক্যাম্প চলে বলে, চার্জিং, ওয়াইফাই, গরম জল সবই পেইড। ডাইনিং রুম থেকে বেরিয়ে দেখি এক আকাশ তারা, আর চাঁদের আলোতে বিরাজমান অন্নপূর্ণা। প্রচণ্ড ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে।আমাকে রীতিমতো দুটো জ্যাকেট, আর দুটো লেপ নিয়ে ঠান্ডা থেকে বাঁচতে হচ্ছিল।

আমি রাত্রি ১০ তার দিকে একবার বাইরে বেরোলাম, পুরো আকাশগঙ্গা যেনো সেখানে নেমে এসেছে। এত পরিষ্কার আকাশ আমি আগে দেখি নি।কিন্তু ঠান্ডায় বেশি ক্ষণ বাইরে থাকতে পারলাম না, রুমে লেপের ভিতরে চলে যাওয়াটাই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য তখন।ডিনার শেষে, এক বোতল গরম জল এনেছিলাম রাত্রে খাওয়ার জন্য, মাঝ রাত্রে উঠে দেখি সেটা বরফ হয়ে গেছে। তাই দুঃখ পেয়ে আবার শুয়ে পড়লাম।

২৮’ ডিসেম্বর ২০২২

সকাল ৫:৩০ এ উঠে পড়লাম, সানরাইজ দেখবো বলে। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে ঠান্ডা তে হাত পা কেঁপে উঠলো। কোনো মতে, গেলাম একদম অন্নপূর্ণার সামনে। ওই বিশাল পর্বতের সামনে আর কিছু নেই, কি অপরূপ দৃশ্য। সূর্যের আলোতে চোখের সামনে রং পাল্টাতে দেখলাম অন্নপূর্নার। প্রথমে কমলা, পরে হলুদ তারপরে সোনালী রঙ। ঠান্ডায় ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেল ইনস্ট্যান্ট। ওখান থেকে আসার ইচ্ছা হচ্ছিল না। কিন্তু ওই ঠান্ডা হাওয়া তে কত ক্ষণ থাকা যায়। চুপচাপ ঘরে ফিরে হট চকলেট খেয়ে একটু দেহে প্রাণ এলো।

এবার সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে যাওয়া। সাহস হচ্ছিল না, কিন্তু প্রকৃতি ডাকলে যেতেই হবে। গিয়ে দেখি, বালতির জল জমে বরফ হয়ে আছে, আমরা বাঙালিরা তো আর যাই করি, টয়লেট পেপার ইউজ করতে পারি না। কোনো মতে ওই বরফ জল ব্যবহার করে যখন বেরোচ্ছি, হাত গুলো ফিল করতে পারছিলাম না। ঘরে এসে হাতমোজা পরে, ১৫ মিনিট লেপের নিচে কাটিয়ে একটু ঠিক হয়েছিল। সে যাইহোক, রোদ ওঠার পর আবার ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আজ থেকে নামার অভিযান শুরু।

একটু একটু মন খারাপ, পা এর অবস্থা আরো খারাপ। কিন্তু নামতে সময় একটু কম লেগেছিল। তাই প্রথম দিনই দোভান অবধি এসে গেছিলাম। রাস্তায় অনেক জনের সাথে দেখা হলো। একটা জিনিস দেখলাম, বাঙালির সংখ্যা অনেক কম। আমরা খুব বেশি হলে ৩-৪ জন বাঙালির দেখা পেয়েছিলাম।

২৯’ ডিসেম্বর ২০২২

সেই রাতটা দোভানে কাটিয়ে, পর দিন ব্রেকফাস্ট করলাম ওখানেই। আমাদের সাথে যে টুকু খাবার ছিল প্রায় শেষ। কিছু রাখা ছিল রাস্তা তে খিদে পেলে। আবার হাঁটা শুরু হলো, আমাদের টিমের একজনের পায়ের ব্যথা বেশ বেড়ে গেছিলো, আমাদের স্পিড ও কমে গেছিলো। তবুও কোনো মতে চমরঙ্ পৌঁছালাম, পারমিট অফিসে চেক আউট করে আবার সেই পুরোনো হোমস্টে তে ফিরে গেলাম। সেদিন একটু একটু বৃষ্টি শুরু হলো। ঠান্ডা টাও বাড়লো, আমরা জলদি ডিনার সেরে শুয়ে পড়লাম।

