৫,৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত ইয়াকসাম (Yuksom) সিকিম এর প্রথম রাজা চোগিয়াল নামগিয়ালের রাজধানী ছিলো যা গ্যাংটক থেকে ১২০ কিমি দূরে ওয়েস্ট সিকিমে অবস্থিত হলেও পেলিং থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৪০ কিমি। কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস থেকে ১৬কিমি এগুলে কারুকাজময় একটি সিকিমি তোরণ পেরিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় ইয়াকসাম। ছবির মত একটি জনপদ ইয়াকসাম যার চারিদিকে ছড়িয়ে বৌদ্ধ ধর্মের নানান নিদর্শন, রঙ বেরঙের নিশান, মনাস্ট্রি যার চারদিকে পাহাড় দিয়ে ঘেরা, অসংখ্য ছোটো ঝোরা।
ইয়াকসাম পশ্চিম সিকিমে এর শেষ মোটরেবল জনপদ। এখান থেকে ট্রেকিং করে যেতে হয় কাঞ্চনজঙ্ঘার পাদদেশে পৌঁছতে চাইলে। সারা পৃথিবীর ট্রেকারদের স্বর্গরাজ্যও এই ইয়াকসাম। অনেকগুলি ট্রেক রুটের শুরু এখান থেকে। জোংরি (Dzongri) গোচালা ট্রেক ও কাঞ্চনজঙ্ঘা ন্যাশনাল পার্কের ট্রেক শুরু হয় এখান থেকেই।
১৬৪২ খ্রীস্টাব্দে এই রাজধানী স্থাপন করেন সিকিমের প্রথম রাজা। এই অভিষেক স্থলটি রেলিং দিয়ে ঘেরা। এখানে একখন্ড পাথরে লামার পায়ের ছাপ অবশ্যই দ্রষ্টব্যের। এখানে চোর্তেন (প্রার্থনা কক্ষ) ও পার্ক আছে। কাছেই আছে কাথোগ লেক (Kathog Lake) যা বেশ নামকরা। লেকের উল্টো দিকে আছে কার্থোক গুম্ফা। কাঞ্চনজঙ্ঘা জাতীয় উদ্যান, জোংরি গোচেলা ট্রেক শুরু হয় এই ইয়াকসাম থেকে। ঐতিহাসিক দিক থেকে সিকিমের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ইয়াকসাম। পাথরের তৈরী রাজার সিংহাসনের ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখা যায়। সিকিমের প্রথম ও সবচেয়ে পুরোনো মনাস্ট্রি ইয়াকসামে, নাম দুবদি। এখানে বৌদ্ধ সংস্কৃতির ছাপ।
পেলিং থেকে সাইটসিইং এর সময় ইয়াকসাম ঘুরে আসা যায়। পেলিং এর শেষ দর্শনীয় স্থান কাঞ্চনজঙ্ঘা ফলস এর পর ইয়াকসামের রাস্তা শুরু। রাস্তার সৌন্দর্য্য অতুলনীয়। দুপাশে পাইনের জঙ্গলে ঘেরা, রংবেরঙের ফুলের বাহার।
Leave a Comment