রংপুর

রংপুরের হাঁড়িভাঙা আম

বাংলাদেশের একমাত্র আশ বিহীন আমের নাম হচ্ছে রংপুরের হাড়িভাঙ্গা (Haribhanga) আম। বিশ্বখ্যাত, স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হাঁড়িভাঙা আম বদলে দিয়েছে রংপুরের পদাগঞ্জের অর্থনৈতিক ভাগ্য। হাঁড়িভাঙা আমটির ‘ইতিহাসের’ গোড়াপত্তন করেছিলেন নফল উদ্দিন পাইকার নামের এক বৃক্ষবিলাসী মানুষ। ৪৫ বছর আগে মারা যান তিনি। তিনিই প্রথম জনসম্মুখে এনেছিলেন এই আম। শুরুতে এর নাম ছিল মালদিয়া (Maldia)। নফল উদ্দিন পাইকারের ইতিহাস সৃষ্টিকারী হাঁড়িভাঙা আমের মাতৃগাছটি আজও ইতিহাসের অংশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে রংপুরের মিঠাপুকুরের খোড়াগাছের তেকানী গ্রামে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে গাছটি সংরক্ষণের দাবি তোলা হয়েছে।

একটি মাত্র মা-গাছ থেকে হাজার হাজার কলম তৈরী করে হাড়িভাঙ্গার বীজ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিশ্বসেরা আম, হাড়িভাঙ্গা তার নাম। রংপুরের শত শত মানুষ এই হাড়িভাঙ্গা আম চাষে করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। হাড়িভাঙ্গা আম দেখতে সাধারণত কিছুটা লম্বাটেসহ গোলাকৃতির এবং কালচে সবুজ রংয়ের । পাকলে কিছুটা লালচে রং ধারণ করে। হাড়িভাঙ্গা আম এক একটি ২০০-৫০০ গ্রাম হয়ে থাকে। হাড়িভাঙা আম ২০ জুনের পর বাজারে পাওয়া যায়। সুগন্ধী, অতি সুমিষ্ট, আঁশহীন এই জাতটি মুখে নিলেই মনে হয় অমৃত, পুষ্ট আম বেশী দিন অটুট থাকে। চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না। ঢাকার আম বাজারেও হটকেক হিসেবে হাড়িভাঙ্গা এখন বেশ সমাদৃত।

হাঁড়িভাঙা আমের নামকরন

তেকানী ও এর আশপাশের এলাকা খিয়ারী মাটির। তা ছাড়া বরেন্দ্রপ্রবণ অঞ্চল হওয়ার কারণে লাগানো গাছে পানি দিতে হতো সব সময়। পাইকার নফল উদ্দিনও সারা দিন বিভিন্নভাবে ব্যবসায় বাণিজ্য ও কাজে কামে থাকতেন। সে কারণে ওই আমগাছটির নিচে তিনি মাটির হাঁড়ি দিয়ে ফিল্টার বানিয়ে তাতে সারা দিন পানি দিতেন। এরই মধ্যে একদিন রাতে কে বা কারা ওই মাটির হাঁড়িটি ভেঙে ফেলেন। ওই গাছে বিপুল পরিমাণ আম ধরে। সেগুলো ছিল খুবই সুস্বাদু। সেগুলো বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে গেলে লোকজন ওই আম সম্পর্কে জানতে চায়। তখন নফল উদ্দিন মানুষকে বলেন, ‘যে গাছের নিচের হাড়িটা মানুষ ভাঙছিল সেই গাছেরই আম এগুলা।’ তখন থেকেই ওই গাছটির আম ‘হাড়িভাঙ্গা আম’ নামে পরিচিতি পায়। এটি কাঁচায় ছালসহ খেলেও মিষ্টি লাগে। এখনো ইতিহাস ও কালের সাক্ষী হয়ে আমগাছটি আছে তেকানী গ্রামে। দ্রুত গাছটি বেড়ে উঠে এবং বছর তিনেকের মাথায় সেই গাছে আম ধরে। সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় বিক্রিও হয় প্রচুর। ফলে ওই গাছ থেকে জোড়াকলম করার হিড়িক পড়ে যায়। এলাকার মানুষ ওই গাছ থেকে জোড়াকলম নিয়ে লাগাতে থাকেন। গড়ে উঠতে থাকে বাগানের পর বাগান। বর্তমানে হাঁড়িভাঙ্গা আমের এই গাছটির বয়স ৬৩ বছর।

রংপুরের হাঁড়িভাঙা আমের মাতৃগাছ।

কিভাবে যাওয়া যায়

ঢাকার গাবতলী (Gabtoli), কল্যাণপুর ও মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস (Bus) রংপুরের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। গাবতলী,কল্যাণপুর ও মহাখালী সকল টার্মিনালের বাসগুলো সাভার হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে রংপুর যাতায়াত করে। ভাড়া পড়বে ৫৫০-৯০০ টাকা। রংপুর থেকে আমের এলাকা মিঠাপুকুর উপজেলা যেতে হবে।

  • গ্রিনলাইন পরিবহন (Greenline): +৮৮০-২-৯১১২২৮৭, ৯১৩৩১৪৫, ০১৭-৩০০-৬০০০৬
  • টি আর ট্র্যাভেলস (TR Travels): ০১১৯-১৮৬৩৬৮৯, ০১১৯-১৮৬৩৬৯১, ০১১৯-৮৬৩৬৭৩
  • এস আর ট্র্যাভেলস (SR Travels): কল্যাণপুর – ০১৭১১-৩৯৪৮০১, ৯০৩৩৭৯৩, গাবতলি – ৯০৩১২২৬, মহাখালি – ০১৫৫-২৩১৫৮৩১, উত্তরা – ০১৭১১-৩৯৪৮০৪
  • মীম পরিবহনঃ গাবতলি – ০১৯১১-০১৩৬৯৪, ০১৭৩৪-৪২২৯৭১
  • আলহামরা ট্র্যাভেলসঃ গাবতলি – ৮৮-০২-৯০০৫৬১২, ০১৭২১-৮০২০৩১
  • কুড়িগ্রাম পরিবহনঃ ০১৯২৪-৪৬৯৪৩৭, ০১৯১৪-৮৫৬৮২৬

রংপুরে কোথায় থাকবেন

রংপুর (Rangpur) শহরে থাকার জন্য বেশকিছু হোটেল (Hotel) / মোটেল (Motel) রয়েছে।

  • পর্যটন মোটেলঃ ০৫২১-৬২১১১
  • হোটেল নর্থভিউ : ০৫২১-৫৫৪০৫, ৫৫৪০৬
  • হোটেল কাশপিয়াঃ +৮৮০৫২১-৬১১১১, +৮৮০১৯৭৭-২২৭৭৪২
  • হোটেল গোল্ডেন টাওয়ারঃ +৮৮০৫২১-৬৫৯২০
  • দি পার্ক হোটেলঃ +৮৮০৫২১-৬৫৯২০
  • হোটেল তিলোত্তমাঃ +৮৮০৫২১-৬৩৪৮২, ০১৭১৮৯৩৮৪২৪
Leave a Comment
Share