মিরিক (Mirik), দার্জিলিং জেলার পাহাড়ে অবস্থিত একটি অপূর্ব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য শোভিত স্থান। মিরিক শব্দটি এসেছে লেপচা শব্দ ‘মির-ইয়ক’ থেকে। এর অর্থ ‘আগুনে পুড়ে যাওয়া স্থান’। মিরিক শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২৬.৯° উত্তর ৮৮.১৭° পূর্ব। সমূদ্র সমতল থেকে মিরিকের গড় উচ্চতা ১৪৯৫ মিটার (৪৯০৫ ফুট)। এখানকার উচ্চতম স্থান বোকার গোম্ফার উচ্চতা প্রায় ১৭৬৮ মিটার (৫৮০১ ফুট)। নিম্নতম স্থান মিরিক লেক ১৪৯৪ মিটার (৪৯০২ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত।
মনোরম আবহাওয়া, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুগম হওয়ার কারণে মিরিক একটি পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এখানকার মূল আকর্ষণ সুমেন্দু হ্রদ। হ্রদের একদিকে বাগান, অন্য দিকে পাইন গাছের সারি। দুটি পারকে যুক্ত করেছে রামধনু সেতু। একটি সাড়ে ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ হ্রদটিকে ঘিরে রেখেছে। এখানে হাঁটতে হাঁটতে কাঞ্চনজঙ্ঘার সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। বোটে করে হ্রদে জলবিহারও করা যায়। ঘোড়ায় চড়েও ঘুরে বেড়ানো যায়।
শিলিগুড়ি থেকে ৫২ কিমি বা দার্জিলিং থেকে ৪৯ কিমি পথ পাড়ি দিয়ে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় ৪৯০৫ ফুট উচ্চতার মিরিকে। প্রতিবেশী থুরবো টি এস্টেট থেকে ৩৩৫ একর জমি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৭৪-এ মিরিককে একটি পর্যটকস্থল হিসাবে গড়ে তোলা শুরু করে। ১৯৭৯-তে মিরিক পুরোদস্তুর পর্যটককেন্দ্র হয়ে ওঠে।
মিরিক এর মূল আকর্ষণ সুমেন্দু হ্রদ। কী শীত, কী গ্রীষ্ম, রোদে গা দিয়ে হ্রদের ধারে সারাটা দিন কাটিয়ে দেওয়া যায়। এখানকার উচ্চতম স্থান বোকার মোনাসটেরি (৫৮০১ ফুট)। হ্রদের পশ্চিম পাড়ে আছে সিংহ দেবী মন্দির। একটা বেলা কাটিয়ে দেওয়া যায় ৩০ কিমি দূরে বালাসন নদীর ধারে দুধিয়ায়।
দার্জিলিং থেকে মিরিক যাওয়ার আরও এক আকর্ষণ নেপালের পশুপতি মার্কেট দেখা। দার্জিলিং-মিরিক পথটি কিছুটা নেপাল সীমান্ত ছুঁয়ে গেছে। সেই সুযোগে প্রায় সব পর্যটক নেপালের ভিতর ঢুকে ৩-৪ কিমি গিয়ে দেখে আসেন সস্তার বাজার পশুপতি মার্কেট।
জলবায়ুঃ এখানকার জলবায়ু সারাবছরই মনোরম থাকে। গ্রীষ্মে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০° সেলসিয়াস এবং শীতে সর্বোনিম্ন ১° সেলসিয়াস।
মিরিকে থাকার মত বেশ কিছু ভালো হোটেল রয়েছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো –
মিরিকের সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর বাগডোগরার দূরত্ব ৫২ কিমি(৩০ মাইল) এবং শিলিগুড়ি সন্নিহিত নিউ জলপাইগুড়ি- সবচেয়ে কাছের রেলওয়ে স্টেশন।
শিলিগুড়ি থেকে মিরিক পর্যন্ত শেয়ার টাক্সি চালু আছে যার ভাড়া যাত্রীপ্রতি ৬০ টাকা। ব্যক্তিগতভাবে টাক্সি ভাড়া করা যায় ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে। দার্জিলিং মোটর স্টান্ড থেকে মিরিকের কৃষ্ণনগর ( মিরিক লেকের ঠিক পাশেই ) পর্যন্ত শেয়ার টাক্সি চালু আছে ( ভাড়া একই )। মিরিকের মধ্যেও ভ্রমণ করার জন্য শেয়ার টাক্সি চালু আছে। মিরিক লেক থেকে মিরিক বাজার পর্যন্ত যার ভাড়া যাত্রী প্রতি ৫ টাকা।
বাঙালি খাবারের জনে কলকাতা রেস্টুরেন্টে খেতে পারেন। মিরিকে এটাই একমাত্র বাঙ্গালি হোটেল।
Leave a Comment