কালাভান্তিন দূর্গ

কালাভান্তিন দূর্গ (Kalavantin Durg) ভারতের মুম্বাই থেকে ৬০ কিমি দূরে মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার মাথেরান ও পানভেল এর মধ্যস্থলে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর অন্যতম দূর্গম দূর্গ হিসেবেও বেশ পরিচিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭০১ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত এই দূর্গের সিঁড়ি একে বিশ্বের বিপদজনক গুলোর একটি বানিয়েছে। এর অমসৃণ সিঁড়িগুলো এই পাহাড়ের পাথর কেটে বানানো। এই দূর্গের চূড়া থেকে মাথেরান পাহাড়, চান্দেরী, পেব, এরশান, কর্ণলা দূর্গ সহ পুরো মুম্বাই শহরটি দেখা যায়।

এই দূর্গের ইতিহাস সঠিকভাবে জানা না গেলেও শোনা যায় খ্রীষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দে রাণী কালাভান্তিন এর নামানুসারে এই দূর্গটি নির্মিত হয়েছিল। ১৬৫৭ খ্রিষ্টাব্দে ছত্রপতি শিবাজী এই দূর্গ জয় করেছিলেন।

কখন যাবেন

বছরের যেকোনো সময় এই ট্রেক করা যায়। তবে বর্ষাকালে এই ট্রেক খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ও বিপদজনক। বর্ষাকালে ভারী বৃষ্টি ও প্রবল জোরে হাওয়ার ফলে রেলিং বিহীন সিঁড়ি দিয়ে ওপরে ওঠা ও নীচে নামা দুইই হয়ে ওঠে আরও ভয়ঙ্কর। শীতকালে এই ট্রেক সবথেকে আরামদায়ক।

যাওয়ার উপায়

কালাভান্তিন দূর্গের নিকটতম রেলস্টেশন পানভেল। কলকাতা থেকে কালাভান্তিন আসার সবথেকে সহজ দুটি পথ –

১) সরাসরি – হাওড়ার সাঁতরাগাছি রেলস্টেশন থেকে সন্ধ্যা ৬:২৫ এর হামসাফার এক্সপ্রেসে করে সরাসরি পানভেল পৌঁছানো যায়। সময় লাগে মোট ২৯ ঘন্টা ১০ মিনিট। তবে এই ট্রেনের সব কামরাই 3A। স্লিপার ক্লাসের ভাড়া ৭০০-৭৭৫ রুপী।

২) ব্রেক জার্নি – এক্ষেত্রে অপশন অনেক বেশি হলেও সময় ও সফর দুটিই বেড়ে যায়। হাওড়া রেলস্টেশন থেকে মুম্বাই গামী ট্রেনে উঠে পৌঁছতে হবে CSMT (ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ টার্মিনাল)। এরপর CSMT থেকে পানভেল যাবার লোকাল ট্রেনে উঠে নামতে হবে পানভেল রেলস্টেশন। ভাড়া ২০ রুপী। পানভেল রেলস্টেশন থেকে মাত্র ১০ মিনিটের হাঁটা পথে চলে আসতে হবে পানভেল বাসস্ট্যান্ড। রেলস্টেশনের বাইরে থেকে অটোরিকশা র মাধ্যমেও পৌছে যাওয়া যায় বাসস্ট্যান্ড। সকাল ৫:১৫ থেকে রাত ৭:৩০ টা পর্যন্ত প্রতি ৪৫ থেকে ১ ঘন্টা অন্তর ঠাকুরবাড়ি (কালাভান্তিন ও প্রবলগড় দূর্গের বেস ভিলেজ) যাবার বাস ছাড়ে এই বাসস্ট্যান্ড থেকে। ঠাকুরবাড়ি পৌঁছতে মোট সময় লাগে ৪৫ থেকে ৫৫ মিনিট। ভাড়া ২০ রুপী।

পানভেল থেকে অটোরিকশা করেও পৌঁছানো যায় ঠাকুরবাড়ি। তবে এক্ষেত্রে সময় ও খরচ অনেকটাই বেশি পড়ে।

বাই রোড গাড়ি বা বাইকে করেও আসা যায় ঠাকুরবাড়ি। মুম্বাই-ভাসী-পানভেল থেকে বাঁদিকে সেডুং ফাটা হয়ে পৌঁছানো যায় ঠাকুরবাড়ি। গাড়ি করে এলে পার্কিং এর ব্যবস্থাও রয়েছে ঠাকুরবাড়ি গ্ৰামের কাছে।

ঠাকুরবাড়ি গ্ৰাম থেকে ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট – ২ ঘন্টা ট্রেক করে প্রবলমাচী গ্ৰামে(কালাভান্তিন ও প্রবলগড় দূর্গের নিকটতম গ্ৰাম) ঢোকার মুখে একটি কাউন্টারে নাম, ঠিকানা নথিভুক্ত করে এন্ট্রি ফি দিয়ে শুরু করতে হবে কালাভান্তিন দূর্গ ট্রেক। এন্ট্রি ফি ৫০ রুপী। প্রবলমাচী গ্ৰাম থেকে দুটি পথ চলে গেছে দুদিকে। বাঁদিকে আছে কালাভান্তিন দূর্গ এবং প্রবলমাচী থেকে কালাভান্তিন এই পুরো পথটাই বিভিন্ন জায়গায় তির চিহ্নের মাধ্যমে পথনির্দেশ করা আছে।

কোথায় থাকবেন

প্রবলমাচী গ্ৰামে টেন্ট ভাড়া করে বা রুম বুক করে থাকার ব্যবস্থা আছে। টেন্ট ভাড়া ৪০০-৫০০ রুপী এবং রুম ভাড়া ১৫০০-২০০০ রুপী।

নিকটবর্তী আকর্ষন

  • প্রবলগড় দূর্গ ট্রেক
  • প্রবলমাচী গ্ৰামে টেন্টে রাত্রিবাস
  • চান্দেরী দূর্গ ট্রেক
  • কর্ণালা দূর্গ ট্রেক
  • ইরসালগড় দূর্গ ট্রেক
  • মানিকগড়
Leave a Comment
Share