খাগড়াছড়ি

তৈলাফাং ঝর্ণা

তৈলাফাং ঝর্ণাটি (Toilafang Jhorna) খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা উপজেলা সীমানার মধ্যবর্তী একটি গ্রামের কাতালমনি পাড়ায় অবস্থিত। ৫০ ফুট উঁচু ও ২০ ফুটের অধিক এই ঝর্ণার বিস্তৃতি।

তৈলাফাং ঝর্ণাটি যেহেতু একদম গ্রামীণ প্রত্যন্ত এলাকায় সেহেতু এখানে ভালো মানের দোকানপাট পাবেন না। একটিমাত্র দোকান আছে। চা, বিস্কুট খেতে পারবেন। তবে খাবার, সুপেয় পানিসহ অন্যান্য যা লাগে তা শহর থেকে নিয়ে আসাই ভালো। উঁচু পাহাড় থেকে ঝর্ণায় নামার প্রধান ভরসা নিজের হাত ও পা। গাছ, লতাপাতায় অবলম্বন করে সাবধানে নামতে হয়। বৃষ্টিমুখর দিনে বা আগে-পরে গেলে রৌদ্রজ্বল দিনে যাওয়া ভালো। বৃষ্টিতে ভিজা মাটি পিচ্ছিল, নরম হয়ে যায় তাই শক্ত দড়ি নিয়ে নামতে পারলে ভালো।

তৈলাফাং ঝর্ণার পাশেই ছোট-বড় আরও ২টি ঝিরি-ঝর্ণা রয়েছে। তৈলাফাং ঝর্ণার ঠিক বিপরীতে একটু উপরের রাস্তা পেরিয়ে পাথুরে জঙ্গলের শেষে দেখা মিলবে ছোট-বড় ঝর্ণা দুটির। তৈলাফাং হতে দূরত্ব ৫০ মিটারের মতো। ঝিরির দুই পাশেই উঁচু পাথুরে মতো পাহাড়। আছে বড় বড় পাথরখণ্ড, গাছ। পাথুরে দেয়াল বেয়ে নামছে স্রোতধারা।

যাওয়ার উপায়

তৈলাফাং ঝর্ণায় যাওয়ার একাধিক পথ রয়েছে। খাগড়াছড়ি জেলা হতে পানছড়ি উপজেলার মরাটিলা এলাকা পার হয়ে গেলে দূরত্ব কম। পথের শেষদিকে ভয়ংকর দুটি পাহাড় জয় করতে হবে। খাগড়াছড়ি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাহিন্দ্র, পিকআপ, মোটরসাইকেলে সড়কযোগে যাওয়া যায়। পানছড়ি বাজার হতে তবলছড়ি যাওয়ার পথে, মরাটিলার পর প্রিন্সিপালের বাগান থেকে একটু সামনে কাতালমনি পাড়া-ভাইবোনছড়া সংযোগ সড়কে নেমে যেতে হবে। এখান থেকে কাতালমনি পাড়ার দূরত্ব প্রায় ৬/৭ কিলোমিটার। মেঠোপথ। বৃষ্টি হলে হেঁটে যেতে হবে। শুকনো আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল যোগে ৪ কিলোমিটারের বেশি পাড়ি দেয়া যায়।

পিচঢালা সড়ক থেকে হেঁটে ঝর্ণায় পৌঁছাতে ঘণ্টা দুই সময় লাগতে পারে। সংযোগ সড়ক থেকে কাঁচা মেঠোপথ ধরে বৌদ্ধবিহার এলাকায় গিয়ে যে-কাউকে জিজ্ঞেস করলে ঝর্ণায় নামার পথ দেখিয়ে দিবে। এই নামার পথটিই সবচেয়ে ভয়ংকর। সামান্যতম অমনোযোগী হলে ঘটে যেতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

ঝর্ণা লাগোয়া এই পাহাড়ের উপর একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বা বৌদ্ধ বিহার আছে। তাই ঝর্ণা এলাকায় উচ্চ আওয়াজ, হৈ হুল্লোড় করা থেকে বিরত থেকে সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখতে সহযোগিতা করতে হবে। স্থানীয় জনসাধারণের জীবনধারার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রেখে ভ্রমণ উপভোগ করুন।
Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ khagrachharimatirangapanchari