মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ, চা বাগানের সবুজের সমারোহে ঘেরা, পাহাড়-টিলার অপরূপ সৌন্দর্যের মাঝে লুকিয়ে আছে এক অপরূপ রত্ন – পদ্মছড়া লেক (Poddochora Lake)। কৃত্রিম এই লেকটি, যেন প্রকৃতির এক অপূর্ব সৃষ্টি, পাহাড়ের বুক চিড়ে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। সবুজের সমারোহ, স্নিগ্ধ বাতাস, আর টলমলে পানির মিশ্রণে পদ্মছড়া লেক যেন এক স্বপ্নের জগত।
কমলগঞ্জ শহর থেকে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান সড়ক ধরে মাত্র ৩০ মিনিটের পথ। পুরো কমলগঞ্জ এলাকা জুড়ে সবুজের সমারোহ, দু’পাতা-এক কুঁড়ির প্রাচুর্য, আর পাহাড়-টিলার অপরূপ সৌন্দর্য। এই উপজেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র মাধবপুর লেকের নাম সবার জানা। কিন্তু মাধবপুর লেকের প্রবেশমুখ থেকে মাত্র ছয় কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত পদ্মছড়া লেক এখনও অনেকের কাছেই অজানা।
কমলগঞ্জের অপরূপা ন্যাশনল টি কোম্পানির (এনটিসি) এই লেকটি এখন বিনোদনের অন্যতম এক স্থান। পদ্মফুল না থাকলেও, লেকের টলমলে পানি, সবুজ পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য, আর চা বাগানের স্নিগ্ধতা মনকে করে তোলে প্রফুল্ল।
পদ্মছড়া লেকের সৌন্দর্য বর্ষব্যাপী উপভোগ করা যায়। বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজন নিয়ে পিকনিক, বেড়ানো, কিংবা শুধুই প্রকৃতির কোলে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য এ লেকটি আদর্শ। সবুজের সমারোহ, স্নিগ্ধ বাতাস, আর টলমলে পানির মিশ্রণে পদ্মছড়া লেক যেন এক স্বপ্নের জগত। লেকের পানি, সুনীল আকাশ, গাঢ় সবুজ পাহাড়, আর চা বাগানের মনোরম দৃশ্য মনকে নিয়ে যায় এক অন্যরকম জগতে।
পদ্মছড়া লেক, প্রকৃতির এক অবদান। এ লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আজই পরিকল্পনা করুন কমলগঞ্জ ভ্রমণের। পদ্মছড়া লেকের অপরূপ সৌন্দর্য আপনাকে বিমোহিত করবে, আর মনে হবে যেন স্বপ্নের রাজ্যে হারিয়ে গেছেন।
পদ্মছড়া লেকের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে, কিভাবে সেখানে পৌঁছাবেন সেটার বিস্তারিত আলোচনা করা যাক:
শ্রীমঙ্গল বা শমসেরনগর থেকে সিএনজি, অটোরিকশা বা স্থানীয় বাস যোগে পদ্মছড়া যাওয়া যায়। শমসেরনগর থেকে পদ্মছড়ার দূরত্ব প্রায় ১০-১২ কিলোমিটার। মাধবপুর লেকের কাছাকাছি হওয়ায় মাধবপুর লেক গিয়ে সেখান থেকেও পদ্মছড়া যাওয়া যায়।
শ্রীমঙ্গল এবং মৌলভীবাজার, দুটি শহরই পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন বাজেটের উপযোগী থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনার পছন্দ এবং বাজেট অনুযায়ী, আপনি বিলাসবহুল রিসোর্ট থেকে শুরু করে সাধারণ হোটেল, এমনকি বন বিভাগের বাংলোতেও থাকতে পারেন।
শ্রীমঙ্গলে, বিলাসবহুল থাকার জন্য গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ সবার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। চা-বাগানের সবুজে ঘেরা এই রিসোর্টটিতে রয়েছে বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধা। আরও কিছু উল্লেখযোগ্য রিসোর্ট হলো টি হেভেন রিসোর্ট, লেমন গার্ডেন রিসোর্ট, বালিশিরা রিসোর্ট, নভেম ইকো রিসোর্ট ইত্যাদি। এসব রিসোর্ট প্রকৃতির কোলে বিলাসবহুল থাকার সুবিধা দিয়ে থাকে যা পর্যটকদের এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়।
যারা একটু কম বাজেটে থাকতে চান, তাদের জন্য শ্রীমঙ্গলে রয়েছে হোটেল গ্র্যান্ড, হোটেল গোল্ডেন টিউলিপ, এবং হোটেল সুরমা রিজেন্সি ইত্যাদি। হোটেল গ্র্যান্ড শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, যা যাতায়াতের জন্য সুবিধাজনক। হোটেল গোল্ডেন টিউলিপ আরামদায়ক থাকার জন্য একটি ভালো বিকল্প। আর হোটেল সুরমা রিজেন্সি বাজেট বান্ধব একটি হোটেল।
মৌলভীবাজার শহরে, হোটেল হলি ইন, হোটেল পায়েল, এবং হোটেল সোনার বাংলা উল্লেখযোগ্য। হোটেল হলি ইন শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং ভালো মানের সুবিধা দিয়ে থাকে। হোটেল পায়েল বাজেট বান্ধব একটি হোটেল। আর হোটেল সোনার বাংলা আরামদায়ক থাকার জন্য একটি ভালো বিকল্প।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের রেস্ট হাউসেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও এটি মূলত সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য সংরক্ষিত, তবে অনুমতি সাপেক্ষে অন্যান্য লোকজনও এখানে থাকতে পারেন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:
Leave a Comment