কক্সবাজার

হিমছড়ি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১২ কিলোমিটার দক্ষিনে অবস্থিত হিমছড়ি পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে এ সমুদ্র সৈকতের নাম হিমছড়ি। এখানকার সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজারের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নির্জন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। এর সৌন্দর্যও কোনো অংশে কম নয়। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হলো হিমছড়ি যত না সুন্দর তারচাইতে সুন্দর ও রোমাঞ্চকর হল কক্সবাজার থেকে এ সৈকতে যাওয়ার পথটি। এক কথায় অসাধারন, কাব্যক, স্বপ্নের মত মত সুন্দর। একপাশে বিস্তৃর্ন সমুদ্রের বালুকা বেলা আর এক পাশে সবুজ পাহাড়ের সাড়ি। মাঝে পিচ ঢালা মেরিন ড্রাইভ। এমন দৃশ্য সম্ভবত দেশের আর কোথাও পাওয়া যাবে না। কেউ কক্সবাজার এলো অথচএই পথ ধরে ছুটলো না তার পুরো ভ্রমনই মাটি। পাহাড়ে উঠলে চোখের সামনে ভাসবে নীল দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া বিশাল সমুদ্র। হিমছড়ির পাহাড়ের হিমশীতল ঝরনা গুলো বেশ আকর্ষণীয়। ছোট ছোট ঝর্না আপন মনে ঝরে পরছে পাহাড়ের গায়ে ছূটে যাচ্ছে সাগরের দিকে।

হিমছড়িতে একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্র আছে। টিকেট কেটে এখানে ঢুকতে হয়। ভীতরের পরিবেশটা বেশ সুন্দর। পাহাড়ের উপরে আছে অনেকগুলো বিশ্রামাগার। প্রায় ২ শতাধিক সিড়ি মাড়িয়ে উপরে উঠতে হয়। কষ্টটা মুহুর্তেই ভুলে যাবেন যখনপাহাড়ের চুড়া থেকে কক্সবাজারের পুরো সমুদ্র সৈকতটা এক পলকে দেখতে পাবেন। দুলর্ভ সে দৃশ্য। এখানে একটি ছোট ঝর্না রয়েছে। ঝর্নাটি ছোট কিন্তু বর্ষামৌসুমে এটি দারুন রূপ ধারন করে।

যারা হৈ হুল্লুর পছন্দ করেন, বন্ধুদের নিয়ে উল্লাস করতে ভালবাসেন তাদের জন্য খোলা ছাদের জিপ উত্তম বাহন হিমছড়ি যাবার জন্য। ক্ষিপ্র গতিতে যখন জিপছুটে চলে খোলা জিপের উপর দাড়িয়ে দুপাশে তাকালে মনে হবে যেন স্বপ্নে দেশে ভেসে যাচ্ছেন। এটি হতে পারে আপনার জীবনের সেরা অভিজ্ঞতা। আর যারা একটুশান্ত, ভদ্রভাবে পরিবার কিংবা স্ত্রীকে নিয়ে যেতে চান হিমছড়ি তাদের জন্য রিক্সাই উত্তম বাহন। দুপুরের রোদ কমে গেলে রওনা হতে হবে। পথ চলতে হবে কক্সবাজারের নানা চিংড়ি হ্যাচারীর মাঝখান দিয়ে । রাস্তার একপাশে থাকবে উচু পাহাড় আরেক পাশে সাগর। নানা রকম পাখির কলতান শুনতে শুনতে আপনি রোমাঞ্চিত হবেন। এই রাস্তাটি সেনা বাহিনীর তৈরি করা। যাবার পথে সেনাবাহীর একটি ক্যাম্প।

টিকেট মূল্য

হিমছড়ি ইকোপার্কে প্রবেশের জন্য ২০/- টাকার টিকেট কাটতে হবে।

হিমছড়ি কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সৗদিয়া, এস আলম এর মার্সিডিজ বেঞ্জ, গ্রিন লাইন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, এস.আলম পরিবহন, মডার্ন লাইন, শাহ্ বাহাদুর, সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন বাসে সব সময় কক্সবাজার যাওয়া যায়। এসি, নন এসি বাস রয়েছে। ভাড়া পড়বে ৯০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে।

যদি ট্রেনে যেতে চান, তাহলে কমলাপুর থেকে উঠতে হবে, নামতে হবে চট্টগ্রাম। চট্টগ্রাম থেকে তারপরে আপনাকে কক্সবাজার যেতে হবে।

বিমানেও মাত্র ৪৫ মিনিটে কক্সবাজারে যাওয়া যায়। নিয়মিত কক্সবাজারে নভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, ইউনাইটেড এয়ার ওয়েজসহ অন্যান্য বিমান আসা যাওয়া করে। এক্ষেত্রে ভাড়া হবে ৬৫০০-৮০০০ হাজার টাকা।

কক্সবাজার সৈকত থেকে সবসময়ই খোলা জীপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশ্যে। জনপ্রতি ভাড়া ৭০-১০০ টাকা। আর রিজার্ভ নিলে লাগবে ১৪০০-১৬০০ টাকা। এছাড়া রিকশা করেও যাওয়া যায় হিমছড়িতে। যাওয়া আসার ভাড়া লাগবে ৩০০-৩৫০ টাকা। আর ব্যাটারি চালিত রিকশায় গেলে যাওয়া আসার ভাড়া পড়বে ৫০০-৬০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

আপনাকে থাকতে হবে কক্সবাজারের কোন একটি হোটেলে। কক্সবাজারে রয়েছে পর্যটকের জন্য সাড়ে ৪ শতাধিক আবাসিক হোটেল মোটেল, রিসোর্ট এবং কটেজ।  ঢাকা থেকেই ফোন দিয়েই বুকিং দিতে পারেন।

বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন কর্তৃক পরিচালিত মোটেল শৈবাল (ফোন -০৩৪১-৬৩২৭৪)
তারকা মানের সিগাল হোটেল (ফোন নং-০৩৪১-৬২৪৮০-৯১)
হোটেল সি-প্যালেস    (ফান নং-০৩৪১-৬৩৬৯২, ৬৩৭৯২, ৬৩৭৯৪, ৬৩৮২৬)
হোটেল সি-ক্রাউন (০৩৪১-৬৪৭৯৫, ০৩৪১-৬৪৪৭৪, ০১৮১৭ ০৮৯৪২০)
হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল (০৩৪১-৬২৮৮১-৮৫     ৬২৮৮১-৮৫)
হোটেল ওসান প্যরাডাইস লি. (০১৯৩৮৮৪৬৭৫৩) উল্লেখ্যযোগ্য।

এখানে এক রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা দামের কক্ষ। যারা থাকার জন্য এত খরচ করতে চাচ্ছেননা, তাদের জন্য কমমূল্যে থাকার হোটেলও রয়েছে। হোটের সীগালের পিছনে রোডে অর্থাৎ কলাতলি রোডের হোটেলগুলোতে মাত্র ৫০০ টাকাতেও থাকা যায়।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ Cox's Bazarhimcharihimchori