৩০’ ডিসেম্বর ২০২২

চটজলদি ব্যাগ গুছিয়ে, আমাদের হোস্টকে বিদায় জানিয়ে বেরিয়ে পড়লাম ঝিনুর পথে। চমরঙ্ থেকে পোখরা যাওয়ার দুটো রাস্তা আছে। একটা ঘান্দ্রুক্ হয়ে, যে রাস্তা দিয়ে আমরা জার্নি শুরু করেছিলাম, আরেকটা হচ্ছে ঝিনু হয়ে। আমরা ঝিনু হয়ে ফিরবো কারণ, ওই পথে একটা উষ্ণ প্রস্রবণ আছে।

গত ৫ দিন স্নান করার সাহস হয় নি, আর পা এর ব্যথা তে আমরা গরম জলের একটা পুল পেয়ে প্রায় ৩ ঘন্টা কাটিয়ে ফেললাম। বিকেল গড়িয়ে আসার জন্য আমাদের আবার যাত্রা শুরু হলো, কারণ উষ্ণ প্রস্রবণ থেকে বাস/ক্যাব স্ট্যান্ড প্রায় ৫-৬ কিমি হাঁটা পথ। মাঝে একটা সুন্দর লং ওভার হ্যাং ব্রিজ পড়ে, সেসব পার করে যখন বাস স্ট্যান্ড পৌঁছালাম, দেখি লাস্ট বাস ছেড়ে গেছে ৩০ মিনিট আগে।

কি করবো বুঝতে না পেরে দেখি, আমাদের মতো আরো ৫ জন নেপালি ছেলে মেয়ে ও আমাদের মত বসে আছে। ওদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম, ওরা কিছু লোকাল কে ফোন করে একটা ক্যাবের আয়োজন করছে, আমরা ঠিক করলাম ওদের সাথে আমরাও শেয়ারে উঠে পড়ব। কিন্তু, জানা গেল ওই রুটের ক্যাবে শুধু মাত্র ৮ জন এ যেতে পারবে, এবং ওই ক্যাবে অলরেডি ২ জন আছেন, আমরা বুঝলাম এ যাত্রায় আমাদের যাওয়া হবে না। ক্যাবের ড্রাইভার আসার পর ওনাকে একটু রিকুয়েস্ট করাতে উনি আমাদের নিয়ে যেতে রাজি হলেন। ১০ জন মিলে ক্যাব যেতে শুরু করলো।রাস্তার হালাত খুবই খাস্তা। কোনো মতে হেলে দুলে রাত্রি ৯:৩০ এর দিকে পৌঁছালাম পোখরা।

পোখরা পৌঁছে দেখি, এখানে পুরো পরিবেশ পাল্টে গেছে। সামনেই নিউ ইয়ার, গোটা শহরে যেন উৎসব। পুরো পোখরা তে লোকাল নাচ গান হচ্ছে, রাস্তায় কেনা কাটা, স্ট্রিট ফুডের মেলা লেগে গেছে। চলছে অবিরাম সূরা পান।

আমাদের ভাগ্যে শেষ ৪ দিন ভালো ভাবে খাবার বিশেষ করে ডিম,মাংস জোটে নি। জমিয়ে “কোল্ড ড্রিংস” সহযোগে এক গাদা মাংস ঠুসে আমরা হোটেলে ফিরলাম।

৩১’ ডিসেম্বর ২০২২

আজ কে ২০২২ এর শেষ দিন, সকাল সকাল আলাদাই মেজাজে গোটা শহর। সারাদিন ঘুরে ঘুরে কেটে গেল, অনেক নতুন এক্সপিরিয়েন্স হয়েছে, সেসব পরে বলা যাবে।

