রাজশাহী

বাঘা মসজিদ

রাজশাহী থেকে বাঘার দূরত্ব প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার। বাঘার সবজয়গাতেই আছে আমের বাগান। আম বাগান দেখতে চলে যেতে পারেন ঐতিহাসিক বাঘা মসজিদ। প্রাচীন এ মসজিদ ইট দিয়ে তৈরি। মূল মসজিদের চারপাশে চারটি ও মাঝখানে দুই সারিতে পাঁচটি করে মোট দশটি গম্বুজ আছে। মসজিদের পূর্বপাশে পাঁচটি দরজা আছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের চারটি দরজাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রায় ২৩.১৬ মি দৈর্ঘ্য এবং ১২.৮০ মিটার প্রস্থের এই মসজিদ ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পে ছাদ ধ্বংস হয়ে যায়। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ পরে গম্বুজসহ ছাদটি পুনঃনির্মাণ করেন। মসজিদের ভেতরে ও বাইরে রয়েছে প্রচুর পোড়া মাটিরফলক। মসজিদের ভেতরে উত্তর-পশ্চিম কোণে একটু উঁচুতে নির্মিত একটি বিশেষ নামাজ কক্ষ আছে। এটি নিয়ে মতবিরোধ আছে। অনেকে মনে করেন এটি মহিলাদের নামাজের জায়গা ছিল। আবার অনেকের মতে কক্ষটি শুধু সুলতানের প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত গভর্নরের জন্যই সংরক্ষিত ছিল। বাঘা মসজিদের পূর্ব পাশে আছে বিশাল আকৃতির একটি দীঘি।

মসজিদের পাশেই আছে একটি কবরস্থান। বেশ কয়েকজন বুজুর্গ ব্যক্তি শায়িত আছেন এখানে। জনশ্রুতি আছে হযরত শাহ দৌলা দানেশ মন্দ (র.) পাঁচজন সঙ্গীসহ ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে বাগদাদ থেকে বাঘায় আসেন খ্রিস্টীয় ১৫০৫ সালে। সুলতান নসরত শাহও তার ভক্ত ছিলেন বলে যানা যায়। শাহ দৌলা এ অঞ্চলে বাঘের পিঠে চড়ে বেড়াতেন বলে জায়গাটির নাম বাঘা, এ কথা প্রচলিত আছে লোকমুখে।

বাঘা মসজিদ যাওয়ার পাথে বানেশ্বর আম হাট দেখে যেতে পারেন। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে বানেশ্বরে।

বাঘা মসজিদ যাওয়ার উপায়

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে রাজশাহী যাওয়া যায়। ঢাকার কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে দেশ ট্রাভেলস ও গ্রীন লাইন পরিবহনের এসি বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা। এছাড়া ঢাকার গাবতলী ও কল্যাণপুর থেকে শ্যমলি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ন্যাশনাল ট্রাভেলস, বাবলু এন্টারপ্রাইজ প্রভৃতি পরিবহন প্রতিষ্ঠানের বাস যায় রাজশাহী। ভাড়া ৪শ’ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা। ঢাকার কমলাপুর থেকে রোববার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন সিল্কসিটি এক্সপ্রেস এবং মঙ্গলবার ছাড়া প্রতিদিন রাত ১১টা ১০ মিনিটে ছেড়ে যায় আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা এক্সপ্রেস। ভাড়া শোভন চেয়ার সাড়ে ৩শ’ টাকা, স্নিগ্ধা ৬০৪ টাকা, এসি সিট ৭২৫ টাকা, এসি বার্থ ১০৮১ টাকা।

ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ (সর্বনিম্ন ভাড়া ৩ হাজার ৩শ’ টাকা), ইউনাইটেড এয়ারের (সর্বনিম্ন ভাড়া ৪ হাজার ২৫০ টাকা) বিমান চলাচল করে রাজশাহীতে।

রাজশাহী থেকে বাঘা যাওয়ার সহজ উপায় হল বাস। রাজশাহী শিরইল বাসস্ট্যান্ড থেকে বাঘার বাস ছাড়ে। ভাড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।

রাজশাহী কোথায় থাকবেন

রাজশাহী শহরে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। রাজশাহী চিড়িয়াখানার পাশে আছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল (০৭২১-৭৭৫২৩৭)। ঢাকার পর্যটন করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় (০২-৮৮৩৩২২৯, ৮৮৩৪৬০০) থেকেও এ হোটেলের বুকিং দেওয়া যায়। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেলের সিঙেল এসি রুম ১ হাজার ৯শ’ টাকা, এসি ডাবল রুম ২ হাজার ৬শ’ টাকা, সুইট ৪ হাজার ৬শ’ টাকা।

রাজশাহী শহরের অন্যান্য হোটেলগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –

  • গণকপাড়ায় হোটেল নাইস ইন্টারন্যাশনাল (০৭২১-৭৭৬১৮৮)
  • শিরোইলে হোটেল হকস্‌ ইন্‌ (০৭২১-৮১০৪২০)
  • সাহেব বাজারে হোটেল মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল (০৭২১-৭৭১১০০)
  • বিন্দুর মোড়ে হোটেল ডালাস ইন্টারন্যাশনাল (০৭২১-৮১১৪৭০)
  • মালোপাড়ায় হোটেল শুকরান (০৭২১-৭৭১৮১৭) ইত্যাদি। এসব হোটেলে ৫শ’ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকায় কক্ষ আছে।
Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ baghaMasjidmosquerajshahi