নীলফামারী

চিনি মসজিদ

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর বাংলাদেশের প্রাচীন শহরগুলোর মধ্যে একটি। এই শহরের প্রাচীন সৌন্দর্যের স্থাপত্য নিদর্শন হচ্ছে সৈয়দপুরের চিনি মসজিদ যা অনেকের কাছে চীনা মসজিদ নামে বেশি পরিচিত। মসজিদটি নীলফামারী সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে সৈয়দপুরে অবস্থিত।

১৮৬৩ সালে হাজী বাকের আলী ও হাজী মুকু ইসলামবাগ ছন ও বাঁশ দিয়ে একটি মসজিদ নির্মান করেন। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সহায়তায় টিন দিয়ে এটি রূপান্তরিত করা হয়। এলাকার মানুষেরা মাসিক আয়ের একটি অংশ দিয়ে মসজিদের জন্য ফাণ্ড গঠন করে। পরবর্তীতে শঙ্কু নামের এক হিন্দু ব্যক্তি দৈনিক ১০ আনা মজুরীতে মসজিদ নতুনভাবে নির্মান শুরু করেন। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে তাকে সাহায্য করতে থাকেন। মসজিদের গাত্রে চিনামাটির থালার ভগ্নাংশ, কাঁচের ভগ্নাংশ বসিয়ে ইট ও সুরকি দিয়ে নির্মান কাজ করা হতে থাকে। এই পদ্ধতিকে বলা হয়ে থাকে চিনি করা বা চিনি দানার কাজ করা। এ থেকেই এই মসজিদের নাম চিনি মসজিদ বা চীনা মসজিদ। চীনা মাটির থালার ভগ্নাংশ দিয়ে গোটা মসজিদ মোড়ানো বলে একে অনেকেই চীনা মসজিদও বলে থাকে। আর এই চিনামাটির তৈজসপত্র নিয়ে আসা হয়েছিল কলকাতা থেকে। মসজিদ নকশা করেন মো. মোখতুল ও নবী বক্স। মসজিদের অনন্য কারুকার্যে সত্যিই মুগ্ধ হতে হয়। ফুলদানি, ফুলের ঝাড়, গোলাপফুল, একটি বৃন্তে একটি ফুল, চাঁদ তারা মসজিদের গাত্রে খঁচিত রয়েছে। এছাড়াও মুগ্ধ হতে হয় তত্‍কালিন আরবীয় ক্যালিপ্ট্রা দেখে। এ মসজিদ তৈরিতে প্রচুর মার্বেল পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। অত্যন্ত নয়নাভিরাম এ মসজিদে ৩২টি মিনার ও ৫টি গম্বুজ রয়েছে।

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে যেতে পারেন। ট্রেনের ভাড়াও খুবই অল্প। এছাড়াও গাবতলী, কলেজগেট, মহাখালি থেকে সৈয়দপুর সরাসরি অনেকগুলো বাস সার্ভিস চালু আছে। এছাড়াও বিমানযোগে সরাসরি সৈয়দপুরে চলে যেতে পারেন। সৈয়দপুরে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ ও বেঙ্গল এয়ারওয়েজ এর বেসরকারি বিমান সপ্তাহে দু’দিন চালু আছে। সময় লাগবে ৩০/৪০ মিনিট।

কোথায় থাকবেন

সৈয়দপুরে থাকার জন্যে যেসব আবাসিক হোতেল আছে তাদের মধ্যে একটি হলো – দিয়াজ হোটেল এন্ড রিসোর্টস, উত্তরা ইপিজেড, সৈয়দপুর, নীলফামারি-৫৩০০, বাংলাদেশ। টেলিফোন: +88 0551 62552, +88 0551 62553 ; মোবাইল: +88 01978 302080, 01778 302080

এ ছাড়াও নীলফামারীতে থাকার জন্যে বেশ কিছু আবাসিক হোটেল আছে। আপনার পছন্দমতো যে কোন একটিতে উঠুন। এ্যাপোল, বনফুল(সৈয়দপুর রোড) অবকাশ (এবাদত প্লাজা), কিংবা নাভানা আবাসিক হোটেলে উঠতে পারেন।

Leave a Comment
Share