ইচ্ছে গাঁও

পাহাড়চূড়োর কোলে মেঘদের আদরের গাঁ – ইচ্ছে গাঁও। এক পাহাড় থেকে পাহাড়ান্তরের পাকদন্ডী বেয়ে বেয়ে যখন আপনি পা রাখবেন ইচ্ছেগাঁওতে (Icchegaon) মনে হবে এ এক স্বর্গরাজ্য অথবা স্বর্গের মায়া জড়ানো ছোট্ট একটুকরো স্বপ্নভূমি। ইচ্ছেগাঁও – লেপচা ভাষায় যার অর্থ সবচেয়ে উঁচুতে যে গ্রাম। এ গাঁও এর উপর দিয়ে মাঝে মাঝেই নেমে আসে মেঘের হালকা পেঁজা পেঁজা তুলো। ধীরে ধীরে আলো কমে আসলে ছোট্ট কোন টিলার মাথায় দাঁড়িয়ে যাবেন, যেখান থেকে সূর্যাস্তের দৃশ্য বড় মনোরম, বড় আদুরে মোলায়েম। ইচ্ছেগাঁও এর চাষাবাদ সবকিছু অর্গানিক পদ্ধতিতে। সেখানে না আছে কোনও রাসায়নিক সারের প্রয়োগ, না কীটনাশকের ব্যবহার। পাহাড়ের গায়ে ধাপ কেটে কেটে সে এক বিশাল কর্মকান্ড। এই পদ্ধতিতে ফলন ঘটিয়ে এই গ্রামগুলি এখন অনেকটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ।

ছোট্ট সাজানো গোছানো গ্রামটিতে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়ানোটাই এক দারুণ অভিজ্ঞতা। রংবেরঙের পাহাড়ী ফুলের সজ্জায় প্রতিটি বাড়ী সুশোভিত। আর রাত নামলে ঘন নিকষ কালোর অন্ধকার মেখে ব্যলকনিতে বসে উপভোগ করুন আদিম নির্জনতা। গ্রাম ঘুমিয়ে পড়ে, শুধু জেগে থাকে বহুদূরের দার্জিলিং যাওয়া আসার পথের রাতজাগা তারারা – চলন্ত গাড়ীগুলোর হেডলাইটের আলো।

ঘর সংলগ্ন ব্যলকনি থেকেও দৃশ্যমান কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সূর্যাস্তের গাঢ় সোনালি মনোহরণ রূপ বা সকালের শ্বেতশুভ্র রূপ যেন চোখের ক্ষুধা মিটানোর এক চেষ্টা। আপনার মন চাইলে বেড়িয়ে পড়তে পারেন ছোট ছোট ট্রেক-এ। সে হতে পারে পূব পানে ‘সিলারি গাঁও’ অথবা আরও উঁচুতে পাইনের বন বা আর কোনও অজানা অচিন দেশ।

কোথায় থাকবেন

সিকিম আর পশ্চিমবঙ্গের সীমানা ঘেঁষে যে কোনো পাহাড়ের কোলেই এখন ছোট ছোট জনবসতি, যেখানে হোমস্টে এর ব্যবস্থাপনা আমূল পরিবর্তন এনেছে পর্যটনের ধ্যান ধারণায়। হিমালয়ের হিমেল পরশ আর সবুজ বনানীর ঘেরাটোপে সব জায়গাই নিজস্ব সম্পদে পরিপূর্ণ। আরও উৎসাহব্যঞ্জক হল, এখানকার কিছু ভূমিপুত্র নিজেদের উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন চেইন ট্যুরিজম বিজনেস। আপনি যেকোনো একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আপনার যাত্রার দিনক্ষণ, সময়কাল, ট্রেক না গাড়ীতে ভ্রমণ, পাহাড়ে চড়া না ঘন জঙ্গল পেরনো – কোনটা আপনার ইচ্ছে বলে দিলেই এরাই সর্বত্র থাকাখাওয়ার বন্দোবস্ত করে দেবেন। এমনকি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে পিক আপ করা থেকে পুরো ভ্রমণ শেষে আবার এন জে পি তে ট্রেনে তুলে দেওয়া – পুরোটাই থাকছে একটা প্যাকেজ ট্যুর এ। হয়তো কলকাতা বা অন্য শহরে বসে সেখানকার স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্ট কে দিয়েও আপনি এ বন্দোবস্ত করতে পারেন। কিন্তু এখানকার স্থানীয় মানুষদের ব্যবস্থাপনায় আপনি যেমন পাবেন পাহাড়ী জনজাতির আদি অকৃত্রিম পরশমণির ছোঁয়া , তেমনি আপনার পকেটের ও হবে সাশ্রয়।

যোগাযোগ করতে পারেন

Khawas Family (খাওয়াস পরিবার) 08670242128 / 8906926652 এরা হোম স্টে এর ব্যবস্থা করে থাকে।

Mukhia Homestay (মুখিয়া হোম স্টে), যোগাযোগ – মনোজ মুখিয়া। ই-মেইলঃ mukhiahomestayechay@gmail.com ফোনঃ +91 89724 70220 / 96144 34292 / 99338 03759 / 98515 33525

Leave a Comment
Share