ময়মনসিংহ

জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালা বাংলাদেশের ময়মনসিংহ শহরে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পরিচালিত একটি সংগ্রহশালা যেখানে বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের উল্লেখযোগ্য চিত্রকর্মসমূহ সংরক্ষিত আছে। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সাহেব কোয়ার্টার নলিনী রঞ্জন সরকারের বাড়িতে এ আর্ট গ্যালারীটি অবস্থিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত ময়মনসিংহ শহরের সার্কিট হাউজ সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদকে ঘিরে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন মিউজিয়াম এলাকায় বাঁধ দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একটি পার্ক। প্রতিদিনই সকাল-সন্ধ্যা পর্যন্ত এ পার্কে ঘুরে বেড়ায় শহরবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে আসা লোকজন। এখানে এসে ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবাহমান সুন্দর্যের পাশাপাশি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন এর আঁকা ছবি দেখা সম্ভব।

জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালায় প্রথমে ৭০ টি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল যার বেশিরভাগই ছিল তৈলচিত্র। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে – বিভিন্ন দেশ ভ্রমনকালে শিল্পাচার্যের অঙ্কিত ছবি, গুণটানা, নদী পারাপারের অপেক্ষায় পিতা-পুত্র এবং দুর্ভিক্ষ। বর্তমানে এখানে মোট ৬৩ টি চিত্রকর্ম রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে শিল্পাচার্যের ব্যবহৃত জিনিস এবং তার কিছু স্থিরচিত্র। স্থিরচিত্রগুলো ভবনের দোতলার বারান্দায় শোভা পায়।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের আঁকা

এ ছাড়া ময়মনসিংহ জেলায় বেড়াতে এসে ময়মসিংহের মালাইকারী, গুড়ের সন্দেশ, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাঁটি দই, মুক্তাগাছার মন্ডা, হালুয়াঘাটের সালামের স্পন্স মিষ্টি, নান্দাইলের কাঁচা গোল্লা, ফুলবাড়িয়ার আখের গুড় ও লাল চিনি, গফরগাঁয়ের বেগুন, ভালুকায় সৌদি খেজুর, শীতকালে খেজুরের গুড় ও রস, গরমে কাঠাল, রাজলক্ষী দোকানের সাদা দই, স্পন্স মিষ্টি নিতে ভুলবেন না।

টিকেট মূল্য

শনিবার থেকে বুধবার প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত, শুত্রবার দুপর আড়াইটা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে। ১২ বছর পর্যন্ত শিশুদের জনপতি ২টাকা, সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য জনপতি ৫ টাকা, সার্কভুক্ত দেশের বাহিরের নাগরিকদের জন্য জনপতি ৭৫ টাক ফি নেওয়া হয়।

সময়সূচী

গ্রীষ্মকালীন (এপ্রিল – সেপ্টেম্বর)
শনি থেকে বুধবার: সকাল ১১:৩০ থেকে বিকেল ১৭:৩০
শুক্রবার: দুপুর ০৩:৩০ থেকে রাত ১৯:৩০

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ যেতে সময় লাগে তিন ঘণ্টার মত। বাসের ভাড়া পড়বে ১২০-১৩০ টাকার মধ্যে। ঢাকার মহাখালী থেকে অনেক বাস ছাড়ে ময়মনসিংহ এর উদ্দেশ্যে। এছাড়া কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোনা, শেরপুর, ময়মনসিংহ হয়ে বাস যাতায়াত করে।

রেলপথে রাজধানী ঢাকা থেকে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মোট ৭টি মেইল ট্রেন ময়মনসিংহ আসে। এছাড়া প্রতিদিন ঢাকা থেকে ৩টি লোকাল ট্রেন ময়মনসিংহে আসে। ময়মনসিংহ নেমে অটো রিক্সা করে সোজা চলে যেতে পারেন সংগ্রহশালায় l

কোথায় থাকবেন

ময়মনসিংহ শহরের থাকার মতো উন্নতমানে হোটেল হচ্ছে হোটেল আমির ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল আল হেরা, হোটেল মোস্তাফিজ, সিলভার ক্যাসেল, রিভার প্যালেস (৩৩৮ তালতলা ডোলাদিয়া, খাগডহর, ময়মনসিংহ। মোবাইল: ০১৭১০৮৫৭০৫৪)।

আমির ইন্টারন্যাশনালে এক্সিকিউটিভ ৪ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ৬ হাজার ৩শত টাকা, এসি ডাবল রুম ১৫ শত থেকে ২১ শত টাকা, ননএসি ডাবল ১১শত ১৩ টাকা, সিঙ্গেল ৮শত ৬১টাকা। ঠিকানাঃ ৪৬, ৪৬/এ ষ্টেশন রোড, ময়মনসিংহ। যোগাযোগঃ ০১৭১১১৬৭৯৪৮

হোটেল আল হেরা এসি ডাবল রুম ১২শত থেকে ১৬ টাকা, সিঙ্গেল ১২শত টাকা, ননএসি ডাবল ৮শত টাকা, সিঙ্গেল ৫শত টাকা। ঠিকানাঃ ৩৬/বি টাঙ্কপট্টি, ময়মনসিং। যোগাযোগঃ ০১৫৫২৪৭০৭০০

হোটেল মোস্তাফিজে এসি ডিলাক্সে ২৫শত টাকা, এসি ডাবল ১৭৫০ টাকা, সেমি ডাবল ১৪৫০ টাকা, সিঙ্গেল ১হাজার টাকা, ননএসি ডাবল ১১শত টাকা, সিঙ্গেল ৫শত টাকা। তবে ডাবল রুমে ১৫%, সিঙ্গেল রুমে ১০% ডিসকাউন্ট রয়েছে। ঠিকানাঃ ৬/বি গঙ্গাদাস গুহরোড, ফায়ার সার্ভিসের পশ্চিম পাশে, ময়মনসিংহ। যোগাযোগঃ ০৯১-৬৩৮৭১

আরো কম টাকায় থাকতে চাইলে হোটেল আসাদ, ঈশা খাঁ (মোবাইল: ০১৭২১-১৪৪৯৭৬), নিরালায় (ফোন: ০৯১-৫৪২৮৫) যেতে পারেন।

কোথায় খাবেন

উন্নতমানে খাবার হোটেলের মধ্যে হোটেল খন্দকার, সারিন্দা, ধান সিড়ি, রোম থ্রি, সেভেন ইলেবেন, হোটেল মিনার ও ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব কেন্টিন। এসব হোটেলে সব ধরনের খাবারই পাওয়া যায়।

শহরের ঐতিহ্যবাহী ও পূরোনো হোটেল খন্দকারে শুধুমাত্র দেশীয় খাবার পরিবেশ করা হয়। হোটেলের সত্বাধিকারী খন্দকার শরীফ জানান, জনপ্রতি নিন্মে ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩শত টাকায় দেশীয় ও উন্নতমানের খাবার খেতে পারবেন। এছাড়াও আরো অনেক খাবার হোটেল রয়েছে এ শহরে।

Leave a Comment
Share