দিনাজপুর

রাজবাড়ী, দিনাজপুর

দিনাজপুর রাজবাড়ী দিনাজপুর শহরের উত্তর-পশ্চিম দিকে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ড মোড় হতে পঞ্চগড় ঠাকুরগাওগামী মহাসড়কের চিরিরবন্দর সংযোগ সড়কের মোড় হতে ১ কিঃমিঃ দূরে দিনাজপুর মৌজায় অবস্থিত।

১৬০৮ হতে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ীটি ছিল বৃহৎ দিনাজপুর জেলার ঐশ্বর্যের প্রতীক। শুরুর দিকে রাজবাড়ীর অবয়ব এমন না থাকলেও ধীরে ধীরে রাজবাড়ী গড়ে ওঠে তিলোত্তমা হিসেবে। ১৯৫১সালে জমিদারী অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইন বাস্তবায়নের ফলে জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ হয়। তখন হতে রাজবাড়ীটি পরিত্যাক্ত হতে শুরু করে। সর্বশেষ জমিদার জগদীশনাথ ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কলকাতায় মৃত্যু বরণ করেন। জমিদারী প্রথা উচ্ছেদের পর হতে রাজবাড়ীর জৌলুস কমতে থাকে। এটি বর্তমানে বিলুপ্ত জমিদারী কীর্তির ধ্বংসাবশেষ মাত্র। রাজবাড়ীর বিভিন্ন স্থাপনাসমূহ হলোঃ আয়নামহল, রাণী মহল, কুমার মহল, আটচালা ঘর, লক্ষ্মী ঘর, আতুর ঘর, রাণী পুকুর, চাঁপা তলার দিঘী, ঠাকুর বাড়ী, কালীয়া জিউ মন্দির।

রাজ বংশের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের কিছু ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরে, কিছু দিনাজপুর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে বাস ও ট্রেন দুই পথেই যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী (Dinajpur) বাসগুলো সাধারণত ছাড়ে গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে। এ পথে নাবিল পরিবহনের এসি বাস চলাচল করে। ভাড়া ৯০০ টাকা। এ ছাড়া হানিফ এন্টারপ্রাইজ- ৮০১৩৭১৪, ৮০১৫৩৬৮,এস আর ট্রাভেলস-৮০১৩৭৯৩, ৮০১৯৩১২,কেয়া পরিবহন-৯০০০৮১২, এস এ পরিবহন-৯৩৩২০৫২, শ্যামলী পরিবহন-৯০০৩৩১, নাবিল পরিবহনের নন-এসি বাসও চলাচল করে এ পথে। ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা। ঢাকা থেকে আসাদগেট, কলেজগেট, শ্যামলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় অথবা গাবতলী হতে নাবিল, বা বাবলু এন্টারপ্রাইজের চেয়ার কোচে করে সরাসরি দিনাজপুর । প্রায় সারাদিন ৩০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা পরপর গাড়িগুলো ছেড়ে যায়। তা ছাড়া উত্তরা হতেও কিছু পরিবহন দিনাজপুর যায়।

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে আন্তঃনগর ট্রেন দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। আর আন্তঃনগর একতা এক্সপ্রেস ছাড়ে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে। ঢাকা থেকে একতা ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস বন্ধ থাকে যথাক্রমে মঙ্গল ও বুধবার। ভাড়া শোভন সিট ১৮৫ টাকা,শোভন চেয়ার ২৫০, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৩৫০, প্রথম শ্রেণি বার্থ ৫৩৫, এসি চেয়ার ৬১৮, এসি বার্থ ৮৯৭ টাকা।

দিনাজপুর শহর থেকে অটোরিকশায় পৌঁছে যাওয়া যায় এ রাজবাড়ীতে।

কোথায় থাকবেন

দিনাজপুর শহরে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল হচ্ছে পর্যটন মোটেল (০৫৩১-৬৪৭১৮)। এ ছাড়া ঢাকায় পর্যটনের প্রধান কার্যালয় থেকেও এ মোটেলের বুকিং দিতে পারেন। ফোন :৯৮৯৯২৮৮-৯১ ।

দিনাজপুরের পর্যটন মোটেলে এসি টুইনবেড ১৫০০ টাকা এবং এসি টুইনবেড ডিলাক্স কক্ষ ১৮০০ টাকা। এ ছাড়া দিনাজপুরের অন্যান্য সাধারণ মানের হোটেলে ১০০-১২০০ টাকায় রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা আছে। কয়েকটি সাধারণ মানের হোটেল হলো— মালদহ পট্টিতে হোটেল ডায়মন্ড (০৫৩১-৬৪৬২৯), নিমতলায় হোটেল আল রশিদ (০৫৩১-৬৪২৫১), হোটেল নবীন (০৫৩১-৬৪১৭৮), হোটেল রেহানা (০৫৩১-৬৪৪১৪), নিউ হোটেল (০৫৩১-৬৮১২২)।

এছাড়া আপনি চাইলে রামসাগরের ভিতরে অবস্থিত বাংলোতেও থাকতে পারেন। এখানে থাকতে হলে স্থানীয় বন বিভাগ থেকে অনুমতি নিতে হয়। একতলা ভবনটিতে তিনটি সাধারণ এবং একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ আছে। প্রতিটি সাধারণ কক্ষের ভাড়া প্রতি রাত ৫০০ টাকা এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষের ভাড়া ১০০০ টাকা। নিজেদেরই খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। রাতের বেলা রামসাগর দীঘির পাড়ে অসাধারন একটি রাত কাটানোর মোক্ষম সুযোগ হবে এটি।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ dinajpurpalacerajbari