১’ জানুয়ারি ২০২৩

ভোর ৫ টাই হোটেল থেকে বেরিয়ে, পৃথিবী বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বীরগঞ্জ এর বাসে উঠে পড়লাম। আগের দিনই রিজার্ভ করে রেখেছিলাম। আমাদের বাস ৬ টা নাগাদ ছাড়লো। ৩০ মিনিট পর, বাসের যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য, অন্য বাসে উঠতে হলো। বুঝতে পারছিলাম বছরের প্রথম দিন খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ৩ জনের ২ খানা সিট পেয়েছিলাম, পাল্টাপাল্টি করে প্রায় বিকেল ৪ টা নাগাদ বীরগঞ্জ এসে পৌঁছালাম।

সেখান থেকে গেলাম রক্সৌল স্টেশন, তারপর লোকাল ধরে সিতামারি স্টেশন। রাত্রি ১১ টায় ট্রেন ধরে ফিরে এলাম নিজের বাসায়। এই ট্রিপে নিজেদের শারীরিক, মানসিক ভাবে অনেক বেশি নিজেকে জানতে পেরেছি। পাহাড়ের এত কাছে এসে যা যা অভিজ্ঞতা হয়েছে টা ভোলার নয়।

কিছু ইম্পর্ট্যান্ট কথা

  • যদি টাকা পয়সার সমস্যা না থাকে, তাহলে ট্রেনে গেলে অবশ্যই এসি তে যাওয়া ভালো।
  • বীরগঞ্জে পৌঁছে, ক্যাশ এক্সচেঞ্জ করে নেওয়া ভালো
  • এন সেল এর সিম নিলে ভালো হয়
  • যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পোখরা যাওয়ার বাসে উঠে পড়ুন
  • SBI এর রূপে কার্ড দিয়ে ক্যাশ তোলা যায়। অল্প ফিজ লাগে।
  • ACAP অফিসে গিয়ে পাসপোর্টের কপি আর ৪ তে পাসপোর্ট সাইজ ফটো আর ১০০০ নেপালি টাকা দিয়ে পারমিশন করতে হবে।
  • পারমিট অফিস সোম থেকে শনি(১২:০০) খোলা।
  • ট্রেকে যেতে হলে ক্যাশ নিয়ে যেতে হবে। UPI চলবে না।
  • শুকনো খাবার, ড্রাই ফ্রুটস, কফি, বিস্কুট, চিকি এসব ক্যারি করা ভালো। খরচ কম হবে। তবে বেশি নিয়ে গেলে, ব্যাগ ভারী হবে, যেটা নিজেকেই বইতে হবে। তবে পোর্টার নিয়ে নেওয়া যায়, কমবেশি ১৪০০০ নেপালি টাকা নেবে টোটাল ট্রেকে।
  • বেশ কিছু ওষুধ নিয়ে নেওয়া ভালো। যেগুলো High Altitude সিকনেস এর সময় কাজে লাগবে।
  • রেইন কোর্ট, আর ভালো শীতের পোশাক, ট্রেকিং পোল, ট্রেকিং জুতো নিলে সুবিধা হবে।
  • হাতে টাইম থাকলে আস্তে আস্তে যাওয়া যায়। কোনো পোর্টার বা গাইড লাগে না। পুরো রাস্তায় মার্কিং করা আছে।
  • যেতে যেতে অনেক গ্রাম পড়বে, সেখানে থাকার আর খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
  • গরম জল, মোবাইল চার্জিং, ওয়াইফাই প্রায় সব জায়গাতেই পেইড। খাবারের দাম altitude বাড়ার সাথে সাথে সমানে বাড়তে থাকবে।

আমাদের শুধু ট্রেক করতে খরচ হয়েছে ১১০০০ রুপীর মতো। আরও কমে করা পসিবল। কিন্তু আমরা একটু বড়লোক পনা করেছি। তবে একটা কথা, যথেষ্ট ফিটনেস থাকা উচিত। এই ট্রেক করার আগে, অন্যান্য ছোট খাটো ট্রেক করে নেওয়া ভালো। শুধু দার্জিলিং, সিকিম ঘুরে এসে I LOVE পাহাড় বলে বেরিয়ে গেলে চাপ আছে। গুড লাক।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ ABC TrekannapurnanepalTrekking