নওগাঁ

পাহাড়পুর জাদুঘর

দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বৌদ্ধ বিহার পাহাড়পুর (Paharpur Buddhist Vihara) যা নওগাঁ জেলার বদলগাছী উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১০ কিমি উত্তরে অবস্থিত। সুবিখ্যাত পালরাজ ধর্মপাল সম্ভবত এই বিহারটি তৈরি করেছিলেন। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ষাটের দশকে এখানে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে যা পাহাড়পুর জাদুঘর (Paharpur Bihar Museum) নামে পরিচিত। ১৯৯৪ সালে পুরাতন জাদুঘরের পরিবর্তে একটি নতুন জাদুঘর ভবন তৈরি হয়। বিহার ও এর সংলগ্ন অঞ্চল হতে সংগৃহীত প্রত্ননিদর্শন উপস্হাপন করা হয়। এটি চার গ্যালারি বিশিষ্ট একটি জাদুঘর। এ জাদুঘরে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিদর্শন হলো – একটি মাঝারি আকারের ব্রোঞ্চের তৈরি বৌদ্ধের আবক্ষ অংশ, পোড়ামাটির ফলক, অলংকৃত ইট, পাথরের মূর্তি, পোড়ামাটির তৈজসপত্র ইত্যাদি। পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের উত্তর বাহুর প্রবেশ পথের সামনে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত একটি পুকুর ছিল। ১৯৮৪-৮৫ সালের খননে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রথম নির্মাণ যুগের পরবর্তী আমলে এ পুকুর খনন করা হয় এবং এসময় এ অংশের সিঁড়িটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে পুকুরটি ভরাট করে দেয়া হয়। খনন কালে ১২৫ টি মাটির পাত্রে খলিফা হারুন আল রশিদের শাসনামলের রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া গেয়েছিল, সেগুলো এই জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

পাহাড়পুর জাদুঘর এ সংরক্ষিত উল্লেখযোগ্য মূর্তি

বেলে পাথরের চামুন্ডা মূর্তি, লাল পাথরের দন্ডায়মান শীতলা মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণুর খন্ডাংশ, কৃষ্ণ পাথরের দন্ডায়মান গণেশ, বেলে পাথরের কীর্তি মূর্তি, দুবলহাটির মহারাণীর তৈলচিত্র, হরগৌরীর ক্ষতিগ্রস্থ মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের লক্ষ্ণী নারায়নের ভগ্ন মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের উমা মূর্তি, বেলে পাথরের গৌরী মূর্তি, বেলে পাথরের বিষ্ণু মূর্তি, নন্দী মূর্তি, কৃষ্ণ পাথরের বিষ্ণু মূর্তি, সূর্য মূর্তি।

পাহাড়পুর জাদুঘর কখন খোলা থাকে

  • পাহাড়পুর জাদুঘর এ ঢোকার টিকেট ১০০ টাকা।
  • এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত – সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৬ টা (মঙ্গল থেকে শনি) এবং দুপুর ২ঃ৩০ টা থেকে বিকেল ৬ টা পর্যন্ত (সোমবার)
  • অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত – সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা (মঙ্গল থেকে শনি) এবং দুপুর ২ঃ৩০ টা থেকে বিকেল ৫ টা (সোমবার)

পাহাড়পুর জাদুঘর কিভাবে যাবেন

দেশের যেকোন প্রান্ত হতে নওগাঁ শহরে এসে নওগাঁ বালুডাংগা বাস টার্মিনাল হতে সরাসরি বাসযোগে ঐতিহাসিক পাহাড়পুর জাদুঘর যাওয়া যায়। আনুমানিক দূরত্ব আনুমানিক ৩২ কিঃমিঃ এবং বাসভাড়া- ৩০- ৪০ টাকা। অথবা দেশের যেকোন প্রান্ত হতে জয়পুরহাট শহরে এসে বাস অথবা অটোরিক্সা নিয়ে পাহাড়পুর জাদুঘর চলে যেতে পারবেন। জয়পুরহাট হতে পাহাড়পুর জাদুঘর এর দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার।

ট্রেন যোগে জয়পুরহাটের জামালঞ্জ ষ্টেশনে নামলে এখান হতে পাহাড়পুর জাদুঘর যেতে চাইলে আপনাকে ভ্যান অথবা অটোরিক্সা নিতে হবে। জামালগঞ্জ হতে পাহাড়পুর জাদুঘর এর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার।

ট্রেনের সময়সূচি এখানে দেখে নিন
(Bangladesh Railway/Train Time Schedule)

কোথায় থাকবেন

জনসাধারণের জন্য পাহাড়পুরে থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। দিনে যেয়ে দিনেই ফিরে আসতে হবে অথবা উপজেলা সদর/জেলা সদরে থাকা যাবে। তবে ভিআইপিদের থাকার জন্য নিকটে রেস্টহাউস আছে। নওগাঁয় থাকার জন্যে কয়েকটি হোটেল হলো – হোটেল ফারিয়াল, হোটেল অবকাশ, হোটেল রাজ, হোটেল যমুনা, হোটেল প্লাবণ, মুক্তির মোড়ে হোটেল আগমনী, হোটেল সরণি ও মোটেল চিসতী।

Leave a Comment
Share