ঢাকা

নভোথিয়েটার

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ঢাকার বিজয় সরণী এলাকায় ৫.৪৬ একর জমির উপর ১২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের একমাত্র প্ল্যানিটেরিয়াম ‘‘ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার ’’ (Novotheatre) যা মাওলানা ভাসানী নভোথিয়েটার নামেও পরিচিত। বিনোদনমূলক শিক্ষা আয়োজনের মাধ্যমে জনসাধারণের মনে ইতিবাচক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার মাধ্যমে সমাজ হতে কুসংস্কার ও অন্ধ বিশ্বাস দূরীকরণ এবং তরুণ প্রজন্মকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করে গড়ে তোলাই এই নভোথিয়েটারের উদ্দেশ্য। নভোথিয়েটারটি উদ্বোধন করা হয় ২০০৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। এটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ১৩০ কোটি টাকা। নভোথিয়েটারের কেন্দ্রে ১৫০ টি প্রজেক্টর ব্যবহার  করে মাল্টিপল ইমেজের সমন্বয়ে একটি কৃত্রিম মহাকাশ তৈরি করা হয়েছে। নভোথিয়েটারে ৫ টি লেভেল রয়েছে। এর মধ্যে মাটির উপরে দুইটি লেভেল এবং নিচে ৩টি লেভেল । ভবনটির দুটি ভূগর্ভস্থ ফ্লোরে দেশবিদেশের খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও গবেষকদের ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত রয়েছে।

বিজ্ঞান সহায়ক এ নভোথিয়েটার এ সম্পূর্ণ বিনোদনের মাধ্যমে মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করে তোলার জন্য প্রদর্শিত হচ্ছে বিস্ময়কর ছবি। মনে রাখার মতো প্যানো – হেমিসফারিক প্রক্ষেপণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখানো হচ্ছে প্লানেট শো –  জার্নি টু ইনফিনিটি। ড. বিল গুস – এর অসাধারণ সৃষ্টি ‘জার্নি টু ইনফিনিটি’ ছবিতে জিএসএস হেলিয়স এবং অ্যাস্ট্রোভিশন – ৭০ যৌথভাবে দর্শকদের নিয়ে যায় এক ভিন্ন জগতে। অনন্য সে যাত্রাপথে বিস্ময়কর শব্দ ও ছবির সম্মিলন ঘটে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রক্ষেপণ যন্ত্রের অনিন্দ্যসুন্দর বর্ণিল আলোকচ্ছটা, অ্যাস্ট্রোভিশন ছবি এবং স্কাইক্যান ভিডিও পৌছে দেয় সৌরমন্ডলে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে। সেখান থেকে দেখা যায় মহাকাশের বিস্তৃত সীমা। খুব কাছ থেকে দেখা যায় তারার মৃত্যু এবং এগুলোর কোনো – কোনোটির কৃষ্ণগহ্বরে  হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। সূর্যের বুকে আগুনের সাগর। সূর্যের প্রচন্ড তাপে দগ্ধ ক্ষতবিক্ষত বুধগ্রহের অবয়ব। দেখা যায় শনির বলয় কিংবা গ্রহরাজ বৃহস্পতি। অবিশ্বাস্য সে আলো ও শব্দের কারসাজি না দেখলে বিশ্বাস করার মতো নয়। শূন্যে ভেসে ভেসে দেখা যায় আমাদের সৌরজগতের সকল গ্রহ ছায়াপথসহ বিস্ময়কর সৃষ্টিপ্রক্রিয়া। অন্যান্য স্পেস থিয়েটারের মতো ভাসানী নভোথিয়েটার জ্যোতিবিজ্ঞানকে তুলে ধরার পাশাপাশি জীববিজ্ঞান,ইতিহাস, শিল্প,ভূগোল, নৃবিজ্ঞানের বিভিন্ন দিকের সাথে এর যোগসূত্র স্থাপন করেছে।

নভোথিয়েটারের সময়সূচী

সাপ্তাহিক বন্ধ – বুধবার।

প্রদর্শনীর সময় (শনি – মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার): সকাল ১১.০০ টা, দুপুর ১.০০ টা, বিকাল ৩.০০ টা, বিকেল ৫.০০ টা এবং সন্ধ্যা ৭.০০ টায়।
প্রদর্শনীর সময় (শুক্রবার): সকাল ১১.৩০ টা, বিকাল ৩.০০ টা, বিকেল ৫.০০ টা, সন্ধ্যা ৭.০০ টায়।

টিকেট মূল্য

প্রবেশ মূল্য – ১০০ টাকা। তবে ২ বছরের নিচে বাচ্চার টিকিটের প্রয়োজন নেই। দর্শনার্থীগণ তিন দিনের অগ্রীম টিকেট ক্রয় করতে পারবেন। টেলিটক মোবাইল ফোন-এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার-এর ই-টিকেট ক্রয় করা যাবে। থিয়েটারের ভিতর একটি রাইড রয়েছে। নাম রাইড সিমুলেটর। এই রাইডে প্রতি ৫ মিনিটের জন্য ২০ টাকার টিকেট সংগ্রহ করতে হয়।

কোথায় অবস্থিত

রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও বিজয় সরণীর মোড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার অবস্থিত যা একসময় ভাসানী নভোথিয়েটার নামে পরিচিত ছিল।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে সিএনজি, বাস, ট্যক্সি করে এখানে যাওয়া যাবে। অথবা যে কোন উপায়ে ফার্মগেট অথবা জিয়া উদ্যানের সামনে যেয়ে পায়ে হেঁটেও নভোথিয়েটারে পৌছানো যাবে।

যোগাযোগের ঠিকানা

বিজয় স্বরণী, তেজগাঁও, ঢাকা।
এর পশ্চিম পাশে সামরিক জাদুঘর রয়েছে। 
প্রতিষ্ঠানটির ফোন নম্বর – ৯১৩৯৫৭৭, ৯১৩৮৮৭৮, ৮১১০১৫৫, ৮১১০১৮৪
ওয়েব সাইটঃ www.novotheatre.gov.bd

নভোথিয়েটার নিয়ে কিছু প্রশ্ন এবং তাঁর উত্তর

নভোথিয়েটারের ভিতরে খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে?

না, নভোথিয়েটারের ভেতর খাবার নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না।

প্রতিটি শো কত মিনিট ব্যাপী হয়?

৩০ মিনিটের অথবা ১০ মিনিটের।

নভোথিয়েটারের সাপ্তাহিক বন্ধ কবে?

বুধবার।

নভোথিয়েটারের শো এর সময়সূচী কি বা কখন কখন শো হয়?

সকাল ১০ঃ৩০, দুপুর ১২ঃ০০, দুপুর ২ঃ০০, বিকেল ৩ঃ৩০, বিকেল ৫ঃ০০, সন্ধ্যা ৬ঃ৩০
শুক্রবারের – সকাল ১০ঃ০০, সকাল ১১ঃ৩০, দুপুর ২ঃ৩০, বিকেল ৪ঃ০০, বিকেল ৫ঃ৩০ এবং সন্ধ্যা ৭ঃ০০

Leave a Comment
Share