হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভ্রমণ ভিসায় যাতায়াত: বিস্তারিত গাইড

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভ্রমণ ভিসায় যাতায়াত

হিলি স্থলবন্দর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর, যা শুধু বাণিজ্যের জন্যই নয়, ভ্রমণের জন্যও ব্যবহৃত হয়। অনেক বাংলাদেশি নাগরিক ভ্রমণ ভিসায় এই স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারতে প্রবেশ করেন। এই গাইডে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত যাত্রার নিয়ম, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া, এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো।

ভ্রমণ ভিসায় ভারত যাত্রার নিয়ম

ভারতে প্রবেশের জন্য নির্দিষ্ট ভিসা থাকতে হবে। ভ্রমণকারীরা সাধারণত ট্যুরিস্ট ভিসা ব্যবহার করেন, যা ভারতীয় হাইকমিশন থেকে সংগ্রহ করা যায়। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত যেতে চাইলে ভিসা আবেদন করার সময় “Hili Land Port” পোর্ট সিলেক্ট করতে হবে। তবে, সর্বশেষ আপডেট ও নিয়ম সম্পর্কে নিশ্চিত হতে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্র (IVAC) বা ভারতীয় হাইকমিশনের ওয়েবসাইট চেক করা ভালো।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পাসপোর্ট: কমপক্ষে ৬ মাসের মেয়াদ থাকা বাধ্যতামূলক।
ভারতীয় ট্যুরিস্ট ভিসা: ই-ভিসা বা স্টিকার ভিসা হতে পারে।
ফটো আইডি কপি: যেমন, জাতীয় পরিচয়পত্র (ভিসা আবেদনের সময় প্রয়োজন হয়)।
যাত্রার প্রমাণ: ভারত থেকে ফেরত আসার জন্য ট্রেন/বাস/ফ্লাইটের টিকিট থাকা ভালো (ঐচ্ছিক)।
আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণ: ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা আন্তর্জাতিক ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড।
হোটেল বুকিং: ভারতে থাকার জন্য হোটেল বুকিং এর কপি (ঐচ্ছিক)।

হিলি স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া

হিলি স্থলবন্দরে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় পক্ষের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট রয়েছে। ভ্রমণকারীদের নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয়:

বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন:
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ইমিগ্রেশন সিল নিতে হবে।
- কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পরীক্ষা করতে পারে।
ভারতীয় ইমিগ্রেশন:
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করে অনুমোদন দেওয়া হয়।
- স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোন নিয়ম থাকলে তা মেনে চলতে হবে।
- নির্দিষ্ট ফি থাকলে তা পরিশোধ করতে হবে।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে যাতায়াতের সুবিধা ও অসুবিধা

সুবিধা

তুলনামূলক কম ভিড়, ফলে দ্রুত ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা যায়।
পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় সরাসরি প্রবেশ করা যায়।
দিনাজপুর থেকে সহজেই হিলি স্থলবন্দরে যাওয়া যায়।

অসুবিধা

অন্যান্য বড় স্থলবন্দরের তুলনায় কম আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।
ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়ায় মাঝে মাঝে বিলম্ব হতে পারে।
সীমান্ত এলাকায় ট্রান্সপোর্ট অপশন তুলনামূলক কম।

ভ্রমণ সংক্রান্ত টিপস

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় হাতের কাছে রাখুন।
সকাল বেলা ইমিগ্রেশন করতে যান, যাতে কম ভিড় থাকে।
টাকার বদলে ডলার সঙ্গে রাখলে ভালো হয়। হিলি সীমান্তের কাছেই মানি এক্সচেঞ্জের সুবিধা আছে।
ভারতে প্রবেশের পর নিকটবর্তী শহর বালুরঘাট এ যান, সেখান থেকে কলকাতা বা অন্যান্য শহরে যাওয়া সহজ।
অবৈধ দালাল বা কোনো ধরনের অনৈতিক কার্যক্রম থেকে দূরে থাকুন।

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত যাত্রা সহজ ও কম খরচের একটি মাধ্যম, বিশেষ করে যারা দিনাজপুর ও আশপাশের অঞ্চলে থাকেন। তবে ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত সব নিয়মকানুন ভালোভাবে অনুসরণ করাই নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত যাত্রার মূল চাবিকাঠি। পরিকল্পিতভাবে যাত্রা করলে এই স্থলবন্দর দিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে ভারতে প্রবেশ করা সম্ভব।

১১ ফেব্রুয়ারি থেকে আবারো সকল পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছে বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে অবস্থিত দেবতাখুম।