শ্রীমঙ্গলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম আকর্ষণ বিলাসছড়া লেক (Bilash Chora Lake) যা পাহাড় ডোবা লেক নামেও পরিচিত। পাহাড় ও সবুজে ঘেরা এই লেকের অবস্থান বিলাসছড়া চা বাগানের পাদদেশে। পর্যটকদের পদচারণা এখানে তুলনামূলক কম হওয়ায় জায়গাটি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এক শান্তিপূর্ণ ও নিরিবিলি গন্তব্য। পাহাড় ডোবা লেক শ্রীমঙ্গলের বিলাসছড়া চা বাগানের ১০ নম্বর সেকশনে অবস্থিত। এটি পাহাড়ের ঢাল বেয়ে জমে থাকা পানি থেকে তৈরি একটি মনোরম জলাশয়।
লেকটির বিশেষত্ব হলো এর চারপাশে সবুজ বনানী এবং পাহাড়ি সৌন্দর্য। পাহাড়ের ঢাল গড়িয়ে নিচে জমা বিশাল জলরাশি এখানকার পরিবেশকে দিয়েছে অনন্য এক প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য। লেকের পরিবেশ এতটাই মনোরম যে পাখির ডাক, সবুজ গাছপালা, এবং পাহাড়ি হাওয়ার মৃদু পরশ ভ্রমণকারীদের মনে প্রশান্তি এনে দেয়। চারপাশের প্রাকৃতিক নিস্তব্ধতা এবং মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এই লেককে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
বিলাসছড়া লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এটি একটি অসাধারণ স্থান। পানির ওপরে ঝলমলে সূর্যের আলো আর চারপাশের পাহাড়ি ছায়া মিলে তৈরি হয় এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ। লেকের চারপাশে হাঁটতে হাঁটতে প্রকৃতির এই রূপের ছবি তোলা যেতে পারে। লেকের পাশ দিয়ে নতুন নির্মিত পাহাড়ি রাস্তা ধরে হাঁটলে একদিকে পাহাড়ের সবুজাভ রূপ অন্যদিকে জলাশয়ের মনোরম দৃশ্য মনকে প্রশান্তি দেবে। বিলাসছড়া চা বাগান ঘুরে দেখার অভিজ্ঞতাও অসাধারণ। সবুজ চা গাছের সারি, পাহাড়ি পথ, এবং চা শ্রমিকদের জীবনধারা পর্যবেক্ষণ আপনাকে নিয়ে যাবে প্রকৃতির আরও কাছাকাছি। ভোরবেলা কিংবা বিকেলে লেকের আশেপাশে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি দেখার সুযোগও রয়েছে, যা প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে খুব সহজেই বিলাসছড়া লেক যাওয়া যায়। শ্রীমঙ্গল শহর থেকে কালীঘাট রোড ধরে এগিয়ে দলই চা বাগানের রাস্তা দিয়ে বিলাসছড়া চা বাগানে প্রবেশ করতে হবে। বিলাসছড়া চা বাগানের অফিস এবং লিপ হাউস পেরিয়ে সামান্য সামনে এগোলেই দেখা মিলবে এই সুন্দর লেকের।
লেক পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য রিকশা বা সিএনজি রিজার্ভ করা সবচেয়ে সহজ এবং সুবিধাজনক মাধ্যম। এছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি বা বাইক নিয়ে সরাসরি লেক পর্যন্ত যাওয়া যায়। রাস্তাটি চা বাগানের ভেতর দিয়ে যাওয়ায় যাত্রাপথও বেশ মনোরম।
বিলাসছড়া লেক প্রকৃতি এবং নির্জনতা পছন্দ করা ভ্রমণকারীদের জন্য আদর্শ গন্তব্য। সবুজে মোড়ানো পাহাড়ি পরিবেশ এবং লেকের শান্ত সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। অনুমতি নিয়ে গেলে এ জায়গাটি আপনার ভ্রমণের এক অনন্য অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।
Leave a Comment