টাঙ্গাইল

মধুপুরের রাবার বাগান

টাঙ্গাইলের মধুপুরের পীরগাছা রাবার বাগানে কাঁচা সবুজ রঙের পাতা। সুউচ্চ বৃক্ষের সারি। ঠিক যেন স্কেল দিয়ে মেপে মেপে একই সমান্তরালে লাগানো গাছগুলো। যতদূর চোখ যায় শুধু গাছ আর গাছ। চারদিকে সবুজের সমারোহ। দেখলেই মন ভরে যায়। গাছগুলোর নাম রাবার গাছ। মধুপুরের পীরগাছা রাবার বাগানের এই সৌন্দর্য অকৃত্রিম। দুই ধারে হাজারো গাছ আর এরই মাঝখানে সুবিশাল পথ।

বাগানটির অন্যতম সৌন্দর্য হলো এটি একেক ঋতুতে একেক রকম সাজে সজ্জিত হয়। শীতকালে গাছের সব পাতা ঝরে গিয়ে যেমন রিক্ত হয়, তেমনি বর্ষায় ফিরে পায় নতুন যৌবন। কিছুদূর এগিয়েই চোখে পড়ে বাগানের অফিস।

অফিসের পাশেই রয়েছে গেস্টহাউস। চারদিকে নানা রঙের ফুলের গাছ, তারই মাঝে একটি আধাপাকা ভবন। গেস্টহাউসে অনুমতি সাপেক্ষে থাকার সুযোগও মেলে তাতে। রঙিন চালের ছাউনিতে গেস্টহাউসটি যেন প্রকৃতিরই একটা অংশ। বৃষ্টির দিনে মেলে বৃষ্টিবিলাসের সুযোগ। এমন বর্ষার দিনে এক কাপ চা খেতে খেতে বৃষ্টি দেখার মজাই আলাদা। বাগানের প্রতিটি গাছের পাতা থেকে বৃষ্টি ঝরে পড়ার অপরূপ দৃশ্য আর টিনের গায়ে বৃষ্টি পড়ার শব্দ মিলে যেন ভিন্নধর্মী এক অনুভূতির সৃষ্টি করে। আর বাগানে জোছনা রাতে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। এ সময় ভিন্ন রূপে সাজে বাগানের অপরূপ দৃশ্য।

অফিসের পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে কিছুদূর এগিয়েই দেখা যায় সুবিশাল কারখানা, যেখানে রাবারশিট তৈরি করা হয়। সকালে দুধের মতো সাদা কাঁচা রাবার সংগ্রহ করে জমা করে রাখা হয় বড় বড় হাউসে। সেখান থেকে নানা প্রক্রিয়াজাতকরণ ও মেশিনের ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করা হয় রাবারশিট। এই রাবারশিট শুকানো ও আগুনে তাপ দিয়ে লালচে ভাব না হওয়া পর্যন্ত তাপ দেওয়া হয়। প্রক্রিয়াগুলো সত্যিই অসাধারণ।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা মহাখালী থেকে সরাসরি মধুপুরের বাস রয়েছে। ভাড়া বাসভেদে ২০০-৩০০ টাকা। মধুপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে রাবার বাগান ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বাসস্ট্যান্ড থেকে রাবার বাগানে অটোরিকশা, সিএনজি অথবা মোটরসাইকেলে করে যাওয়া যায়। ভাড়া অটোরিকশায় ২৫-৩৫ টাকা। তবে মোটরসাইকেলে ভাড়া একটু বেশি হলেও বাগানের ভেতর ঘোরার জন্য মোটরসাইকেলই সবচেয়ে ভালো। পুরো বাগান ঘোরার জন্য মোটরসাইকেলে ৩০০-৬০০ টাকা নিতে পারে।

কোথায় থাকবেন

রাবার বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য কিছুদিন থাকতে চাইলে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের পাশেই কিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। ভাড়া কক্ষভেদে ২০০-৫০০ টাকা। তবে বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে বাগানের গেস্টহাউসে থাকার সুযোগ রয়েছে।

এছাড়া টাঙ্গাইলে থাকার জন্য বেশকিছু হোটেল ও গেস্ট হাউজ রয়েছে। এসবের মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হলঃ

১। পলাশ হাউজ/ নাইট গন্ধা রেসিডেনসিয়াল হোটেল, মসজিদ রোড, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৩১৫৪
২। আল ফয়সাল হোটেল রেসিডেনসিয়াল, মসজিদ রোড, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৩৯১৮
৩। হোটেল সাগর রেসিডেনসিয়াল, নিউ মার্কেট রোড, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৪৩০৮
৪। আফরিন হোটেল, মসজিদ রোড, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৯১৬৭৮২৩৮৯
৫। এস এস রেস্ট হাউজ, আকুরাতাকুর পাড়া, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৫১৮০
৬। পল্লী বিদ্যুৎ রেস্ট হাউজ, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৩৩৯০
৭। এলজিইডি রেস্ট হাউজ(সরকারি), টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৪২৬১
৮। সুগন্ধা হোটেল, পুরাতন বাসস্ট্যান্ড, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৬৭৪-৩৪৬৮১৫
৯। নিরালা হোটেল, নিরালা মোড়, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৬১৩৬৩
১০। পিয়াসি হোটেল, নিরালা মোড়, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১১-৩৫২৪৯৩
১১। হোটেল কিছুক্ষন, নিরালা মোড়, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২১-৫৫২১৯
১২। হোটেল আদিত্য(আবাসিক), মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১৬-৭৯৬০৬৫
১৩। হোটেল ড্রিম টাচ (আবাসিক), মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১৭২১৮৭৯৯
১৪। শালবন রেসিডেনসিয়াল হোটেল, মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৭১৩৪৬২১০৩
১৫। ইসলামিয়া গেস্ট হাউজ, মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১৯১৭৫৬৬২৩৪
১৬। ভাই ভাই গেস্ট হাউজ, মধুপুর, টাঙ্গাইল। মোবাইলঃ ০১১৯০৯৭৫৫৩৯
১৭। যমুনা রিসোর্ট লিমিটেড, কালীহাতি, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০৯২৩৯-৭৬০৩২-৪
১৮। এলেঙ্গা রিসোর্ট লিমিটেড রেসিডেনসিয়াল হোটেলস, এলেঙ্গা, কালীহাতি, টাঙ্গাইল। ফোনঃ ০২-৯৮৮৪৩২২

ইয়াজিম ইসলাম পলাশ এর লেখা অবলম্বনে।
Leave a Comment
Share