টাঙ্গাইল

মহেরা জমিদার বাড়ি

মহেরা জমিদার বাড়ি (Mohera Jamidar Palace) টাঙ্গাইল সদর থেকে প্রায় ১৮ মাইল পূর্বে ও ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে আট একরজুড়ে বিস্তৃত। মহেরা জমিদার বাড়ি সভ্যতা আর ঐতিহ্যের এক অমূল্য নিদর্শন। এতো সুন্দর ও সযত্নে সংরক্ষিত জমিদারবাড়ি এদেশে দ্বিতীয়টি নেই বললেই চলে। সঙ্গে আছে ছোট পার্ক, চিড়িয়াখানা, বোট রাইড আর পিকনিক স্পট। ঢাকা থেকে দিনে দিনেই ঘুরে আসা যায় এ জমিদারবাড়ি থেকে।

প্রধান ফটক দুটি। এ ছাড়া এই জমিদারবাড়িতে রয়েছে বিশাল তিনটি প্রধান ভবন। সঙ্গে রয়েছে কাছারিঘর, নায়েব সাহেবের ঘর, গোমস্তাদের ঘর, দীঘি আর তিনটি লজ। বাড়ীর সামনেই আছে বিশাল এক দীঘি নাম বিশাখা সাগর। ভবন গুলোর পিছনে আছে পাসরা পুকুর এবং রানী পুকুর নামে দুইটা পুকুর।

চৌধুরী লজ

প্রথমেই এ ভবন চোখে পড়ে। এর ছাদের দেয়ালটি অপূর্ব কারুকার্যম-িত। সামনে রয়েছে বিশাল সবুজ মাঠ। একটি শহীদ মিনারও চোখে পড়ে, যা পরে সংযোজিত হয়েছে। রোমান ধাঁচে নির্মিত এই ভবন মিষ্টি গোলাপি রঙের।

আনন্দ লজ

সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই ভবনের সামনে রয়েছে বিশাল বাগান আর সিংহদ্বার। বাগানে বাঘ, হরিণ আর বিভিন্ন পশু-পাখির মূর্তি রয়েছে। সেই আমলে জমিদাররা পশু-পাখি পুষতেন। সেই স্মৃতিতেই বুঝি মূর্তিগুলো বানানো।

মহারাজ লজ

সাদা ও নীলের কম্বিনেশনে এই লজ সর্ববৃহৎ স্থাপনা। এতে ১২টি কক্ষ রয়েছে। আছে ঝুলন্ত বারান্দা, যা শুটিং স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আরো আছে মহারাজ লজ, কালীচরণ লজ, রানী মহল। কালীচরণ লজের সামনেই ছিল পূজামণ্ডপ, যার সামনে বসে পূজা করতেন জমিদাররা।

পুরো বাড়িতে পুলিশ ট্রেনিং একাডেমির কার্যক্রম চলে, তাই অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে হয়।

টিকেট মূল্য

মহেরা জমিদার বাড়িতে প্রবেশ মূল্য ৮০ টাকা। বোট রাইডে চড়তে হলে দরদাম করে নেবেন। ছুটির দিন থাকলে দাম বেড়ে যায় অনেক গুণ।

ফোন নাম্বার – 0921-62390

মহেরা জমিদার বাড়ি যাওয়ার উপায়

ঢাকার মহাখালী বাস স্টেশন থেকে বিনিময়, নিরালা, ধলেশ্বরী, ঝটিকা ইত্যাদি বাস যায় টাঙ্গাইল। ভাড়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। এসব বাসে চড়ে নাটিয়াপাড়া বাসষ্ট্যান্ডে নেমে অপেক্ষ্যমান সিএনজি বেবীটেক্সীযোগে (ভাড়া ৭৫ টাকা, শেয়ারে জন প্রতি ১৫ টাকা) ০৩ কিঃমিঃ পূর্ব দিকে মহেড়া জমিদার বাড়ি। মহাসড়কে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার, মহেড়া, টাঙ্গাইল নামে দিক নির্দেশনা ফলক (বিশাল সাইনবোর্ড) আছে। আর যারা উত্তরবঙ্গ থেকে আসবেন তারা যে কোন ঢাকাগামী বাসে টাঙ্গাইল পার হয়ে ১৭ কিঃমিঃ পর নাটিয়াপাড়া বাসষ্ট্যান্ডে নেমে একইভাবে যেতে পারেন।

উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যেকোনো বাসে উঠে ‘নাটিয়াপাড়া বাজার’ নামতে পারেন। নাটিয়াপাড়া বাজার থেকে মহেড়া জমিদার বাড়ীর দূরত্ব ৪ কিলোমিটার।নাটিয়াপাড়া বাজার থেকে সি.এন.জি. পাওয়া যায় মহেড়া জাওয়ার জন্য।

ঢাকা থেকে ট্রেনে যেতে চাইলে মির্জাপুর যাত্রা বিরতি দেয় এমন ট্রেনে উঠতে হবে। কমলাপুর থেকে, সকাল ৬:২০ মিনিটে ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’। দুপুর ২:৪০ মিনিটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস এবং সন্ধ্যা ৭ টায় চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন মির্জাপুর মির্জাপুর যাত্রা বিরতি দেয়। ট্রেনগুলো কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়ার আধাঘন্টা পর বিমানবন্দর যাত্রা বিরতি দেয়। মির্জাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বাসে ‘ধল্লা’/ডুবাইল পুলিশ লাইন রোড যেতে হবে। বাস ভাড়া-১০/১৫ টাকা। রিকশায় যেতে চাইলে,ভাড়া- ১০০ টাকা।

কোথায় খাবেন

মহেরা জমিদার বাড়ির গেটের সাথেই ‘হ্যালো’ নামের দোতলা বিশিষ্ট একটি ক্যান্টিন আছে। এছাড়াও পাশরা পুকুর এবং ঝর্নার সাথে ২ টি ছোট ক্যান্টিন রয়েছে।

কোথায় থাকবেন

আপনি যদি জমিদার বাড়িতে পূর্ণিমা স্নান বা রাত্রীযাপন করতে চান তার জন্য এসি/নন এসি ডাক বাংলোর সুব্যবস্থা আছে।

Leave a Comment
Share