ওখরে

পশ্চিম সিকিম (West Sikkim) এর ছোট্ট একটা গ্রাম ওখরে। ওখরে (Okhrey) কে ভার্সে এর গেটওয়েও বলা হয়ে থাকে। সিকিম রাজ্যটার প্রতিটা বাঁকেই প্রকৃতি বেশ সুন্দর সাজুগুজু করে থাকে। গুটিকতক ছড়ানো ছিটনো কাঠের বাড়ি নিয়ে তৈরি এই পুঁচকি গ্রামটিও এক অনন্য টুরিস্ট স্পট, যদিও এখন বেশ কিছু কংক্রিট এর বাসস্থান হয়ে উঠেছে। নিজের মত করে দিব্যি সতেজ সুন্দর এই ওখড়ে গ্রামটি। ওখরে এর থাকার আস্তানাগুলোয় অকারণ বাহুল্য বা বিলাসিতার চিহ্নমাত্র নেই। তবে রয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাপনের পরিচ্ছন্ন ব্যবস্থাপনা। আর যারা একটু ভোজন রসিক তাঁরা খাঁটি সিকিমিজ খানার লোভেই শুধুমাত্র চলে যেতে পারেন।

পশ্চিম সিকিমের পাইন পাহাড়ের ঘেরাটোপে এক অসম্ভব সুন্দর গ্রাম ওখরে যা আদতে ছোট্ট একটা গঞ্জ। আদিগন্ত সবুজ বিছানো নিরিবিলি গ্রামে ঘুম ভাঙায় হিমালয়ের অচিন পাখিরা। দু-তিন দিনের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে আসুন এই মেঘ পাহাড়ের দেশে। সঙ্গে থাকবে হিলে ও ভার্সে। ওখড়ের ঠিক উল্টো দিকের পাহাড়টাই দার্জিলিং। নির্জন ওখড়ের নিঝুম রাতকে বড় বেশি মায়াবি করে দেয় দূর পাহাড়ের শৈলশহর। দার্জিলিংয়ের এক ঝাঁক ঝিকমিকে জোনাকি আলোর সমারোহ এসে রাতের তারার সঙ্গে মিশে যায়। অনেকেই ভালোবেসে ওখড়ে কে Land of Rhododendrons বলে থাকেন।

লাল গুরাসের দেশ এই অঞ্চল। মার্চ-মে বছরের এই সময় টুকু রডোড্রেনডনের ফুল ব্লুম সিজন। এই সময় টুরিস্টদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে ভার্সে রডোডেনড্রন স্যানচুয়ারী। ওখরে থেকে হিলের দূরত্ব ১৩ কিমি। গাড়ী হিলে অবধিই যাবে তারপর হাঁটা পথে গভীর ঘন অন্ধকার জঙ্গলের পথে ৪কিমি ট্রেক করে পৌঁছতে হবে ভার্সে।

যেদিন ওখরে পৌছাবেন সেদিন রাতে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন সকাল সকাল বেরিয়ে ট্রেক করে পৌঁছে যেতে পারবেন ভার্সে।

ওখরে কিভাবে যাবেন

কলকাতা থেকে যেতে চাইলে শিয়ালদহ বা হাওড়া থেকে ট্রেনে উঠলে নামতে হবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। যদি কেউ বিমানে যেতে চান, তিনি নামবেন বাগডোগরা বিমান বন্দরে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে ঘন্টা ছয়েকের পথ অতিক্রম করে মেলিবাজার, জোর্থাং হয়ে পৌঁছে যাবেন পশ্চিম সিকিমের ওখরে। পুরো গাড়ির ভাড়া ৪,০০০ – ৪,৫০০ রুপী।

শিলিগুড়ি থেকে ওখরের দূরত্ব : ১৩০ কি.মি.।
শিলিগুড়ি থেকে জোরথাং এর দূরত্ব : ৮৪ কি.মি.।
শিলিগুড়ি থেকে ওখরের পুরো গাড়ি ভাড়া: ৪৩০০/- টাকা।

কোথায় থাকবেন

ওখরেতে থাকার জন্যে আপনি কিছু হোম স্টের সন্ধান পাবেন, আগে থেকে বুক করে গেলে ভালো। থাকা খাওয়া নিয়ে জনপ্রতি ৯০০-১,০০০ রুপী। অনেক হোম স্টে এর ভিড়ে আছে সালাকা হোম স্টে, ম্যাগনোলিয়া ভিলেজে হোম স্টে অন্যতম। প্রতিদিন দুপুরের খাবার টা সেরে পায়ে হেঁটে বেরিয়ে পড়ুন গ্রাম টা ঘুরতে। সাথে বাড়তি পাওনা হিসেবে পাবেন অপরুপ কাঞ্চনজঙ্ঘা এবং বিভিন্ন ধরণের পাখি। হাতে শুধু থাকতে হবে একটা সুন্দর ক্যামেরা।

এখানের সমস্ত হোম স্টে/ লজের পক্ষ থেকে ট্রেকিং এবং তাঁবুর ব‍্যাবস্থা করা হয়ে থাকে।

Leave a Comment
Share
ট্যাগঃ offbeatokhreySikkimWest Sikkim